(কেন্দ্রের সমন্বিত পেনশন প্রকল্প চালু করার পরিপ্রেক্ষিতে এআইসিসিটিইউ’র বিবৃতি)
তৃতীয় দফার মোদী সরকার যে ইউপিএস (সমন্বিত পেনশন প্রকল্প) চালুতে অনুমোদন দিয়েছে তা সরকারি কর্মচারীদের ধোঁকা দেওয়া ও তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিরই একটা চাল। সরকার যদি মনে করে থাকে যে তারা ইউপিএস (সমন্বিত পেনশন প্রকল্প) চালু করে এনপিএস (নয়া পেনশন প্রকল্প) বিরোধী এবং ওপিএস (পুরনো পেনশন প্রকল্প) ফিরিয়ে আনার আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে পারবে, তবে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। ইউপিএস চালু করাটা এনপিএসের সাপেক্ষে গুণগত কোনো পরিবর্তনকে সূচিত করছে না। বিপরীতে, এটা পুরনো পেনশন প্রকল্পের প্রতি কর্মচারীদের অধিকারের, দশকের পর দশক সরকারকে পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ লাভের সুবিধা প্রকল্পের সম্পূর্ণ বঞ্চনা।
ওপিএস একটা সুনির্দিষ্ট সুবিধা প্রকল্প এবং এর অধীনে পেনশন লাভের জন্য কর্মচারীদের কোনো অর্থ প্রদান করতে হত না। আদালতগুলো পেনশনকে বকেয়া বেতন বলেই ব্যাখ্যা করেছে। ইউপিএসে অর্থ প্রদান করতে হয় এনপিএসের মতই এবং সেই পরিমাণটা হল কর্মচারীদের ডিএ-সহ বেতনের ১০ শতাংশ।
অবসরগ্রহণ কালে গ্র্যাচুইটির পরিমাণ যথেষ্ট মাত্রায় কমিয়ে দিয়েও কর্মচারীদের বড় ধরনের আঘাত দেওয়া হয়েছে। অবসরগ্রহণ কালে কর্মচারীরা গড়ে সাধারণত ন্যূনতম ২০ লক্ষ টাকা পেতেন, এখন সেটাকে কমিয়ে প্রতি ছ’মাস কাজের জন্য মাসিক বেতনের ১০ শতাংশ করা হয়েছে আর সেটা কয়েক দশক সরকারকে পরিষেবা প্রদানের বিনিময়ে যৎসামান্য অর্থ মাত্র। ওপিএসের মধ্যে যে জিপিএফের সুবিধা ছিল সেটাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইউপিএস হল বাজার নির্ভর প্রকল্প এবং বাজারের মতিগতির ওপর নির্ভরশীল। অতএব, ন্যূনতম পেনশন গ্যারান্টির যে প্রস্তাবই দেওয়া হোক না কেন, ইউপিএস চূড়ান্তরূপেই নিরাপত্তাহীন।
শেষমেষ, এনপিএসের মতো ইউপিএস’ও পেনশনকে প্রাপ্য সুবিধারূপে গণ্য করতে অস্বীকার করে এবং কর্মচারী তাঁর কর্মকালে যে অর্থ প্রদান করেন তারই আনুপাতিক করে তোলে। অধিকন্তু, ইউপিএস সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকটি রায় ও সংবিধানের প্রকট লঙ্ঘন। ইউপিএসের বিরোধিতা তাই করতে হবে এবং ওপিএস’কে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন তীব্রতর করে তুলতে হবে।
ওপিএস’কে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশের সরকারি কর্মচারীরা যে আন্দোলন গড়ে তুলছেন এআইসিসিটিইউ তার প্রতি সংহতি জানাচ্ছে।