বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ‘ফাক ইউ’ বলল, চড় মারল, একটা সরি পর্যন্ত বলল না, তার পরে ভিসি এসে ভালোভাবে বোঝালে তাঁর সঙ্গে পর্যন্ত চরম দুর্ব্যবহার করল, রীতিমতো চিৎকার করে চোখ পাকিয়ে আঙুল তুলে বলল ‘ইউ শ্যুড রিসিভ মি, হোয়াট আর ইউ ডুইং’! তার পর নাটক করে জামা ছিঁড়ে রাস্তায় শুয়ে (সত্যিই শুয়ে পড়েছিল) হাত-পা ছুড়ে রাজ্যপালকে ফোন করল ...
আমার সত্যিই লজ্জা লাগছে। এ রকম একটা লোক আমার দেশের মন্ত্রী ভেবে।
যাদবপুর খুব বাজে। পচা। উদ্ধত। পাকা। মানলাম।
কিন্তু যাদবপুরে আজও “লাঠির মুখে গানের সুর”ই বাজে। অতি বড় শত্রুও বলতে পারবে না, যাদবপুরের একটি ছেলে-মেয়েরও গায়ে হাত তোলার প্রবণতা কোনও দিন ছিল বা আজ আছে। যে দিন ভিছিঃ অভিজিৎ চক্রবর্তী আলো নিভিয়ে পুলিশ ডেকে ছাত্র-ছাত্রীদের পিটিয়েছিলেন, সে দিনও না।
কিন্তু একই সঙ্গে, হাতে বাঁশ আর মাথায় হেলমেটওয়ালা এক রাশ কাকু প্রজাতির প্রশিক্ষিত গুন্ডা নিয়ে কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অসভ্যতা করে, মেয়েদের গলায় কনুই ঠুসে ধরে... সে মন্ত্রীই হোক আর সান্ত্রী, তা হলে যাদবপুর “পাল্টা আঘাত ফিরিয়ে দিতে” জানে।
যাদবপুর আজ হয়তো সবটা ঠিক করছে না বা করল না। কেউ-ই একটা সময়ে সবটা মিলিয়ে ঠিক করতে পারে না। ভুল থাকে, খামতি থাকে, কমতি থাকে। কিন্তু ওরা অন্তত কিছু তো করছে! রুখে তো দাঁড়াচ্ছে! এই সময়ে ফ্যাসিজমকে রোখার যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি, সেটা তো পালন করছে!
নীচে যে ছেলেটার ছবি দেখছেন, ওর নাম পবন সিং। কমপ্যারেটিভ লিটরেচার, পিজি ওয়ান। গোবলয়ের একটি রাজ্য থেকে বাংলায় পড়তে আসা ছেলে। নিজের ক্যাম্পাসে বেধড়ক মার খেয়েছে কাকু-গুন্ডাদের কাছে। আর তার পরেও আঙুলটা এ ভাবেই উঁচিয়ে বলেছে, “ও লোগ সাচসে ডরতে হ্যায়, হামসে ডরতে হ্যায়। ইস লিয়ে হামে মারতে হ্যায়।” না, আমি অনেক চেষ্টা করেও যাদবপুরের প্রাক্তনী হিসেবে লজ্জিত হতে পারলাম না। সরি।
গতকাল তখন বিকেল ৫.৩০টা আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে যাই। ছোট ছোট ছেলে মেয়েগুলোর সঙ্গে নাকি বাবুল বড়াল বলে একটা লোক যে ঘটনাচক্রে বাবুল সুপ্রিয় হয়ে বিজেপির বান্দরের দলে নাম লিখিয়েছে তাঁর কিছু গন্ডগোল হয়েছে সেই খবর শুনে। গিয়ে দেখি কে পি বসু মেমোরিয়াল হল বাইরে অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী সেই সময়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওদের কাছ থেকেই আগের ঘটনাগুলো শুনলাম। প্রত্যেকের চোখে মুখে দৃঢ়তা, ওকে ক্ষমা চাইতে হবে। না ওদেরকে বোঝানোর মতো সাহস বা যোগ্যতা কোনোটাই আমার ছিল না।
যা শুনলাম, বাবুলকে ছাত্র-ছাত্রীরা বাধা দিতে গিয়েছিল ওর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা নিয়ে তাই ও নাকি ছাত্রদের সঙ্গে অসভ্যতা করেছে। প্রথমে একটু মনে হয়েছিল এবিভিপি-র ফ্রেশার্স ওয়েলকাম সেখানে ছাত্রছাত্রীরা বাধা না দিলেই পারতো। পরে শুনলাম ওখানে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে একটা সেমিনার ছিল সেখানেই নাকি বক্তব্য রাখতে আসছিলেন এই বিশ্ববিখ্যাত দাঙ্গাবাজ বাবুল এবং ফ্যাশান ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল থেকে পল হওয়া নেতারা। তারপর মনে হলো ছাত্রছাত্রীরা যা করেছে বেশ করেছে। তারপর দেখলাম কে পি বসুর হল থেকে ধাক্কা দিয়ে বাবুল বেরোনোর চেষ্টা করছেন সেখানেও প্রতিরোধ করছেন ছাত্ররা। এবার আসা যাক আসল কথায়। কেন বাবুল ওভাবে বেরোনোর চেষ্টা করলেন ? বাইরে ওবি ভ্যান তাঁদের পছন্দসই জায়গা, পছন্দের লোকজন তাঁর মতো করে খবর পরিবেশন করবেন। একজনও কিন্তু ওর গায়ে হাত দেয়নি। উল্টে শ্লোগান দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে ‘চুরি করেছে চৌকিদার’। ওদের দাবি বাবুল ক্ষমা চাইলেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এর কিছু পরে আমি বেরিয়ে আসি। তারপর থেকে শুরু হয় কুনাট্য। ৪নং গেটের বাইরে জড়ো হচ্ছে এবিভিপির লোকজন। তারপর প্ল্যান মাফিক ৩নং গেট দিয়ে রাজ্যপালের প্রবেশ। ৪নং গেটের নিরাপত্তা শিথিল হওয়া আর সেই সুযোগে বানর সেনারা বাঁশ, লাঠি হাতে ঢুকে ইউনিয়নের অফিস ভাঙচুর করে। যারা এমনি সোজাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারে না তারা তো এভাবেই ঢুকবে এটাই স্বাভাবিক।
আমার সঙ্গে উপাচার্যের বিরোধ থাকতে পারে, মতান্তর থাকতে পারে কিন্তু উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতে যে পুলিশ ডাকেননি তার জন্য উনাকে সাবাস। বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গেছে যে উপাচার্যকে কার্যত হুমকি দিচ্ছেন ওই বাবুল যিনি নিজেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলে পরিচয় দিচ্ছেন। একটা পরিচয় উনি দিলে খেলাটা আরো জমতো উনি আসানসোলের ইমাম রশিদীর ছেলে ১৭ বছরের সিবঘাতুল্লার খুনীও বটে। দাঙ্গাকারীও বটে।
সব শেষে রাজ্যপাল বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করে বের করে নিয়ে যান। এটা কি সরকারী অনুষ্ঠান ছিল যে রাজ্যপাল এসে উদ্ধার করলেন ?
সকালে ফেসবুকে বিভিন্ন ভিডিও দেখছিলাম আমার বাড়ির লোকজন বললো এরা তো বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়ে, তোমার আর বয়স বাড়লো না।
আমি বলেছি ওদের সঙ্গে থাকি বলেই তো আমার বয়স বাড়ে না। ওরাই তো আমার আদর্শ, ওরাই তো শিক্ষক। ওদের কাজ থেকেই তো শিখবো, ভুল করবে কখনো আবার ঠিক করবে এভাবেই ওরা এগোবে আমাদের রাস্তা দেখাবে। বেশ করেছে যাদবপুর।
অল ইণ্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে যথাক্রমে স্বর্ণেন্দু মিত্র, সম্পাদক ও নীলাশিস বসু, সভাপতি এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিকে যখন আইসার সম্মেলন চলছে তখন আরেকদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল আসছেন যাদবপুরে ঘৃণা বিদ্বেষের রাজনীতি ফেরি করতে। ঠিক সেই সময় ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদে সামিল হলে তারা ছাত্রছাত্রীদের ওপর আক্রমণ করে এবং অকথ্য গালিগালাজ করে। বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। এই বর্বরোচিত হামলাকে ধিক্কার জানাচ্ছে অল ইণ্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। আমরা রাজ্যের সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে এই দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
“ছাত্ররা প্রাণচঞ্চল। বয়স কম। মাত্র আঠারো-ঊনিশ-কুড়ি। গালাগাল করে। দাবি তোলে। চেঁচায়। একটা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখে তার ছাত্ররা। কিন্ত এই বাবুল সুপ্রিয় কে? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ঊনপঞ্চাশ বছর বয়স। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে বলছেন – ‘আপনি কেন আসেননি? আমি একজন মন্ত্রী এসেছি। আপনি কেন আসেননি।’ ভিসিকে বলছেন জল আনতে। