স্বচ্ছভাবে নিযুক্তদের চাকরি বাতিলের বিরুদ্ধে মৌলালিতে প্রতিবাদসভা
against-cancellation-of-jobs

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় পঁচিশ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে কলকাতার মৌলালি মোড়ে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের উদ্যোগে এক সভা হয়। সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রোগ্রেসিভ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অজয় বসাক। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক অমিত দাশগুপ্ত, শিক্ষক সজল অধিকারী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বর্ষা বড়াল, শিক্ষক আনারুল ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামসুল আলম মহাশয়।

সভার মূল দাবিগুলি ছিল,

১) স্বচ্ছভাবে চাকুরিপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে৷

২) শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিগ্রস্তদের কঠোর শাস্তি চাই।

৩) স্বচ্ছভাবেনিযুক্তদের তালিকা এসএসসি, পর্ষদ ও রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে সর্বোচ্চ আদালতের হাতে তুলে দিতে হবে।

৪) শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে বিজেপির নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্তকে ব্যর্থ করুন।

সভা চলাকালীন উপস্থিত দর্শক ও পথচলতি মানুষদের মধ্যে পিটিএবি, আইসা, আর ওয়াই এ কর্তৃক যৌথভাবে প্রকাশিত একটি লিফলেট বিলি করে এই প্রসঙ্গে সংগঠনগুলির বক্তব্য প্রচার করা হয়।

======

jobs-of-transparently-appointed-employeesagainst-cancellation-of-jobs-

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা তাঁদের চাকরি খুইয়েছিলেন। এই অভূতপূর্ব বিপর্যয়কারী রায়দানে মুষড়ে না পড়ে, যোগ্য প্রার্থীরা উপযুক্ত নেতৃত্বে বাংলা জুড়ে বঞ্চিত, অপমানিত শিক্ষকদের সংঘবদ্ধ উদ্যোগে অপদার্থ ও অভিযুক্ত স্কুল সার্ভিস কমিশনের দপ্তরের সামনে একদিকে যেমন তুমুল বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন, তেমনি অন্যদিকে তাঁদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায়সঙ্গত অধিকার ফিরে পেতে হাইকোর্টের অনৈতিক রায়ের বিরুদ্ধে বুক ঠুকে সওয়াল হাজির করতে দ্বিরুক্তি করেননি।

আজ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ হয়েছে। ১৬ জুলাই পরের শুনানি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের রায়ে বলা হয়েছে আইনি ও বেআইনিভাবে চাকরীপ্রাপ্তদের আলাদা তালিকা করা হবে। যাদের বেআইনি কার্যকলাপের সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের আজ থেকে রায় বেরোনো পর্যন্ত বেতন ফেরত দিতে হবে। রায়ে আরো বলা হয়েছে, সুপার নিউমেরারি পদ অনুমোদনের বিষয়ে তদন্তে পূর্বের স্থগিতাদেশ পুনর্বহাল করা হয়েছে।

আমরা সুপ্রিম কোর্টের এই অন্তর্বর্তীকালীন রায়কে স্বাগত জানাই এবং আশা রাখি পরবর্তী শুনানিতে লড়াকু শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা হাইকোর্টের এক শ্রেণীর স্বার্থবাহী আইনজীবীর কুৎসিত উল্লাস, শাসকদলগুলির প্রতিরোধ ও সামাজিক অপমানের ঘেরাবন্দী থেকে নিজেদের মুক্ত করে আবার শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর স্বমর্যাদায় পুনর্নিয়োজিত হবেন। সর্বোচ্চ আদালতের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপে বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও উপযুক্ত পঠনপাঠনের সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসুক — আমরা এমনটাই চাই।

- অভিজিৎ মজুমদার, রাজ্য সম্পাদক,
সিপিআই(এমএল) লিবারেশন

খণ্ড-31
সংখ্যা-17