মাফিয়া (মোদী কা) পরিবার ও বিপুল অর্থনৈতিক বৈষম্য
economic-inequality

যেদিন প্রথমে ‘মোদী কা পরিবার’ কথাটা শুনলাম, মনে হল, কোথায় জানি এরকম রক্তের সম্পর্ক ছাড়া বৃহৎ পরিবারের কথা শুনেছি, যেখানে সকলে পরিবারের কর্তার কাছে কায়মনোবাক্যে একনিষ্ঠ থাকে, সে কর্তা যে দুষ্কর্মই করুক না কেন। ভাবতে ভাবতে ‘গডফাদার’ চলচ্চিত্রের কথা মনে পড়ল। হ্যাঁ, সেখানেই তো মাফিয়াদের সমস্ত সাঙ্গোপাঙ্গকে মাফিয়া পরিবারের সদস্য বলা হত। যদিও মাফিয়া কর্তা তাদের অধিকাংশকেই চিনত না। মাফিয়ারাও তাদের সাম্রাজ্য তৈরি করত আইনের চোখে ধুলো দিয়ে, আইন বাঁচিয়ে, আইনকে প্রভাবিত করে। এখনেও যেমন মোদী রাজত্বের বিস্তার ঘটছে নির্বাচনী বন্ডের টাকায়, সমবায় দুর্নীতি, বিমান দুর্নীতি, আবাসন দুর্নীতি, কয়লা দুর্নীতির মাফিয়াদের আশ্রয় দিয়ে।

দেশজোড়া অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা বলতে গিয়ে যে মাফিয়া পরিবারের কথা বলতে হচ্ছে তা ধান ভাঙতে শিবের গীতের মত শোনালেও সে দুটি যে মোটেই একে অপরের সম্পর্করহিত নয় তা খানিক পরেই বোঝা যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের অর্থনৈতিক বৈষম্য বিষয়ে যে সকল প্রতিবেদন এসেছে তার প্রত্যেকটিই এ’দেশের নিম্ন আয়ের নাগরিকদের সম্পর্কে এক দুর্বিষহ অবস্থান নির্দেশ করেছে। বিজেপির মত ভোটের জন্য কেবল মিথ্যে কথার চাষ করা উচিত হবে না। গত দুই দশকে সারা পৃথিবীতেই দারিদ্র কমেছে, অন্তত পরিসংখ্যানে। ভারত তার বাইরে নেই। ১৯৮১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় চরম দারিদ্রের মধ্যে থাকা জনসংখ্যার হার ৫৮ শতাংশ থেকে কমে ৯ শতাংশ হয়েছে। পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় তা ৮৩ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে নেমে এসেছে। ওই সময়কালে চরম দারিদ্রের আওতায় থাকা জনসংখ্যার অনুপাত ভারতে ৬০ শতাংশের বেশি থেকে কমে ১০ শতাংশে পৌঁছেছিল, চিনে তা ১৯৮১ সালে প্রায় ৯০ শতাংশ থেকে কমে ২০১৯ সালে নগণ্যে উপনীত হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতে দারিদ্রের হার সব থেকে দ্রুত হ্রাস পেয়েছে ২০০৬ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে। বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচকের পরিমাপে ২০২১এ ভারতের ১৫ শতাংশের থেকে খানিক বেশি, ২২ কোটি মানুষ দরিদ্র। (ভারত দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ, চিন পূর্ব এশিয়ার। চরম দরিদ্র বলতে দৈনন্দিন ২.১৫ ডলার মাথাপিছু আয়ের নীচে থাকা মানুষদের বোঝায়। বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচক বলতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মানের ভিত্তিতে গঠিত সূচককে বোঝায়)। ২০২১ সালে সমগ্র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচকের ভিত্তিতে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ দরিদ্র ছিল, তার মধ্যে ২২ কোটি (৪৪ শতাংশই) ভারতে। ফলে ভারতের দারিদ্রের পরিসংখ্যান নিয়ে গর্ব করার মত তেমন কিছুই নেই, যদিও সমগ্র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় দারিদ্র দ্রুত কমছে, ভারতেও কমছে। (প্রসঙ্গত, উপরের তথ্যগুলি ২০২৪ সালের ইউএনডিপি’র ২০২৪ সালের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের থেকে পাওয়া গেছে।)