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ছেন ‘এনআরসি-র ফুল ফর্ম কী’। এই এতগুলো কথা বলার পরও যে, আপনি প্রেসের গাড়ির বনেটে অক্ষত অবস্থায় শুয়ে থাকতে পেরেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, এ আপনার পরম সৌভাগ্য আর ছাত্রদের অনন্ত স্থৈর্যের পরিচয়! এতকিছু বলার পরও আপনার মাথায় যে,আধলা ইঁট এসে পড়েনি, তার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, আমাদের ছাত্রসমাজ ক্রমশ কী ভীষণ সুবোধ ও পরিশীলিত হয়ে উঠেছে! তাদের এই স্ব-নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের অভিনন্দন দেওয়াই যায়! বাবুল সুপ্রিয়, আপনার নিরাপত্তা রক্ষী আছে, আপনার ‘ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্বের’ ভারী পায়া আছে, আপনি আটকে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বাটাম নিয়ে ছাত্র পেটাতে জমা হওয়া লোক আছে, সর্বোপরি আপনাকে উদ্ধার করতে একটা রাজ্যের রাজ্যপালের চলে আসা আছে। আপনার এই গোটা ‘ আছে’ টাই আমাদের ট্যাক্সের পয়সায়। এমনকী যে ভোটে আপনি জিতেছেন সেই ভোটও আমাদের ট্যাক্সের পয়সায় হয়। আপনার যে ‘আছে’গুলো রয়েছে তার কোনোটাই ছাত্রদের নেই! আপনি আমাদের ট্যাক্সের পয়সার ওপর দাঁড়িয়ে যা খুশি তাই করতে পারেন না। একজন নাগরিক হিসেবে চাই আপনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। শুধু ছাত্রদের কাছে নয়। আমাদের সবার কাছে!”
আবুটা (অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচারস এ্যাসোসিয়েশন) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় লোকাল চ্যাপ্টারের পক্ষে গৌতম মাইতি এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর একটি ছাত্র সংগঠনের অনুষ্ঠানে এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যোগ দিতে আসা ও তাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের একাংশের বিক্ষোভ, এবং তারপর রাজ্যপালের অতিসক্রিয় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমনের ফলে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মত প্রকাশের মুক্ত পরিবেশ থাকা উচিত, তবে তা প্ররোচনামূলক না হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমরা জানি, উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন এবং তা করতে গিয়ে তারা আহত ও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অথচ উক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাননীয় উপাচার্যের সংগে যেভাবে দুর্ব্যাবহার করেছেন, কটু ভাষায় কথা বলেছেন, তা স্পষ্টতই প্রভুসুলভ ও কুরুচিকর। আবার ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করার নামে রাজ্যপাল যেভাবে ক্যাম্পাসে চলে এলেন, উপাচার্যকে ‘হয় পুলিশ ডাকুন নতুবা পদত্যাগ করুন’ জাতীয় ফরমান জারি করলেন, তা এরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন। আমরা মনে করি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও প্রথা অনুযায়ী পুলিশ না ডেকে উপাচার্য অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন। অন্যদিকে আমরা লক্ষ্য করলাম রাজ্যপালের প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে এক দল দুষ্কৃতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে গেল ও অগ্নি সংযোগ ঘটালো। সবকিছু পর্যালোচনা করে আমাদের মনে হয়েছে, গতকালের ঘটনার পিছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি দলের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পূর্ব পরিকল্পনা কাজ করেছে, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ সংকটগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। আমরা নীতিগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে যেকোনও রাজনৈতিক ও সরকারী হস্তক্ষেপের বিরোধী।
ভারতের ছাত্র ফেডারেশন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির প্রেস বিবৃতি:
তারিখ : ১৯/৯/১৯
