কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলির আহ্বানে ১২ দফা দাবির ভিত্তিতে ৮-৯ জানুয়ারী সাধারণ ধর্মঘট দিন ঘোষনার পর থেকেই রাজ্যের অন্যান্য অংশের সাথে সাথেই শিলিগুড়ি শহর সহ দার্জিলিং জেলা জুড়েই এ আই সি সি টি ইউ সহ সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নগুলির মধ্যে প্রচার প্রস্তুতি ছিলো তুঙ্গে। কনভেনশন, ধর্মঘটের শেষলগ্নে শিলিগুড়ি পথসভা, মিছিল ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির সমাবেশের মধ্য দিয়ে ধর্মঘটের দাবিগুলিকে সাধারণ মানুষের কাছে নেতৃত্ব বারংবার তুলে ধরেছেন। ধর্মঘটের দুদিনই ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্ব, অন্যান্য গণসংগঠনের নেতা ও কর্মীরা রাস্তায় ছিলেন। মিছিল, পিকেটিং, মুহুর্মুহু শ্লোগানে শিলিগুড়ি শহরের রাস্তা কার্যত শ্রমিক ইউনিয়নগুলির দখলে চলে যায়। পুলিশ প্রশাসন যথারীতি সরকারি লেঠেল বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। ধর্মঘটের প্রথম দিন ৮ জানুয়ারী শিলিগুড়ি লেকটাউন এলাকা থেকে সিটুর জেলা নেতৃত্ব দিবস চৌবে সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে নিউজলপাইগুড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে গ্রেপ্তার করা হয় দুই এস এফ আই কর্মীকে । বাগডোগরাতেও কিছু সি পি আই এম কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেষে বামকর্মীদের সম্মিলিত চাপের কাছে পুলিশ নতি স্বীকার করে এবং ৮ জানুয়ারী রাতেই সব নেতা কর্মীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। হিলকার্টরোড, হাসমি চক বিধান মার্কেট সহ বিভিন্ন জায়গাতেও পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো-- কিন্তু সমস্ত কিছু উপেক্ষা করেই সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্ব দৃঢ় মানসিকতার সাথেই মিছিলে সামিল হয়েছেন। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের রাঙাপাণিতে এ আই সি সি টি ইউ একক ভাবেই ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল সংঘটিত করে। খড়িবাড়ি ও নকশালবাড়িতে যৌথ মিছিল সংঘটিত হয়। পাহাড় এবং তরাইয়ের চা বাগানগুলিতে দুদিনই ধর্মঘটের প্রভাব ছিল সর্বাত্মক। পার্টির দার্জিলিং জেলা সম্পাদক এবং এ আই সি সি টি ইউ র কার্যনির্বাহী সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার, মোজাম্মেল হক, পবিত্র সিংহ, পুলক গাঙ্গুলী, অপু চতুর্বেদী, রুবী সেনগুপ্ত, শাশ্বতী সহ পার্টির কর্মীরা দুদিনের ধর্মঘটে রাস্তা কামড়ে থেকেছেন। পুলিশী হুমকি অগ্রাহ্য করে মশাল মিছিল থেকে দ্বিতীয় দিনের প্রত্যয়কে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি শহরের শ্রমজীবি ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের ধর্মঘটকে সফল করার জন্য সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়ে অন্তিম মিছিল এক নতুন সংগ্রামী ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের অধ্যায়ের সূচনা করলো দুদিনের সাধারণ ধর্মঘটে এ কথা বলাই যায়। মেহনতি মানুষের ঐক্য দীর্ঘজীবী হোক।