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ল্যাবের প্রতিবেদন অনুসারে ২০২২-২৩ সালে ভারতে আয়বৈষম্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যা ভয়ঙ্কর। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী যদি ভারতের দারিদ্র টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা যায় তাহলে যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় তা উপরের ভারতীয় দারিদ্রের যে ১৫ শতাংশ অনুপাতকে নস্যাৎ করে দেবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ল্যাবের প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে দারিদ্র পরিমাপ করলে দেখা যায় যে, নিম্ন আয়ের অন্তর্ভুক্ত ৫০ শতাংশের অধিকাংশই দারিদ্র সীমার নীচে অবস্থান করে (পরিশিষ্ট দেখুন)।

স্বাধীনতার সময় থেকেই ভারতে আয় ও সম্পদ বৈষম্য ছিল। উচ্চ আয় সম্পন্ন ১০ শতাংশের আয় ছিল দেশের সামগ্রিক আয়ের ৩৫.২ শতাংশ (উপরের ১ শতাংশ আয় করত ১১.৭ শতাংশ), নীচের ৫০ শতাংশের ভাগ ছিল ২১.৯ শতাংশ। মধ্যের ৪০ শতাংশ আয় করত ৪২.৯ শতাংশ। ১৯৮১ সাল নাগাদ উচ্চ আয় সম্পন্ন ১০ শতাংশের আয় ছিল দেশের সামগ্রিক আয়ের ৩১.৬ শতাংশ (উপরের ১ শতাংশ আয় করত ৬.৭ শতাংশ), নীচের ৫০ শতাংশের ভাগ ছিল ২১.৪ শতাংশ। মধ্যের ৪০ শতাংশ আয় করত ৪৭ শতাংশ। অর্থাৎ জাতীয় অর্থনীতিতে অতি উচ্চ আয়ের মানুষের ভাগ কমেছিল, বেড়েছিল মধ্যবিত্তের ভাগ। বৈষম্য বাড়তে বাড়তে ২০১৪ সাল নাগাদ উচ্চ আয় সম্পন্ন ১০ শতাংশের আয় ছিল দেশের সামগ্রিক আয়ের ৫৭.১ শতাংশ (উপরের ১ শতাংশ আয় করত ২১.৭ শতাংশ), নীচের ৫০ শতাংশের ভাগ ছিল ১৩.১ শতাংশ। মধ্যের ৪০ শতাংশ আয় করত ২৯.৮ শতাংশ। ফলে দেশের অর্থনীতির যে উন্নয়নের কথা বলা হত তার লাভ অতি ধনীদের হাতেই জমা হচ্ছিল। ২০২২- ২৩ সালে সেই আয় বৈষম্য কমে তো নিই বরং আরো বেড়েছে। মধ্যবিত্তদের অর্থাৎ মাঝের ৪০ শতাংশের অনুপাত কমে ২৭.৩ শতাংশ হয়েছে, উপরের ১০ শতাংশের আয়ের অনুপাত হয়েছে ৫৭.৭ শতাংশ। কেবল তাই নয়, তার মধ্যে থাকা অতি অতি উচ্চ ধনীদের আয়ের অনুপাত হয়েছে ২২.৭ শতাংশ। নীচের ৫০ শতাংশের অনুপাত ১৫ শতাংশ হয়েছে। লক্ষ্যণীয় যে মধ্যবিত্তরা ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, অন্তত আপেক্ষিক ভাবে। কিন্তু রাজনীতির কারিগররা এমন ঢাক পেটায় যেন, মধ্যবিত্তরাই অর্থনৈতিক নীতির ফলে সব থেকে বেশি লাভবান হয়েছে। আদতে সেই লাভ হয়েছে উপরের ১০ শতাংশের মধ্যে থাকা জনতার, যাদের গড় আয় পরিবার পিছু বার্ষিক ৫০ লক্ষ টাকার বেশি।

সম্পদের হিসেবে এই বৈষম্য আরো গভীর। ১৯৮১ সালে ধনী ১০ শতাংশের সম্পদ ছিল দেশের মোট সম্পদের ৪৫ শতাংশ (সর্বোচ্চ ১ শতাংশের ছিল ১২.৫ শতাংশ)। মাঝের ৪০ শতাংশের কাছে ছিল ৪৫ শতাংশ, নীচের ৫০ শতাংশের কাছে মাত্র ১০ শতাংশ। ২০১৪ সালে ওই সংখ্যাগুলি শতাংশের হিসেবে দাঁড়িয়েছিল ৬৩.৯ (৩১.৭), ৩০ ও ৬.১। ২০২২- ২৩ সালে ধনী ১০ শতাংশের সম্পদ ছিল দেশের মোট সম্পদের ৬৫ শতাংশ (সর্বোচ্চ ১ শতাংশের ছিল ৪০.১ শতাংশ)। মাঝের ৪০ শতাংশের কাছে ছিল ২৮.৬ শতাংশ, নীচের ৫০ শতাংশের কাছে মাত্র ৬.৪ শতাংশ।

