প্রতিবাদ জেএনইউ-র ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নিপীড়ন এবং বেনারস হিন্দুবিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রদায়িকীকরণের বিরুদ্ধে এলাহাবাদে ২০১৯-এর ২৭ নভেম্বর এক নাগরিক মিছিল সংগঠিত হয়। চন্দ্রশেখর আজাদ পার্ক থেকে শুরু হয়ে মিছিল সুভাষ চকে এক জনসভার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। ঐ সভায় বক্তারা ফি বৃদ্ধি, দমনমূলক হোস্টেল বিধি, নজরদারি এবং অন্যান্য ছাত্র বিরোধী পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে জেএনইউ-কে ধ্বংস করার কেন্দ্রীয় সরকারের লাগাতার উদ্যোগকে ধিক্কার জানান। তাঁরা বলেন, সস্তায় শিক্ষা লাভ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ছাত্র-ছাত্রীরা সংসদ অভিযান সংগঠিত করলে তাদের উপর পৈশাচিক পুলিশি হিংসা নামিয়ে আনা হয়। মোদী সরকার সাধ্যায়ত্ত শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে, এবং যে জেএনইউ প্রতিবাদের স্তম্ভ এবং পরিবর্তনের প্রেরণা তাকে ধ্বংস করতে তারা কোমর বেঁধেছে। জেএনইউ-র ছাত্র-ছাত্রীরা যে আন্দোলন গড়ে তুলেছে তা সারা দেশের ছাত্র সম্প্রদায়ের কাছেই অনুপ্রেরণা। ড: ফিরোজ খানকে বিএইচইউ-তে সংস্কৃতর সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ করার পর ঐ নিয়োগের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ জানানো হয় বক্তারা তাকেও ধিক্কার জানান। তাঁরা বলেন, ঐ প্রতিবাদ সাংবিধানিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধেই আক্রমণ এবং নাগরিক সমাজ এটাকে মেনে নেবে না। সেদিনের জনসমাবেশে অংশগ্রহণ করেন এআইকেএমএস, এসইউসিআই(সি), সিপিআই, এসএফআই, জসম, সিপিআই(এমএল), এআইএসএ, আরওয়াইএ প্রভৃতি সংগঠনের কর্মীগণ এবং অনেক সাংবাদিক, শিক্ষক ও নাগরিক।
আজমগড়ে ২৭ নভেম্বর নাগরিক মঞ্চের পতাকাতলে এই সমস্ত ইস্যুতে একটা প্রতিবাদী জনসমাবেশ সংগঠিত হয়। মিছিল শুরু হয় আম্বেদকর পার্ক থেকে এবং শহীদ কুনওয়ার সিং গার্ডেনে জনসভার মধ্যে দিয়ে সেদিনের কর্মসূচি শেষ হয়। ঐ সভায় তাঁর বক্তব্যে কৃষক নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখন বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জিও ও আম্বানি এবং অন্যান্য কর্পোরেট শক্তির সেবায় কাজে লাগানোর মরিয়া চেষ্টা চলছে। শিক্ষাকে শুধু ধনীদের জন্য সংরক্ষিত করার এই যে জন-বিরোধী দরিদ্র-বিরোধী উদ্যোগ চলছে তার বিরুদ্ধে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে জেএনইউ। জেএনইউ শুধু নিজের জন্য লড়াই করছে না, তার লড়াই দরিদ্রদের শিক্ষার অধিকারকে সুরক্ষিত করার জন্য। নাগরিক সমাজ জে এন ইউ-র সমর্থনে দাঁড়াচ্ছে এবং বিএইচইউ-র যে ছাত্ররা ডা: ফিরোজ খানের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে নাগরিক সমাজ তাদের প্রতিও সংহতি জানাচ্ছে। এদিনের নাগরিক সমাবেশ উত্তরাখণ্ডের আয়ুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতিও সংহতি জানিয়েছে। ছাত্র সংগঠন, কৃষক সংগঠনের সদস্যরা এবং ব্যাপক সংখ্যক ন্যায় ও গণতন্ত্র প্রেমী নাগরিকগণ এদিনের সমাবেশে যোগ দেন।