২৮ নভেম্বর, ভগৎ সিং-এর জন্ম দিবসে, বন্ধ গোঁদলপাড়া জুট মিলের শ্রমিক সন্তানদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষণ কেন্দ্র পথ চলা শুরু করল। স্থানীয় একটা ক্লাব ঘরে ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে শুরু হলো এই শিক্ষণ কেন্দ্রের পঠন পাঠনের কাজ। প্রাথমিকভাবে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানোর বিষয়টা ভাবা হলেও, খবর পেয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছেলে মেয়েরাও বই খাতা নিয়ে হাজির হয়ে যায়। সদ্য অভাবের তাড়নায় আত্মঘাতী মিলের দুজন শ্রমিকের স্মরণে উপস্থিত সকলে নীরবতা পালন করে। এরপর ভগৎ সিং সম্পর্কে দু-চার কথা বলা পর উপস্থিত ছাত্র ছাত্রীরা ভগৎ সিং-এর প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণ করে। প্রথমদিন জীবন বিজ্ঞান, অঙ্ক ও ইংরাজি পড়ানো হয়। হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক প্রথম দিন হাজির হয়েছিলেন, তিনি যখন শুনলেন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের ইতিহাস বই নেই, তখন দ্রুতই এই বই পাঠাবেন বলে জানান। স্থানীয় পার্টি সদস্য তাপস ব্যানার্জি, আইসার ছাত্র সাথী রণজয়, সম্রাট ও সংগঠক সৌরভ শিক্ষণ কেন্দ্রের সূচনায় সক্রিয় ভূমিকা রাখে। বেশ কিছু অভিভাবকও শিক্ষণ কেন্দ্রে আসেন। মিলের শ্রমিক আবাসগুলোতে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি ইলেক্ট্রিক লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় কোম্পানি। এই বিষয়টি নিয়ে পুজোর পর চন্দননগর এসডিও-র কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং উপস্থিত ছেলে মেয়ে সকলেই স্বাক্ষর করে এবং অন্যদের থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্য স্মারকলিপির প্রতিলিপি নেয়। একদল অবহেলিত কিন্তু প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এক ঝাঁক কিশোর কিশোরী, এই উৎসবের আলো থেকে অনেকটা দূরে থাকবে তারা, এই নিয়ে তাদের কষ্টতো আছেই কিন্তু বুঝদার ছেলে মেয়েগুলোর বাবা মায়ের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। তাদের শিক্ষার অধিকার, তাদের এই শৈশব কৈশোরের আনন্দগুলো কেড়ে নেয় যারা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই জারী রাখা আর ছোট ছোট ছেলে মেয়েগুলোর পাশে দাঁড়াতে আইসা এবং সিপিআই(এমএল) অঙ্গীকারবদ্ধ।