তেলেঙ্গানার স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কর্মচারিরা কর্পোরেশনকে সরাসরি সরকারি সংস্থার সাথে সংযুক্তিকরণ সহ ২৬ দফা দাবিতে গত শুক্রবার মধ্যরাত্রি থেকে ধর্মঘট শুরু করেছিলেন। এই সংযুক্তিকরণ হলে শ্রমিক কর্মচারিরা সরকারি কর্মচারির মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই আন্দোলনে শ্রমিক কর্মচারিদের সাথে সামিল ছিলেন ডিপো ম্যানেজার, সুপারভাইজারাও।
গোটা ভারতবর্ষের মানুষ বিস্ময়ের সাথে দেখলেন, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও ধর্মঘটী ইউনিয়নগুলির নেতৃত্বের সাথে কোনো আলোচনায় না বসে ঘোষণা করল “ধর্মঘট হল ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।” শনিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার নির্দেশ জারি করল। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীরা ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ায় তেলেঙ্গানা সরকার প্রায় ৪৮ হাজার শ্রমিক কর্মচারিকে বরখাস্ত করার কথা ঘোষণা করে।
ধর্মঘট করার “অপরাধে” তেলেঙ্গানা সরকার কর্তৃক রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ৪৮ হাজার শ্রমিককে বরখাস্তের খবর আসার সাথে সাথেই তেলেঙ্গানা সহ গোটা দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। অবিলম্বে সকল শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল করার দাবিতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন এআইসিসিটিইউ। অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলিও নেমে পড়েছে আন্দোলনে। পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকরাও এতে সামিল হয়েছেন।
এআইসিসিটিইউ-র রাজ্য সম্পাদক দিবাকর ভট্টাচার্য্য এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, অল ওয়েষ্ট বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট সংগ্রামী শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়ন সহ সকল ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তেলেঙ্গানা সরকারের এই শ্রমিক বিরোধী অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছি এবং অবিলম্বে সকল শ্রমিকদের উপর থেকে বরখাস্তের নোটিশ প্রত্যাহার করে ইউনিয়ন নেতৃত্বের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে শ্রমিকদের দাবিগুলির সুষ্ঠু মীমাংসার দাবি জানাচ্ছি।
এরাজ্যেও প্রতিটি ডিপোতে আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে শ্রমিকরা পোস্টার লাগাচ্ছেন এবং শ্রমিকেরা পোস্ট কার্ডে প্রতিবাদ ও দাবি লিখে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে পোস্ট করছেন। তিনি আরও বলেন যে, এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমবাংলার পরিবহন শ্রমিকরা একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। প্রয়োজনে তেলেঙ্গানা পরিবহন শ্রমিকদের সংহতিতে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।