খবরা-খবর
ধর্মঘট : উত্তর ২৪ পরগণা

উত্তর ২৪ পরগণা জেলার শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে ধর্মঘট সামিল হয়েছেন। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন শিল্পাঞ্চলে তৃণমূল ব্যাপক সন্ত্রাস নামিয়েছে। ২১ টি চটকল সহ ইঞ্জিনিয়ারিং, পেপার মিল, কাস্টিং ইন্ডাস্ট্রি প্রায় সব কারখানার শ্রমিকরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। সব ধরনের হুমকি, সন্ত্রাস উপেক্ষা করে শ্রমিকরা ধর্মঘট সর্বাত্মক করে তুলেছেন।

চটকল শ্রমিকদের সামনে দাবি সনদ নিয়ে যে লড়াই আছে এই ধর্মঘট তাদের সংগ্রামী মেজাজকে আরও বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।

ধর্মঘটি সমস্ত শ্রমিক এবং নেতাদের লাল সেলাম জানিয়েছে এ আই সি সি টি ইউ এবং বি সি এম এফ-এর উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কমিটি।

৮ জানুয়ারি নৈহাটি জুটমিলে বি সি এম এফ নেতা ম. জহিম সহ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের নিয়ে মিল গেটে পিকেটিং করেন। মিলে ধর্মঘট সর্বাত্মক হয়। সকাল ৭ টা থেকে যৌথ মিছিল হয়েছে। সকাল থেকে বিকেল তিনবার মিছিল হয়। এ আই সি সি টি ইউ অনুমোদিত ইটভাটা মজদুর ইউনিয়নের ডাকে সমস্ত ভাটার শ্রমিকরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। অশোকনগরে সকাল ৭টা থেকে স্টেশনে জমায়েত হয়ে মিছিল শুরু হয় । একাধিক জায়গায় পিকেটিং হয় । চৌরঙ্গী মোড়ে পিকেটিং চলাকালীন টি এম সি কাউন্সিলর বাধা দিলে তা প্রতিরোধ করা হয় । বিকালে আবার মিছিল শহর পরিক্রমা করে । বসিরহাটে সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘটি ইউনিয়নগুলি মিছিল, মিটিং ও পিকেটিং করে। বারাসাতে ধর্মঘটের সমর্থনে সি পি আই (এম এল), সি পি আই(এম) সহ অন্যান্য বামপন্থী দল সমূহ মিছিল করে। মধ্যমগ্রামে সকালে মিছিল বিস্তীর্ণ পথ পরিক্রমা করে। বেশ কয়েকবার অল্প সময়ের ব্যবধানে রেল অবরোধ করা হয়। বেলঘরিয়ায় দেশপ্রিয়নগর, বটতলায় তৃণমূলের হামলা উপেক্ষা করে মিছিল ও রেল অবরোধ করা হয়। বিকেলে সিপিআই (এম-এল) এবং এ আই সি সি টি ইউ- র মিছিল বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রন্ধন কর্মীরা ধর্মঘটে সামিল হন। মিছিলের সামনে ছিলেন অশোক বিশ্বাস, সুব্রত ভৌমিক, অর্চনা ঘটক, শিখা গুহরায়, জয়ন্তী দাশগুপ্ত, শর্মিলা দে, কুহেলী বোস, মৃণাল চ্যাটার্জী, ভোলানাথ গুহ, নিতাই ঘোষ প্রমুখ। চাঁদপাড়ায় বাজার সহ স্টেশন পর্যন্ত মিছিল হয়। সকালে ১ ঘন্টা যশোর রোড অবরোধ করা হয়। পুলিশ অবরোধকারীদের গ্রেপ্তার করে এবং পরে ছেড়ে দেয়। বি ডি ও অফিস এবং স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে সভা হয়। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন সিপিআই (এম-এল) রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণপদ প্রামানিক, লোকাল কমিটির সম্পাদক কমল কর্মকার, শচীন রায়, চম্পা লতা প্রামানিক, শংকর মন্ডল, আখি প্রামানিক প্রমুখ এ আই কে এম এবং সি পি আই (এম-এল) ব্যানার নিয়ে। বনগাঁ আকাইপুরে ট্রেন অবরোধ করা হয়। প্রাণ বল্লভ পাঠক এ আই কে এম থেকে অংশগ্রহণ করেন। ৯ জানুয়ারি গাইঘাটা ব্লকে, ধরমপুর তেতুলতলা ও জয় তারার দুটো প্রাথমিক বিদ্যালয় তৃণমূলের হুমকি উপেক্ষা করে দুদিন রান্নার কাজ বন্ধ রেখে রন্ধন কর্মীরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। ধরমপুর স্কুলে সবিতা চ্যাটার্জী নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাকে রান্নার কাজ সরিয়ে দেওয়ার জন্য পঞ্চায়ে ত প্রধান এবং তৃণমূলের নেতারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে বিডি অফিসে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছে। ‘প:ব: সংগ্রামী রন্ধনকর্মী (মিড-ডে-মিল) ইউনিয়ন’ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে ও সবিতা চ্যাটার্জীকে কাজে বাধা না দেওয়ার জন্য সব পক্ষের কাছে আবেদন করছে। অশোকনগরে সকাল থেকে মিছিল এলাকা পরিক্রমা করে কচুয়া মোড়ে অবরোধ ও সংক্ষিপ্ত সভা হয়। সমগ্র কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন জয়শ্রী দাস, বাবুনি মজুমদার, অজয় বসাক, পবন সিংহ রায়, নির্মাণ শ্রমিক নেতা নাজিম আলী, শঙ্কর সাহা প্রমুখ। বারাসাতে সি পি আই (এম-এল), সি পি আই (এম), ফরোয়ার্ড ব্লক সহ অন্যান্য বাম দলগুলি মিছিল করে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। দু দিনের হরতালে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ দত্ত, পবন দে, দেবল দাস প্রমুখ। মধ্যমগ্রামে সকালে মিছিল হয়। বিকেলে ধর্মঘটি ইউনিয়নগুলি সভা করেছে। এ আই সি সি টি ইউ থেকে বক্তব্য রাখেন সুজিত ঘোষ। দু দিনের কর্মসূচিতে নেতৃত্বে কাঞ্চন সরকার, মৈত্রেয়ী বিশ্বাস প্রমুখ ছিলেন। সিপিআই (এম-এল) সব ব্রাঞ্চ সদস্যরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ধর্মঘট : উত্তর ২৪ পরগণা একের পাতার পর বসিরহাটে ধর্মঘটি ট্রেড ইউনিয়নগুলি যৌথ ভাবে মিটিং, মিছিল ও পিকেটিং করেছে। দু দিনের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন দেবব্রত বিশ্বাস, পার্থ কুলভি, নূর ইসলাম মোল্লা, মনিরুল গাজী প্রমুখ। নৈহাটিতে সকালে মিছিল বানচাল করার জন্য তৃণমূলের বাইক বাহিনী জমায়েত হয়। সংঘর্ষ এড়িয়ে বিকেলে বিশাল মিছিল এলাকা পরিক্রমা করে। সাধারণ মানুষের জমায়েত দেখে বাইক বাহিনী বিকেলে নিজেদের আস্তানার মধ্যেই থাকে, বাইরে আসার সাহস দেখায়নি। এই কর্মসূচিতে সামনের সারিতে ছিলেন শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত সেনগুপ্ত, সরিৎ চক্রবর্তী, উত্তম দাস, নারায়ণ দে, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, নারায়ন রায় প্রমুখ। বেলঘরিয়ায় ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সি পি আই (এম), সি পি আই (এম এল) যৌথ মিছিলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি নেওয়া হয়। তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী মিছিলে হামলার জন্য পরিকল্পনা করে। এই অবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে প্ররোচনায় পা না দিয়ে মিছিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিছিলের জন্য প্রায় ২৫০-৩০০ কর্মী জমায়েত হয়েছিলেন। মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য নবেন্দু দাশগুপ্ত, অশোক সাহা, সাগ্নিক চক্রবর্তী ও বুদ্ধদেব ব্যানার্জী আরিয়াদহে উপস্থিত ছিলেন। সিপিআই (এম-এল) পার্টি কার্যালয় থেকে শিবশঙ্কর গুহরায়ের নেতৃত্বে পার্টি কর্মীদের নিয়ে মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন, তাদের মিছিল স্থগিত হওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। তখন তারা পার্টির জেলা কার্যালয়ে ফিরে যান। আগরপাড়া জুটমিলে এ আই সি সি টি ইউ অনুমোদিত ‘বেঙ্গল চটকল মজদুর ফোরাম’ - এর সম্পাদক মাজাহার খান সহ অজয় রায় সি আই টি ইউ এবং অমল সেন এ আই ইউ টি ইউ সি নেতাদেরকে টি এম সি গুন্ডারা তাদেরকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে বলে। হুমকি দেয় নেতারা কাজে যোগ না দিলে আগামীকাল থেকে এই নেতাদের চিরকালের জন্য মিল গেট বন্ধ যাবে। শ্রমিক নেতারা ও শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে গেছেন।

