মে দিবস উদযাপন
may-day-celebration_0may-day-celebration_1

১ মে জেলা সদর চুঁচুড়ার বাস টার্মিনাসে এআইসিসিটিইউ-র সদস্য পরিবহন শ্রমিকরা সকালে লাল পতাকা উত্তোলন করে অন্যান্য শ্রমিকদের সকলকে মে দিবসের ব্যাজ পরান। রিষড়ার জয়শ্রী টেক্সটাইল কারখানার গেটে এআইসিসিটিইউ-র তরফ থেকে পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণ করা হয়, উপস্থিত ছিলেন বেশ ভালো সংখ্যক শ্রমিক, যাঁদের অধিকাংশই তরুণ। যেভাবে মোদী সরকার নতুন শ্রমকোড এনে শ্রমিকদের সুরক্ষিত জীবিকা, ইউনিয়ন করার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে তাতে এই বিজেপি আবার ক্ষমতায় ফিরলে এনআরসি করে নাগরিকত্বটাই আর রাখবেনা, তাই এবারের মে দিবসে শপথ হোক ‘বিজেপি হারাও’ -- এ’বিষয়ে আলোচনা হয়। কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন কমরেড অজয় মিশ্র, শ্যাম সিং সহ অন্যান্য সাথীরা। ভদ্রেশ্বর শিল্পাঞ্চলে অ্যাঙ্গাস জুট মিল গেটে পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন শ্রমিক সাথীরা, অসুস্থ শরীরেও উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেন কমরেড সুদর্শন প্রসাদ সিং। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এআইসিসিটিইউ জেলা সম্পাদক কমরেড বটকৃষ্ণ দাস ও পার্টির জেলা সম্পাদক কমরেড প্রবীর হালদার। এখানে জুট শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় ধরে কারখানা সংলগ্ন মহল্লায় শ্রমজীবী মানুষকে ব্যাজ পরান। নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে হিন্দমোটর ইটখোলা মোড়ে মে দিবসের পতাকা উত্তোলন ও হে মার্কেটের শহীদদের স্মরণ করে ‘বিজেপি হারাও’ স্লোগান ওঠে, স্থানীয় রিকশা স্ট্যান্ডের চালক সাথীদেরকেও ব্যাজ পরানো হয়। ব্যান্ডেল নেতাজি পার্কে কমরেড ভিয়েত ব্যানার্জি ও সুদর্শন বসুর নেতৃত্বে অন্যান্য কমরেডরা শহীদ স্মরণের পাশাপাশি পথচলতি মানুষকে মে দিবসের ব্যাজ পরান এবং ‘বিজেপি হারাও, দেশ বাঁচাও’ প্রচারপত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলি করেন, মতবিনিময় করেন।

গ্রামাঞ্চলে পাণ্ডুয়ার সাঁচিতাড়া পার্টি ব্রাঞ্চে পতাকা উত্তোলন করেন বর্ষীয়ান ক্ষেতমজুর কমরেড গৌড় বাউলদাস, শহীদদের স্মরণ করা হয়। বৈঁচিতে পার্টি কার্যালয়ে মে দিবস পালন করা হয়, যেখানে পার্টির বর্ষীয়ান নেতৃত্বকারী সাথীরা উপস্থিত ছিলেন। পোলবা-দাদপুরের কোচোয়ান মোড় এলাকায় ঘরোয়া বৈঠকের মধ্য দিয়ে মে দিবস পালন করেন হুগলি জেলার রন্ধন কর্মী ইউনিয়নের সাথীরা যেখানে সংখ্যালঘু, দলিত ও আদিবাসী মহিলাদের উপস্থিতি ছিল সিংহভাগ। মে দিবসের তাৎপর্যনিয়ে আলোচনা করেন কমরেড চৈতালি সেন। পার্টির ধনেখালি- পোলবা-দাদপুর এরিয়া কমিটি অফিসেও মে দিবস পালিত হয়। মে দিবসের পতাকা উত্তোলন করেন কমরেড শুভাশীষ চ্যাটার্জি।