(১) বাবুল সুপ্রিয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার করতে আসতেই পারেন। এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাবে, এটাও তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা দেশ চালাতে গিয়ে ইউজিসি তুলে দিচ্ছে, রাস্তায় পুড়িয়ে লোক মারছে, নতুন শিক্ষানীতি এনে শিক্ষাকে ধ্বংস করছে, দলিতদের স্কলারশিপ বন্ধ করে দিচ্ছে, তারা দেশের যেখানেই যাবে এরকম বিক্ষোভের মুখেই পড়বে। (২) বিক্ষোভ, মেপে করা হলে, সেটা বিক্ষোভ নয়, নাটক হয়। আমরা নাটক করতে যাইনি, বিক্ষোভ দেখাতেই গেছিলাম। (৩) বাবুল সুপ্রিয় একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর মতো নয়, রাস্তার গুন্ডার মতো আচরণ করে অহেতুক পরিস্থিতি জটিল করেছেন। (৪) রাজ্যপাল আরএসএস বিজেপি-র রাজনৈতিক দালালের মতো ভূমিকা পালন করেছেন, যার তীব্রভাবে বিরোধিতা আমরা করছি। (৫) এবিভিপি সহ আরএসএস-বিজেপি-র গুন্ডাবাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকে, ক্যাম্পাসের সম্পত্তি, আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সম্পত্তি ভাঙচুর করেছে, যা তাদের গুন্ডাগিরি সংস্কৃতির অঙ্গ যা অতীতেও আমরা বহুবার দেখেছি। তার আমদানি যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এবিভিপি করতে চাইছে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করবো এবং তাদের এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। (৬) কেউ যদি মনে করেন যে আজকের ঘটনা অনভিপ্রেত, তাহলে হয় তারা পরোক্ষে বিজেপির হয়ে কথা বলছেন, নয়তো তারা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐক্যবদ্ধ বাম প্রগতিশীল ছাত্রছাত্রীদের সাথে বিজেপি-আরএসএসের সংঘর্ষের রাজনৈতিক তাৎপর্য বুঝতে অক্ষম।
দেবরাজ দেবনাথ, সম্পাদক;
সন্দীপ নস্কর, সভাপতি
বিপ্লবী যুব অ্যাসোসিয়েশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি ১৯ সেপ্টেম্বর এক প্রেস বিবৃতিতে জানায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন একদিকে নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন আইসার চতুর্থ কলকাতা জেলা সম্মেলন চলছে তখন অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল আসছেন যাদবপুরে ঘৃণা ও বিদ্বষের রাজনীতি ফেরী করতে, তখন ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদে সামিল হলে বাবুল সুপ্রিয় ও তার বাহিনী ছাত্রদের উপর চড়াও হয় এবং অকথ্য গালিগালাজ করে। বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। বিজেপি-আরএসএসের এই ঘৃণার রাজনীতিকে আমরা তীব্র ধিক্কার জানাই এবং সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের লাল সেলাম জানাই। গোটা দেশজুড়ে সর্বত্র ঘৃণার রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক বিজেপি যাদবপুরেও ঘৃণা ও বিদ্বেষের পৃষ্ঠপোষকতা করবে তা স্বাভাবিকই। লড়াকু ছাত্রদের অদম্য স্পিরিটের কাছে পর্যুদস্ত হয়ে আর এস এসের গুণ্ডাবাহিনী, যাদের সাথে পড়াশুনার কোনও সম্পর্ক নেই তারা ক্যাম্পাসের ইউনিয়ন রুম ভাঙচুর করে, চার নম্বর গেটে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে ঘৃণা ও বিদ্বষের রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করে যেভাবে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে জেএনইউ দখল করতে চেয়েছিল, কিন্তু তা প্রতিহত করেছে সংগ্রামী বামপন্থী ছাত্ররা, ঠিক সেভাবেই যাদবপুরেও প্রতিরোধ গড়ে তুলবে সংগ্রামী বামপন্থী ছাত্ররাই। সংগ্রামী ছাত্র সাথীদের প্রতিরোধের স্পিরিটকে লাল সেলাম জানাই এবং ঘৃণা সৃষ্টির কারিগর বাবুল সুপ্রিয়র অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। বাংলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন গণতান্ত্রিক জনগণের কাছে আমাদের আবেদন সংগ্রামী ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান যাতে ঘৃণা ও বিদ্বেষের প্রচারকদের বাংলায় স্থান না হয়।