৩ থেকে ৮-৯ জানুয়ারি বেশকিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়।

৩ জানুয়ারী টিটাগড়ে ইস্টার্নম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি জুটমিলে গেট মিটিং হয়। বক্তা ছিলেন লিয়াকত আলি, তরিৎবরণ তোপদার, নবেন্দু দাশগুপ্ত প্রমুখ। মধ্যমগ্রামে ট্রেড ইউনিয়নের যৌথসভা। বক্তা ছিলেন নবেন্দু দাশগুপ্ত, সুজিত ঘোষ ও অন্যান্য। খড়দহে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন-র সভা। বক্তা ছিলেন নারায়ণ দে, শিবশঙ্কর গুহরায়, শিলা দে সরকার, অশোক সাহা, জয়ন্তী দাশগুপ্ত, অর্চনা ঘটক, নবেন্দু দাশগুপ্ত এবং সন্দীপ দেবনাথ। সঞ্চালক সুবীর দাশগুপ্ত। বীজপুরে হুকুম চাঁদ জুট মিল গেটে ধর্মঘটের সমর্থনে এ আই সি সি টি ইউ সহ ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বি সি এম এফ থেকে বক্তব্য রাখেন শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪ জানুয়ারী বসিরহাটে ধর্মঘটের সমর্থনে এ আই সি সি টি ইউ সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ মিছিল। অশোকনগরে ধর্মঘটের সমর্থনে সিপিআই (এম-এল)-র সভা অনুষ্ঠিত হয়। বীজপুরে ধর্মঘটের সমর্থনে হালিশহরে সিপিআই (এম-এল)-র মিছিল জেটিয়া বাজার হয়ে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। জগদ্দলে জগদ্দল জুটমিল থেকে এ আই সি সি টি ইউ এবং বি সি এম এফ সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল করে। মিছিল বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। কামারহাটি চটকলের ২০টি ইউনিয়নের শ্রমিকদের উপচে পড়া ভিড়ে পাঁচমাথা মোড়ে সভা হয়। বি সি এম এফ থেকে বক্তা ছিলেন মাজাহার খান। বেলঘরিয়া বি টি রোড রথতলায় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তা ছিলেন শিবশঙ্কর গুহরায় (এ আই সি সি টি ইউ), গার্গী চ্যাটার্জী (সি আই টি ইউ), দিব্যেন্দু মিত্র (আই এন টি ইউ সি), শৈবাল ঘোষ (এ আই টি ইউ সি) প্রমুখ। সভাপতি মন্ডলীতে ছিলেন ঝন্টু মজুমদার ও নবেন্দু দাশগুপ্ত। মধ্যমগ্রামে হুমাইপুর ও বসুনগরে ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথসভা হয়। এ আই সি সি টি ইউ থেকে বক্তব্য রাখেন কাঞ্চন সরকার। ৫ জানুয়ারি বেলঘরিয়ায় দেশপ্রিয়নগর বাজারে এ আই পি ডাব্লিউ এ, এস এফ আই, আর ওয়াই এ, ডি ওয়াই এফ আই, এ আই এস এ যৌথ কর্মসূচি হয়। বক্তা ছিলেন জয়ন্তী দাশগুপ্ত, রণজয় সেনগুপ্ত, নীলাশিস বসু প্রমুখ। নৈহাটিতে এ আই সি সি টি ইউ সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মিছিল বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। রাজেন্দ্র নগর বটতলায় সভা হয় বক্তা ছিলেন স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সুজিত ঘোষ প্রমুখ। মধ্যমগ্রামে দিগবেরিয়ায় কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের সভা বক্তা এ আই সি সি টি ইউ- র পক্ষে ছিলেন কাঞ্চন সরকার প্রমুখ। অশোকনগর কচুয়া মোড় যৌথসভা হয়। এ আই সি সি টি ইউ থেকে বক্তা ছিলেন নাজিব আলি মন্ডল ও অজয় বসাক। গাইঘাটা চাঁদপাড়ায় মিছিল এ আই সি সি টি ইউ এবং এ আই কে এম অংশ নেয়। ৬ জানুয়ারি বেলঘরিয়ায় কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি ডাকে ও ফেডারেশনের ডাকে আগামী ৮-৯ জানুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে কামারহাটি পৌর অঞ্চলে সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন গুলির ডাকে কেন্দ্রীয় মিছিল