অন্যরকম ভাবে বললে ধনী ৯,২২৩ জন গড়ে বার্ষিক আয় করে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা, নীচের ৯২ কোটির বেশি মানুষ গড়ে বার্ষিক আয় করে ৭১ হাজার টাকার সামান্য বেশি, যা প্রথমোক্তদের তুলনায় প্রায় ৭ হাজার ভাগে ১ ভাগ। ভারতের অতি অতি অতি অতি ধনী ২১ জন পূর্ণবয়স্ক নাগরিকের কাছে প্রায় ৮০ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ আছে যা দেশের ৭০ কোটি নিম্ন সম্পদশালী মানুষের কাছে থাকা মোট সম্পদের থেকে বেশি। অতি অতি অতি ধনী ৯২২৩ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের কাছে থাকা গড় সম্পদের পরিমাণ ২২৬১ কোটি টাকার বেশি। অন্যদিকে নীচের ৪৬ কোটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের গড় সম্পদ তার ১ লক্ষ ভাগের ১ ভাগের থেকেও কম। অতি ধনী পূর্ণবয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা ৯২ লক্ষ ২৩ হাজার যাদের গড় সম্পদ ৫ কোটি টাকার বেশি। যাদের তুলনায় নীচের ৪৬ কোটি ১১ লক্ষ ৭২ হাজার পূর্ণবয়স্ক নাগরিকের গড় সম্পদের অনুপাত ১ হাজার ভাগের ৩ ভাগ। ধনী ১০ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক নাগরিকের গড় সম্পদ ৪৬ কোটির বেশি, পূর্ণবয়স্ক নাগরিকের গড় সম্পদের ৬৫ গুণ।

যে অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে গত ৩ দশক ধরে, তা ক্রমাগত সম্পদের বৈষম্যকে বাড়িয়ে তুলেছে। আয়ের বৈষম্যও বাড়ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের সঞ্চয় করে সম্পদ বৃদ্ধির ক্ষমতাই নেই। উচ্চ আয়ের ধনীরা আয়ের বিপুল অংশ সঞ্চয় করে বিলাস বহুল জীবনযাপনের পরেও। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্পদশালী তাই ১৩০০ কোটি টাকা খরচ করেন তাঁর সন্তানের প্রাক বিবাহ অনুষ্ঠানে, যা উপরে আলোচিত ৫০ শতাংশ নিম্ন আয়বর্গের গড় আয়সম্পন্ন প্রায় ২ লক্ষ বয়স্ক মানুষের সামগ্রিক বার্ষিক আয়ের সমান। পাত্রের মা’য়ের নেকলেসের দাম ৪১৫ কোটি টাকা, যা ৫০ শতাংশ নিম্ন সম্পদশালীর গড় সম্পদ সম্পন্ন ২৫ হাজার ব্যক্তির সামগ্রিক সম্পদের সমান।

প্রশ্ন হচ্ছে এই অপরিসীম অসাম্যকে সহ্য করা হবে না দূর করার জন্য নীতি গ্রহণ করা হবে। এই বৈষম্য যেমন সমাজে গরিব মানুষদের অমর্যাদার জীবনে ঠেলে দিচ্ছে যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলছেন আমি ৮০ কোটি মানুষকে বিনে পয়সায় আনাজ দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছি তাই আমাকে ভোট দাও; মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বাড়িয়েছি তাই ভোট দাও এ’রকম সব কথা, তেমনি এই বৈষম্য অসাম্য বজায় রাখার জন্য অস্ত্র হিসেবে কাজ করে। প্রভূত বিত্তবানের ঘরে জন্ম হওয়া সন্তান বিত্তহীনের তুলনায় কয়েক লক্ষ যোজন পিছিয়ে দৌড় শুরু করে। জাতপাতে বিভক্ত ভারতীয় সমাজ বর্ণের আধারেই নিম্ন বর্ণের জন্য প্রতিকূলতা সৃষ্টি করেছে তার সঙ্গে আর্থিক বৈষম্য যুক্ত হয়ে পুরো বৈষম্যের ব্যবস্থাকে আরো শক্তপোক্ত করে। তাই সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে উচ্চবর্ণের মানুষজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলে, তারাই এই বৈষম্যকে সমর্থন করে, বৈষম্য কমানোর জন্য কোনো ধরণের পুনর্বন্টনের কথা উঠলেই সেই পুনর্বন্টন কত ক্ষতিকর তার তত্ত্ব তৈরি করে।