may-day-celebration_s-24-pgs

may-day-celebration_2
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট বিজেপিকে দেশব্যাপী পরাজিত করার জন্য ইন্ডিয়া জোট গড়ে প্রচার আন্দোলন চলছে। একই সাথে পঃ বাংলায় বিজেপি হারাও দেশ বাঁচাও এই শিরোনামে লাগাতার প্রচার চলছে। এই প্রচারের অঙ্গ হিসাবে সিপিআই(এম-এল) লিবারেশন ও এআইসিসিটিইউ বিষ্ণুপুরসাতগাছিয়া লোকাল কমিটির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস ১ লা মে বাখরাহাটের বুড়িরপোল মোড়ে সভার আয়োজন করেন। এই সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা সম্পাদক কিশোর সরকার, জেলা সদস্য দিলীপ পাল, নবকুমার বিশ্বাস, শুভদীপ পাল প্রমুখ। ছোট ছোট বক্তব্য রাখার মধ্য দিয়ে সমগ্র সভাটি পরিচালনা করেন লোকাল কমিটির সদস্য স্মৃতিময় মাইতি।

এছাড়াও হরিহরপুর লাঙ্গলবেড়িয়া রিক্সা ইউনিয়ন বারুইপুরের পেটোর মোড়ে রিক্সা স্ট্যান্ডে মে দিবস উদযাপন করে। নেতৃত্ব দেন স্বপন ব্যানার্জি, মনসুর আলি ও শিশির চ্যাটার্জি।

বজবজের পার্টি জেলা অফিসে সুসজ্জিতভাবে মে দিবস পালিত হয়। এই কর্মসূচিতে অংশ নেন তেল কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক, চটকল শ্রমিক, অসংগঠিত শ্রমিক ও শ্রমজীবী মহিলারা।

may-day-celebration_raiganj

may-day-celebration_3
সারা দেশের সাথে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের চন্ডীতলাতে আন্তর্জাতিক মে- দিবস পালিত হল। পতাকা উত্তোলন করেন এআইসিসিটিইউ জেলা সম্পাদক গনেশ সরকার। শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন পার্টির জেলা সম্পাদক ব্রজেন সরকার। এছাড়া শহীদদের স্মরণ করেন যথাক্রমে কমরেড খগেন্দ্র নাথ রায়, দুলাল পাল, সিদ্দিক আলি, মানোয়ার হুসেন, ননীগোপাল দেবনাথ, নিতাই রায়, রুবিনা সোরেন সহ উপস্থিত সদস্যবৃন্দ। এখানে মে-দিবসের তাৎপর্যব্যাখ্যা রাখেন গনেশ সরকার। তিনি মোদী সরকারের শ্রম কোড নিয়ে তার ফ্যাসিস্ট চরিত্র তুলে ধরার সাথেই মমতা সরকারের শ্রমিকবিরোধী ভূমিকাকে ব্যাখ্যা করেন।

দ্বিতীয় অনুষ্ঠানটি হয় পঃবঃ রাজ্য সরকারী কর্মচারী দপ্তরে। এখানে মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর একমিনিট নিরবতা পালন করে দ্বিতীয় কার্যসূচী আজীবন বামপন্থী ৮৪-বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মী এবং এআইসিসিটিইউ এর ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা কমরেড শান্তি কিশোর শুর এর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন পার্টির বর্ষীয়ান কমরেড মানব ভৌমিক। সমিতির দপ্তরে আয়োজিত এই সভাতে তিল ধারনের জায়গা ছিলনা। তাঁর জীবিত সহকর্মীরা সহ পুত্র- পুত্রবধু ও প্রপৌত্র বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। শেষ লগ্নে সভাপতি সরকারী কর্মচারী হয়েও কীভাবে সরকারের শ্রমিক বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তোলা ও তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অতীত এবং বর্তমান নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা রাখেন এবং ফ্যাসিস্ট শক্তিকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তার ওপরে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সভা শেষ হয়।

খণ্ড-31
সংখ্যা-17