পূর্ববেলঘড়িয়া বাদামতলা মোড় থেকে আড়িয়াদহ ৪৩/১ বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত মিছিল হয়। শুরুতে বক্তব্য রাখেন মানস মুখার্জিবিধায়ক, সভাপতি সুভাষ মুখার্জি (সি আই টি ইউ), কুমারেশ কুন্ডু (এ আই টি ইউ সি), দিব্যেন্দু মিত্র (আই এন টি এউ সি), নবেন্দু দাশগুপ্ত (এ আই সি সি টি ইউ) সহ অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। বসিরহাটে এ আই সি সি টি ইউ সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ গাড়ি প্রচার করা হয়। মধ্যমগ্রামে পৌরসভা থেকে মিছিল শহর পরিক্রমা করে। এ আই সি সি টি ইউ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নৈহাটিতে এ আই এস এ এবং এ আই সি সি টি ইউ অটোতে মাইক লাগিয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রচার চালায়। জগদ্দলে ধর্মঘটের সমর্থনে এ আই সি সি টি ইউ সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়গুলি শ্যামনগর ডালডা গেট থেকে মিছিল করে। অশোকনগরে ধর্মঘটের সমর্থনে এ আই সি সি টি ইউ, এ আই পি ডব্লিউ এ অটো প্রচার চালায়। গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাজারে যৌথ মিছিল এবং সভা হয়। এ আই সি সি টি ইউ, এ আই কে এম মিছিলে অংশ নেয়। বক্তা ছিলেন কৃষ্ণ প্রামাণিক ৭ জানুয়ারি ঘাইঘাটায় এ আই সি সি টি ইউ সহ ধর্মঘটি ইউনিয়নগুলি মিছিল সংগঠিত করে। অশোকনগরে এ আই সি সি টি ইউ সহ অন্যান্য ইউনিয়ন স্টেশনে প্রচার সভা করে। বক্তা অজয় বসাক (এ আই সি সি টি ইউ), গণসংগীত পরিবেশন করেন বাবুনি মজুমদার। বসিরহাটে সকালে গাড়ি প্রচার হয় ও বিকালে যৌথসভায় বক্তব্য রাখেন বাসুদেব বসু, উপস্থিত ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস। কামারহাটিতে বি সি এম এফ সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ মিছিল হয়। বক্তা মাজাহার খান। জগদ্দল জুটমিলে যৌথ গেট সভা হওয়ার কথা ছিল। তৃণমূলের বাইক বাহিনী গেটে মাইক ভেঙে দেয়। তারপর তারা সি আই টি ইউ অফিসে হামলা চালায় এবং অফিস দখল করে নেয়। বি সি এম এফ নেতা ওমপ্রকাশ রাজভর এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করেন। বীজপুরের হালিশহরে এ আই সি সি টি ইউ-র মিছিল বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। শিবদাসপুরে যৌথ মিছিল হয়। নেতৃত্বে ছিলেন শেখ আব্দুল মফিজ ও নারায়ন রায়। টিটাগড়ের কেলভিন জুটমিল গেট সভায় এ আই টি ইউ সি বর্ষীয়ান নেতা শ্যামল বসু এবং লিয়াকত আলি আক্রান্ত হন। রাজারহাটে এলাকায় পোস্টার লাগানো ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হয়। জেলার সিংহভাগ কমরেড ধর্মঘট সফল করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন যৌথ মিছিল আরিয়াদহ ৪৩ নং বাস স্ট্যান্ড থেকে বেলঘরিয়া বাদামতলা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কর্মসূচি নেওয়া হয়। কিন্তু তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী মিছিলকারিদের ওপর হামলার জন্য প্রস্তুতি নেয়। পুলিশ প্রশাসন মিছিলকারিদের জানায় মিছিল হলে বড়সড় হাঙ্গামা হওয়ার সম্ভবনা আছে। পুলিশ মিছিলকারিদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলে জানায়। এই অবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে প্ররোচনায় পা না দিয়ে মিছিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিছিলের জন্য প্রায় ২৫০-৩০০ কর্মী জমায়েত হয়েছিলেন।

মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য নবেন্দু দাশগুপ্ত, অশোক সাহা, সাগ্নিক চক্রবর্তী ও বুদ্ধদেব ব্যানার্জী আরিয়াদহে উপস্থিত ছিলেন।

এই দিকে পার্টি কার্যালয় থেকে শিবশঙ্কর গুহরায়ের নেতৃত্বে পার্টি কর্মীদের নিয়ে মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন, তাদের মিছিল স্থগিত হওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। তখন আমাদের পার্টি কর্মীরা ফিরে যান।

আগরপাড়া জুটমিলে এ আই সি সি টি ইউ অনুমোদিত ‘বেঙ্গল চটকল মজদুর ফোরাম’ - এর সম্পাদক মাজাহার খান সহ অজয় রায় সি আই টি ইউ এবং অমল সেন এ আই ইউ টি ইউ সি নেতাদেরকে টি এম সি গুন্ডারা মাইক লাগিয়ে হুমকি দেয় তাদেরকে কারখানা ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে হবে ও নিজেদের কাজে যোগ দিতে হবে। নেতারা কাজে যোগ না দিলে আগামীকাল থেকে এই নেতাদের চিরকালের জন্য মিল গেট বন্ধ থাকবে। কিন্তু হুমকির পরোয়া না করে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে গেছেন।

ধর্মঘটি শ্রমিক এবং নেতাদের লাল সেলাম জানিয়েছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন বেলঘরিয়া আঞ্চলিক কমিটি।

উত্তর ২৪ পরগণায় মোট জুটমিল সংখ্যা ছিল ২৫, বর্তমানে সংখ্যা ২১টি। মেঘনা জুটমিল ৫০% কম হাজিরা নিয়ে চালু ছিল। এই মিলটি তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং-র বিশেষ নজরদারিতে চলে। বাকি ২০ টা মিলে শ্রমিকরা শাসক দলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সার্বিকভাবে ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে প্রায় ১ লক্ষ জুটমিল শ্রমিক ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন।

চটকল শ্রমিকদের লাল সেলাম জানায় বেঙ্গল চটকল মজদুর ফোরাম

খণ্ড-26
সংখ্যা-2