খবরা-খবর
কালীঘাট থানায় প্রগতিশীল মহিলা সমিতি ও আইসার বিক্ষোভ ডেপুটেশন

হায়দ্রাবাদের নৃশংস ধর্ষণ-হত্যার পরপর কালিঘাটে দুই নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসে। মেয়েদের ওপর এই ক্রমবর্ধমান নৃশংসতার প্রতিবাদে, ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে হাজরা মোড়ে এবং কালিঘাট থানার সামনে আইপোয়া এবং আইসার পক্ষ থেকে মিছিল ও বিক্ষোভসভা সংগঠিত হয় ১ ডিসেম্বর বিকেলে। কালিঘাটের নির্দিষ্ট ঘটনাটির প্রশ্নে কালিঘাট থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। পুলিশের ওসিকে ডেপুটেশনের মধ্যে দিয়ে জানানো হয় যে অভিযুক্তদের ধরা হয়ে থাকে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ধারা না দেওয়ার ফলে অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যায় এবং নির্যাতিতা ন্যায় পায় না। যেখানে জাতীয় অপরাধ তথ্যপঞ্জী অনুযায়ী প্রতি ৩০ মিনিটে ভারতবর্ষে একটি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে সেখানে ন্যায় বিচার পাওয়া মেয়েদের জন্য জরুরী। পুলিশের ভূমিকা এক্ষেত্রে ক্রুশিয়াল।

ডেপুটেশন দিতে গিয়ে আমরা অবাক হয়ে দেখি যে কালীঘাট থানার অফিসার নির্যাতিতার চরিত্র নিয়েই গল্প তৈরি করে ফেলেছেন। অভিযোগে ধর্ষণের ধারা দেওয়া হয়েছে অথচ অফিসার বলছেন যে মেয়েটির সম্মতিতেই নাকি সব হয়েছে। বলে যে ডাক্তারি পরীক্ষায় নাকি পাওয়া গেছে যে মেয়ে দুটি “হ্যাবিচুয়াল”, অর্থাৎ তারা যৌন মিলনে অভ্যস্ত! পুলিশ অফিসারের এটুকু বোধও নেই যে যৌন সংসর্গে অভ্যস্ত হওয়া না হওয়া দিয়ে “সম্মতি” ঠিক হয়না। অফিসার তার বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করতে মেয়ে দুটির সামাজিক অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেন যা আরও মারাত্মক। তিনি ধরেই নিচ্ছেন যে প্রান্তিক ফুটপাথবাসী মেয়েগুলো নিজেদের স্বভাবদোষেই এরম ঘটনার শিকার হয়! অফিসারের কথাবার্তায় সুস্পষ্ট শ্রেণী বিদ্বেষ।

kali

 

আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করি। তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা হয় যে তিনি যেটা করছেন তা আইনবিরুদ্ধ। যে ডাক্তারবাবু পরীক্ষা করেছেন তিনিও ২০১৩-র ‘হেলথ ডাইরেক্টিভস’ বিষয়ে মূর্খ। তিনি জানেন না যে ওই ডাইরেক্টিভস অনুযায়ী ডাক্তারবাবু ওরকম মন্তব্য করার অধিকারী নন। পুলিশ অফিসারের বোধেও এটা নেই যে তিনি যে গল্পটা বলতে শুরু করেছেন তা সরাসরি “ভিক্টিম ব্লেমিং”। ভার্মা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাঁর এধরনের গল্প ছড়ানো বেআইনী। ডেপুটেশন থেকে এই পুলিশ অফিসারকে জানানো হয় যে তাঁর এবং বাকি পুলিশদের আগে লিঙ্গ সমতার প্রশ্নে সেন্সিটাইজেশন দরকার।

ডেপুটেশনের শেষে প্রতিনিধিরা বাইরের জমায়েতকে সম্বোধিত করে বক্তব্য রাখেন।

aipwa

 

খণ্ড-26
সংখ্যা-39