দীর্ঘ ২০ মাস বন্ধ হুগলির গোঁদলপাড়া জুট মিল। ইতিমধ্যে তিন জন যুবক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন, বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। নির্বাচনের আগে বিজেপির বর্তমান সাংসদের হৈ চৈ-এর নাটকের যবনিকা পাত ঘটেছে নির্বাচনে জিতে আসার পর। চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভোগা মানুষগুলো স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভা ও কোম্পানির উদাসীনতা, বঞ্চনা ও নিত্য নতুন জুলুমবাজির শিকার। পুরসভার কল দিয়ে মেলে নোংরা পানীয় জল, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা শ্রমিক বস্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় কোম্পানি। অন্ধকার ঘুপচি ঘরে সকালে পড়তে বসে বন্ধ শ্রমিক সন্তানরা। সমস্ত খুশি থেকে বঞ্চিত ছাত্রছাত্রীদের থেকে শিক্ষার সুযোগ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং সরকার ও প্রশাসন এ ব্যাপারে হাত পা গুটিয়ে বসে আছে। ইতিমধ্যে এআইসিসিটিইউ এবং এআইএসএ-র সংগঠকরা শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের কাছে যান, শুরু হয় লক আউটের বলি গোঁদলপাড়ার শ্রমিক বিশ্বজিৎ দে স্মৃতি শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্র। ফ্রি কোচিং, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পেপার প্রদান ও আরও কিছু কাজ করা হয়। গত ৩০ ডিসেম্বর চন্দননগর মহকুমা শাসকের কাছে শ্রমিক মহল্লায় ২৪ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিতে এআইএসএ-র পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। প্রতিনিধি দলে গোঁদলপাড়া জুট মিলের শ্রমিক পরিবারের একজন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও চার জন ছাত্রী উপস্থিত ছিল। মহকুমা শাসক সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি শুনলেও কোনো কার্যকরী সমাধানের কথা শোনাননি। তিনি বলেন, ডেপুটি লেবার কমিশনারকে নিজে বিষয়টি জানাবেন এবং আমাদেরও ডেপুটি লেবার কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করতে বলেন। শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবির সাথে সাথে এই কোম্পানির অমানবিক পদক্ষেপ ও তা নিয়ে প্রশাসনের উদাসীনতার বিরূদ্ধে সংগঠিত উদ্যোগ ও আন্দোলন চলবে।