কমরেড চারু মজুমদারের এবছর জন্মশতবর্ষ (১৯১৯-২০১৯)। ২৮ জুলাই (১৯৭২-২০১৯) তাঁর ৪৭তম শহীদ বার্ষিকী। একইসাথে এবছরই সিপিআই(এমএল) গঠনের অর্ধশতবর্ষ (১৯৬৯-২০১৯) পূর্তির। এই তিনটি স্মরণ কর্মসূচী রয়েছে সামনে। সমাবেশ-সংগ্রাম-সংগঠনকে সৃজনশীলভাবে শক্তিশালী ও বিস্তার করে চলার পথে। আসুন, কঠোর-কঠিন প্রয়াস চালানোর ভিত্তিতে সামনের দিকে তাকাই, এগিয়ে যাওয়ার শর্ত সৃষ্টি করে চলতে থাকি। অভীষ্ট লক্ষ্যে অবিচল থাকতে স্মরণ করি, আজকের পরিবেশ-পরিস্থিতিতে এগিয়ে চলার পাথেয় হিসাবে কমরেড চারু মজুমদারের অভিজ্ঞতা থেকে গ্রহণীয় মৌলিক শিক্ষার কিছু দিক।
কমরেড চারু মজুমদার বলেছেন, “বিপ্লবী পার্টিছাড়া বিপ্লব কখনও সফল হতে পারে না। যে পার্টি দৃঢ়ভাবে মাও সেতুঙ চিন্তাধারার উপর প্রতিষ্ঠিত, অাত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-কৃষক ও মধ্যবিত্ত যুবকের দ্বারা গঠিত, যে পার্টির অভ্যন্তরে পুরো গণতান্ত্রিক অধিকার অাছে সমালোচনা ও অাত্মসমালোচনার এবং যে পার্টির সদস্যরা স্বেচ্ছায় ও স্বাধীনভাবে শৃঙ্খলা মেনে নিয়েছে, যে পার্টি শুধু উপরের হুকুম মেনেই চলে না, স্বাধীনভাবে প্রত্যেকটি নির্দেশকে যাচাই করে এবং ভুল নির্দেশকে অমান্য করতেও দ্বিধা করে না বিপ্লবের স্বার্থে, যে পার্টির প্রত্যেকটি সদস্য নিজের ইচ্ছায় কাজ বেছে নেন এবং ছোট কাজ থেকে বড় কাজ সব কিছুকেই সমান গুরুত্ব দেন; যে পার্টির সদস্যরা নিজেদের জীবনে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী অাদর্শকে প্রয়োগ করেন, নিজেরা অাদর্শ প্রতিষ্ঠা করে জনতাকে উদ্বুদ্ধ করেন, অারও অাত্মত্যাগ অারও কর্মোদ্যম বাড়াতে, যে পার্টির সদস্যরা কোনো অবস্থাতেই হতাশ হন না, কোনো কঠিন পরিস্থিতি দেখেই ভয় পান না, দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যান তার সমাধানে — এ রকম একটা পার্টিই পারে দেশের বিভিন্ন শ্রেণী ও মতের মানুষের ঐক্যবদ্ধ মোর্চা গড়ে তুলতে।
এইরকম একটি বিপ্লবী পার্টিই পারে ভারতবর্ষের বিপ্লবকে সফল করে তুলতে।” কমরেড চারু মজুমদার বলেছেন, ‘‘ ... এমনকি যারা এক সময়ে অামাদের প্রতি শত্রুতা করেছে বিশেষ পরিস্থিতিতে তারাও অামাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে এগিয়ে অাসবে। এইসব শক্তির সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মতো মনের প্রসারতা রাখতে হবে। মনের প্রসারতা কমিউনিস্টদের গুণ। জনগণের স্বার্থই অাজ ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের দাবি জানাচ্ছে। জনগণের স্বার্থই পার্টির স্বার্থ।”