পাকিস্তানে নারী দিবস পরপর গত তিন বছর ব্যাপক আলোড়ন জাগিয়েছে। গত শতকের আশি দশকে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনের জমানায় মেয়েরা ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম পাকিস্তানের নারীবাদীরাই ‘আজাদী’ শ্লোগান তুলেছিলেন যা আজ ভারতের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক স্বাধীনতা তথা নারী, দলিত, সংখ্যালঘু সহ সমস্ত নিপীড়িত মানুষের স্বাধীনতা বা মুক্তির এক নিরন্তর প্রসারমান জনপ্রিয় শ্লোগান হয়ে উঠেছে। পিতৃতন্ত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে নারীর শরীরের ওপর পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্য। উল্টোদিক থেকে বলা যায়, পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর নিজের শরীরের ওপরও নিজের কোনও অধিকার থাকে না। দেশে দেশে মেয়েরা তাই শ্লোগান তোলে “আমার শরীর, আমার ইচ্ছা”। কী তার অর্থ তার উত্তর দিয়েছেন এবছর পাকিস্তানে নারী দিবসের একজন সংগঠক।
আমার শরীর আমার ইচ্ছা – এর এগারোটি অর্থ
(১) গর্ভপাতে বাধ্য করা – চলবে না (২) পুত্র সন্তান না হওয়া পর্যন্ত বারবার গর্ভধারণ করতে বাধ্য করা – চলবে না (৩) যে যা খুশি পোশাক পরুক – পোশাক কখনও ধর্ষণের যুক্তি হতে পারে না (৪) ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোনো মেয়ের বিয়ে দেয়া – চলবে না (৫) বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যেও ধর্ষণ – বন্ধ কর (৬) মেয়েদের ভগাঙ্কুর চ্ছেদ – বন্ধ কর (৭) যৌন উৎপীড়ন ও ভিক্টিমের ওপরই দোষারোপ – বন্ধ কর (৮) কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য – চলবে না (৯) চেহারা তুলে খাটো করা – চলব না (১০) শারীরিক আঘাত – বন্ধ কর (১১) এবং যার যা খুশি ধর্ম বিশ্বাস পালনের অধিকার যাতে কোনও মেয়ে কোনওভাবে বিপন্ন বোধ না করে।
“মেরা জিসম মেরি মর্জি” শুনে যদি ভেবে বসেন যে মেয়েরা ন্যাংটো হয়ে ঘুরে বেড়াতে চায় তাহলে তা আপনার ভাবনা – আমাদের নয়।
ধন্যবাদ সহ, সাইমা জুবেরি