আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাজ্যে রাজ্যে প্রতিবাদ

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ৮ মার্চ আইপোয়া সারা দেশে সিএএ-এনপিআর-এনআরসি বিরোধী প্রতিবাদ সংগঠিত করে।

বিহারে সিএএ-এনপিআর-এনআরসি বাতিলের দাবিতে রাজ্যব্যাপী প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানী পাটনায় প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয় বুদ্ধ পার্ক থেকে, ঐ মিছিলে নেতৃত্ব দেন আইপোয়ার বিহার রাজ্য সম্পাদিকা শশী যাদব, জাতীয় সহ সভাপতি অধ্যাপিকা ভারতি এস কুমার এবং পাটনা জেলা সম্পাদিকা অনিতা সিনহা। মিছিলের পর অনুষ্ঠিত হয় একটি জনসভা এবং ঐ জনসভায় তাঁর বক্তব্যে শশী যাদব বলেন, দানবীয় সিএএ-এনপিআর-এনসিআর শুধু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধেই নয়, তা সমস্ত নারীদের বিরুদ্ধে; আর সেই কারণে মহিলারাই এই দানবীয় প্যাকেজের বিরূদ্ধে লড়াইয়ের সামনের সারিতে থেকে ইতিহাস সৃষ্টি করছেন। শাহিনবাগের ঠাকুমা-দিদিমা থেকে জেএনইউ-জামিয়া-র মহিলারাই সারা দেশে এবং তার সাথে বিহারেও প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে মহিলাদের এই ঐতিহাসিক জাগরণকে বিজেপি সহ্য করতে পারছে না আর তাই তারা সারা দেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ সংগঠিত করছে এবং ঘৃণার রাজনীতিকে বাড়িয়ে তুলছে। ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে আক্রমণের মুখোমুখি হয়ে মহিলারা গত ৬০-৭০ দিন ধরে ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

patna

 

অধ্যাপিকা ভারতি এস কুমার বলেন, ন্যায় ও অধিকারের ইস্যুতে নারীরা রাস্তায় নেমেছেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে কোন আলোচনা প্রধানমন্ত্রী মোদী না করে নারীদের ক্ষমতায়ন করছেন বলে নিজেকে কপটভাবে জাহির করছেন। তিনি দাবি করেছেন, ৮ মার্চ তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট নারীদের দিয়ে দেবেন, কিন্তু তিনি কি এর ব্যাখ্যা দেবেন যে তিনি এখনও কেন সেই সমস্ত মানুষদের ট্রোলগুলো ফলো করছেন যারা নারীদের নোংরা গালাগালি আর হুমকি দেয়?

begu

 

বেগুসরাইতেও একটি প্রতিবাদ মিছিল ও জনসভা সংগঠিত হয়। ঐ জনসভায় মহিলারা মোদী সরকারকে নারী-বিরোধী রূপে অভিহিত করেন। সরকার একদিকে দাবি করছে যে, তিন তালাক বিলোপের মধ্যে দিয়ে তারা মুসলিম নারীদের মর্যাদা দিয়েছে; অন্য দিকে সেই মহিলারাই যখন সিএএ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তখন তাদের নির্মম ভাবে প্রহার করা হচ্ছে। মোদী এবং নীতীশ সরকার ধর্ষণ ও খুনের শিকার মানুষদের ন্যায় বিচার দিতে চূড়ান্ত রূপে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেনেগার ও চিন্ময়ানন্দর মত ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত অপরাধীদের সুরক্ষা যোগাচ্ছে। রন্ধন কর্মী ও আশা এবং অন্যান্য প্রকল্প কর্মীদের ন্যূনতম মজুরিটুকুও দেওয়া হয় না। নবাব চকে অনির্দিষ্টকালের যে ধর্ণা চলছে সমবেত মহিলারা তার প্রতি পূর্ণ সংহতি জানান এবং গণতন্ত্র ও সমতা অর্জনের লড়াইকে তীব্রতর করে তোলার অঙ্গীকার করেন। তাঁরা দাবি জানান, সিএএ- এনপিআর-এনআরসি সম্পূর্ণ রূপে বাতিল করতে এবং কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর ও অন্যান্য ঘৃণার কারবারীদের গ্ৰেপ্তার করতে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে পদত্যাগ করতে হবে।

bhoj

 

bar

 

mung

 

সিওয়ান, জামশেদপুর, ভোজপুর, নওয়াদা, মুঙ্গের এবং বিহারের অন্যান্য স্থানেও ঐ ধরনের প্রতিবাদ সংগঠিত হয়।

up

 

আইপোয়া উত্তরপ্রদেশের বেনারসেও একটি নারী অধিকার যাত্রা সংগঠিত করে যাতে শ্রমজীবী মহিলা এবং ছাত্রী সহ বহু সংখ্যক মহিলা যোগদান করে। ঐ যাত্রা শেষ হয় রবিদাস গেটে, যাত্রায় নেতৃত্ব দেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা প্রতিমা গোণ্ড এবং সেখানে একটি জনসভাও অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় বক্তব্য রাখেন আইপোয়ার জেলা সম্পাদিকা স্মিতা বাগডে, ডিএলডব্লিউ শ্রমিক এম ভাবানা, গৃহ পরিচারিকা শীলা ও বিমলা, বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রিয়া ও কুসুম ভার্মা এবং অন্যান্যরা। বক্তারা দাবি করেন, সরকারকে মহিলাদের কর্মসংস্থান, ন্যায্য মজুরি এবং মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা আরো দাবি করেন, হোলি উৎসবের সময় এক মহিলার প্রতীকী দাহর প্রথাকে বন্ধ করতে হবে।

খণ্ড-27
সংখ্যা-8