অর্ডিন্যান্স কারাখানার শ্রমিক কর্মচারীরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হলেন। ৩০ জুলাই স্ট্রাইক ব্যালটে প্রায় ১০০ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারী ধর্মঘটের পক্ষে মত দিয়েছেন। ১ আগস্ট দেশের প্রতিটি কারখানা কর্তৃপক্ষকে এবং প্রতিরক্ষা দপ্তরে কেন্দ্রীয়ভাবে ধর্মঘটের নোটিশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকার আলোচনার জন্য ২০ দিন সময় পেয়েছে কিন্তু মীমাংসার কোনো আন্তরিকতা দেখায়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বলা হয় বেসরকারিকরণ করা হবে না, নিগমীকরণ করা হবে। এই ধরনের বাকচাতুর্যের মধ্য দিয়ে ইউনিয়নকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু প্রতিরক্ষা শিল্পের সাথে যুক্ত ৩টি ট্রেড ইউনিয়ন — এআইডিইএফ, আইএনডিডব্লিউএফ, বিপিএমডি এবং সিডিআরএ সিদ্ধান্ত নেয় কোনো অবস্থাতেই কর্পোরেশন করা চলবে না। সারাদেশে ৪১টি ফ্যাক্টরিতে ৯০% শ্রমিক ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরি, দমদম অ্যামুনেশন ফ্যাক্টরি, ইছাপুর মেটাল ও রাইফেল ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৮০-৯০% শ্রমিক ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন।
শ্রমিক ধর্মঘটে সংহতি জানাতে এআইসিসিটিইউ-এর পক্ষ থেকে কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে অশোক সাহা ও নবেন্দু দাশগুপ্ত, দমদম অ্যামুনেশন ফ্যাক্টরিতে সুরজিৎ দত্তরায় এবং ইছাপুর মেটাল এবং রাইফেল ফ্যাক্টরিতে নারায়ণ দে যান। উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো বিকেলে ইছাপুরে সংহতি জানিয়ে সভা করেছে। এআইসিসিটিইউ-র পক্ষ থেকে বক্তা ছিলেন বাসুদেব বসু, উপস্থিত আছেন সাগ্নিক চক্রবর্তী এবং শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেল ইউনিয়ন নেতা রবি সেন। এছাড়া সিআইটিইউ-র নেত্রী গার্গী চ্যাটার্জী, আইএনটিইউসি-র মহম্মদ নিজাম।
২০ আগস্ট এক প্রেস বিবৃতিতে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থঘোষ বলেন — মোদী-২ জমানা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই নেমে এসেছে কর্পোরেটকরণ ও বেসরকারিকরণের আগ্রাসী হামলা। রেল, প্রতিরক্ষা, বিএসএনএল সহ প্রায় ৫০ টি লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি (ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট) হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এর নিট ফল রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ লুণ্ঠন ও লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মচারীদের কর্মচ্যুতি। অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত প্রতিরক্ষা শিল্পেরও এই লুন্ঠনের হাত থেকে নিস্তার নেই। চড়া মুনাফাই যার শেষ কথা। দেশের সম্পদ ও দেশের নিরাপত্তাকে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে ২০ আগস্ট থেকে ২০ সেপ্টেম্বর, একমাসব্যাপী ধর্মঘটের আজ প্রথম দিন। এরাজ্যের দমদম, কাশীপুর, ইছাপুরের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে সকাল থেকেই শ্রমিক কর্মচারীরা গেটে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করে দেন। দমদম, ইছাপুরে ১০০ শতাংশ শ্রমিক কর্মচারী ধর্মঘটে সামিল হন, কাশীপুর ফ্যাক্টরিতেও ৯৫ শতাংশ শ্রমিক কর্মচারী ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। দেশের ৪১টি প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে।
আমাদের শ্রমিক সংগঠন এআইসিসিটিইউ দৃঢ়ভাবে এই লড়াই আন্দোলন ও ধর্মঘটে শ্রমিক কর্মচারীদের পাশে আছে। সমস্ত লড়াকু শ্রমিক কর্মচারিকে অভিনন্দন
আমরা রাজ্যের সমস্ত বাম গণতান্ত্রিক জনগণ বিশেষত ছাত্র যুব সাংস্কৃতিক কর্মী ও শ্রমিক কর্মচারীকে এই লড়াইয়ের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করছি।