এআইসিসিটিইউ-র দিল্লী রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ২৯ অক্টোবর এক প্রেস বিবৃতিতে জানান—এসমা জারি এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা সত্বেও ২৯ অক্টোবরের ডাকা ধর্মঘটে শ্রমিকদের পরাক্রমী সাড়া।
এআইসিসিটিইউ অনুমোদিত ডিটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের ডাকা একদিনের কর্মবিরতি এবং এই কর্মবিরতিকে এআইটিইউসি অনুমোদিত ডিটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এবং আইএনটিইউসি অনুমোদিত ডিটিসি এমপ্লয়ীজ কংগ্রেসের সমর্থন দিল্লী ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের নিয়মিত কাজকে অচল করে দিয়েছে। ১১ হাজারেরও বেশি চুক্তি কর্মী এবং কয়েক হাজার স্থায়ী কর্মী ধর্মঘট পালন করেন, যার ফলে সমগ্র শহরে তার প্রভাব পড়েছে। শেষমুহূর্তে কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দিতে সরকার একটি সার্কুলার জারি করে, এর আগে ডিটিসি ম্যানেজমেন্ট যে মজুরি হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা ফিরিয়ে নিয়ে আগের মজুরি পুনর্বহাল রাখে। ডিটিসি-র কর্মীরা এই মজুরি হ্রাসের সিদ্ধান্তে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাই এটি তাদের যথার্থই একটি বিরাট জয়। যাই হোক, এআইসিসিটিইউ এবং ডিটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার মনে করে যে সরকার গণআন্দোলনের ওপর এসমা জারি করে যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তা তাদের পরিত্যাগ করে অবিলম্বে তাদের “সম কাজে সম বেতন”, “চুক্তি শ্রমিকদের নিয়মিতকরণ”, “ডিটিসি পরিবহনে নতুন বাসের সংযুক্তি” ইত্যাদি অন্যান্য দাবিগুলি নিয়ে কর্মী ইউনিয়নগুলির সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসা উচিত। ডিটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক রাজেশ বলেন “শ্রমিকদের যতটুকু গণতান্ত্রিক অধিকার আছে তাকে খর্ব করার জন্যেই সরকার এবং পরিচালন কর্তৃপক্ষ এসমা জারি করার বা কার্যকর করার বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। দিল্লি সরকারের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করেছে যে তারা হরিয়ানাতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি সরকারের সমগোত্রীয় হয়ে যেতে সতত ইচ্ছুক। আমরা এ ধরনের অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাধ্য।”
ডিটিসির কর্মচারীদের হরতালে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর অভূতপূর্ব সাড়া।
একমাত্র ভারতীয় মজদুর সংঘ (বিএমএস) ছাড়া আর সমস্ত কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এই হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে। বিভিন্ন কর্মী ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা সারাদিন ধরেই ধর্মঘটী শ্রমিকদের সংহতি জানাতে এসেছেন। ডিটিসির অন্যান্য ডিপোগুলিতে পিকেটিং করার সময় বেশকিছু ইউনিয়নের নেতাকে আটকে রাখা হয় বা গ্রেফতার করা হয়। ডিটিসির কার্যকরী সভাপতি এআইসিসিটিইউ-র কমরেড প্রেমপাল চৌতালাকে উত্তর দিল্লীতে আটকে রাখা হয়, ডিটিসির সহ-সভাপতি এআইসিসিটিইউ-র শ্রীরামন তৎসহ সিটু-র ছোটেলাল ও হরিলালকে পশ্চিম দিল্লীতে বাস ডিপোর সামনে পিকেটিং করার জন্যে হরিনগর থানায় আটকে রাখা হয়। দিল্লী এইচএমএস-এর সচিব রাজেন্দ্র, ডিটিসির সাধারণ সম্পাদক এবং এআইসিসিটিইউ-র মহাবীর ত্যাগী, ডিটিসির আহ্বায়ক এআইসিসিটিইউ-র রাজারাম ত্যাগী এবং সিটুর এইচ পি পন্থ বিভিন্ন বাস ডিপোতে উপস্থিত ছিলেন। এআইসিসিটিইউ-র দিল্লী শাখার সভাপতি সন্তোষ রায় যে সমস্ত ইউনিয়ন এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান, তিনি বলেন খুব শীঘ্রই ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করতে যৌথ বৈঠক ডাকা হবে।
শ্রমিকরা এটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে এসমা বা অন্য নিপীড়নমূলক যে ব্যবস্থা নেওয়া হোক না কেন অধিকারের জন্যে লড়াই জারি থাকছে।
হরিয়ানার বিজেপি সরকারের হরিয়ানা রোডওয়েজের বেসরকারীকরণের উদ্যোগের প্রতিবাদে হরিয়ানা রোডওয়েজের কর্মীরা ধর্মঘটের ডাক দেয় এবং একটি বাস ডিপোতে জড়ো হয়। বিজেপি সরকার ধর্মঘটী শ্রমিকদের ওপর এসমা জারি করে ,ঠিক দিল্লির আপ সরকার ডিটিসি কর্মীদের ওপর যা করেছিল। দিল্লির এআইসিসিটিইউ সভাপতি সন্তোষ রায় জানালেন, “ডিটিসির কর্মীদের অবস্থা অতিশয় শোচনীয়। ডিটিসি এর স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো নতুন বাস নেই, দূষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে।আমরা সরকারের কাছে খুব স্পষ্ঠ করে বলতে চাই যে শ্রমিকদের দ্বারা উত্থাপিত দাবিগুলি সাধারণ জনগণের সমস্যাও। সরকার যদি এই দাবিগুলিকে উপেক্ষা করে তবে সে নিজের বিপদকেও উপেক্ষা করবে।”
এই লড়াইকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে এআইসিসিটিইউ দিল্লী ট্রান্সপোর্টের কর্মীদের অভিনন্দিত করছে পাশাপাশি দিল্লির নাগরিকবৃন্দ সহ আরো বহু মানুষ যেমন বেজওয়াদা উইলসন সাফাই কর্মচারী আন্দোলন এবং ডুটার পক্ষে রাজীব রায় যারা ডিটিসি কর্মীদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকেও এআইসিসিটিইউ-র পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।