অপরদিকে যে মাফিয়ারাজ দিয়ে মাফিয়া পরিবার দিয়ে কথাটা শুরু করেছিলাম সেই মাফিয়ারাজও পাকাপোক্ত হতে থাকে। আপাতভাবে গণতন্ত্রের আবরণ থাকলেও অর্থবানের হাতে ক্ষমতার চাবিকাঠি চলে যায়। নির্বাচনী বন্ডের মত দুর্নীতিময় বন্দোবস্ত চালু হয়। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলে জ্ঞাত প্রচার মাধ্যম অনায়াসে চলে যায় ওই কতিপয় অতি অতি অতি অতি ধনীদের খপ্পরে। তাদের পছন্দ ও সুবিধে মত খবর প্রচারিত হয়। অতি অতি অতি অতি ধনীদের অন্যায়গুলিকে আইনসম্মত করে তোলার আইন তৈরি হয়। ফলে তারা আইন সম্মতভাবে দুর্নীতি করে আরো সম্পদ জমাতে পারে। যারা তাদের জন্য তেমন আইন প্রণয়ন করবে তাদের তহবিলে প্রভূত অর্থদিয়ে, নিজস্ব প্রচার মাধ্যমে তাদের হয়ে প্রচার করে ক্ষমতার গদিতে তাদের বসাতে বা টিকিয়ে রাখতে চাইবে। দেশের শাসন অলিগার্কিক বা গোষ্ঠীশাসনে রূপান্তরিত হবে। প্রকারান্তরে মাফিয়া পরিবার দ্বারাই দেশ শাসন হবে। এদেশে তেমনটাই খানিকটা হয়েছে। বাকিটা হওয়ার জন্য মোদীজি ও তার মাফিয়া পরিবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

যদি গণতন্ত্রকে সত্যিই টিকিয়ে রাখতে হয়, যদি গণতন্ত্রকে পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত করতে হয় তাহলে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য নীতি প্রণয়নে সরকারকে বাধ্য করার জন্য লড়াই চালানো আবশ্যিক।

(পরিশিষ্ট: ২০২৪ সালের ইউএনডিপি’র ২০২৪ সালের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের থেকে ভারতের দারিদ্র সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া হয়েছে। সেখানে চরম দারিদ্রের উপরে থাকার জন্য ক্রয়মূল্যে সমতার নিরিখে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি বা পিপিপি) অন্তত মাথাপিছু ২.১৫ ডলার আয় ধরা হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে ৫২.১৪ টাকা (১ ডলার = ২৪.২৫ টাকা ধরে) মত। ভারতের পরিবারের গড় আয়তন ৪.৪৪ জন। যদিও নিম্ন আয়ের মানুষজনের পরিবারের আয়তন বেশি হয়, তবুও ওই গড়কেই পরিবারের আয়তন হিসেবে ধরলে বার্ষিক দারিদ্র সীমা দাঁড়ায় ৩৬৫ (দিন) x ৪.৪৪ (জন) x ৫২.১৪ টাকা = ৮৪,৫০০ টাকা। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ল্যাবের প্রতিবেদন অনুসারে ২০২২-২৩ সালে ভারতে সর্বনিম্ন আয়ের ৫০ শতাংশ বয়স্ক মানুষের সংখ্যা ৪৬,১১,৭২,৪১৬ ও তাদের গড় মাথাপিছু আয় ৭১,১৬৩। ফলে ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মোট আয় ৪৬,১১,৭২,৪১৬ x ৭১,১৬৩ টাকা = ৩,২৮,১৮,৪১,২৬,৩৯,৮০৮ টাকা। ওই ৫০ শতাংশ মানুষের পরিবারের জনসংখ্যা দেশের ৫০ শতাংশ ধরা যেতে পারে (যদিও গরিবদের জনসংখ্যা বেশি হয়, তাও রক্ষণশীল ভাবেই ধরা হল) ফলে নীচের দিকের আয়ের ৬৭ কোটি মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৪৮,৯৮২ টাকা, ধরা যাক ৪৯,০০০ টাকা। যা পিপিপি ভিত্তিতে নির্ধারিত দারিদ্র সীমার বার্ষিক মাথাপিছু আয় ৭৫,০০০ টাকার থেকে প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। যা ইঙ্গিত করে যে নিম্ন আয়ের অন্তর্ভুক্ত ৫০ শতাংশের অধিকাংশই দারিদ্র সীমার নীচে অবস্থান করে।)

- অমিত দাশগুপ্ত

খণ্ড-31
সংখ্যা-17