৩০ মার্চ ২০২৪ সকালে কমিউনিস্ট বিপ্লবী কমরেড ফুলমণি মাণ্ডি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন চিরতরে না ফেরার দেশে। গত চারমাস ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। হুগলীর বলাগড় ব্লকের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের ইছাপুর গ্রামে একাই থাকতেন। নব্বই’এর দশকের মাঝামাঝি যোগ দেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনে। পার্টির বলাগড় ব্লক কমিটির সদস্যা ছিলেন। ছিলেন সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতি ‘আয়ারলা’র বলাগড় ব্লকের নেত্রী। প্রথাগত শিক্ষার বদলে শ্রেণি সংগ্রামের শিক্ষায় নিজেকে গড়েপিটে তুলেছিলেন। নিজে ছিলেন একজন ক্ষেতমজুর। তাই ক্ষেতমজুরের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন আনায়াসে। তাঁদের সামাজিক ন্যায়ের দাবিগুলিকে ধরে খুব সহজে পৌঁছে যেতেন শ্রেণির মানুষের কাছে। গ্রামে বাড়ি বাড়ি প্রচারের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন ক্ষেতমজুর মেহনতি মানুষদের সাথে। তাঁদের সংগঠিত করতেন। ফুলমণি মাণ্ডি হয়ে উঠেছিলেন গ্রামীণ সর্বহারা শ্রেণির কণ্ঠস্বর। পার্টিকে ভালবাসতেন অন্তর দিয়ে। পার্টির যেকোনো কাজে থাকতেন সামনের সরিতে। পার্টির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন। পার্টির ডাকে তিনি গিয়েছিলেন দিল্লী (১০০ দিনের কাজ চালুর দাবিতে), গিয়েছেন পাটনা, রাঁচি, ভুবনেশ্বর ‘আয়ারলা’ জাতীয় সম্মেলনের সমাবেশে। ২০০৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি গ্রামসভায় লড়াই করেছেন। সেই সময় তাঁকে দেখেছিলাম এক অন্য ভূমিকায়। কত সহজে গরিব মানুষের দাবিগুলিকে তুলে ধরছেন একটা ছবির মতো করে। গরিব মানুষ ফুলমানিকে দেখতেন অন্য চোখে। গ্রামের মানুষের কাছে পরিচিত ছিলেন ফুলমণি মাসি। হয়ে উঠেছিলেন একজন কমিউনিস্ট বিপ্লবী।
তাঁর মৃত্যু সর্বহারা শ্রেণির কাছে এক অপূরণীয় ক্ষতি। কমরেড ফুলমণিরা মরে না। রয়ে যায় মেহনতি মানুষের হৃদয়ে, তাঁদের লড়াইয়ের ময়দানে। কমরেড তোমার কাজকে সম্পূর্ণ করার সংকল্প ঘোষণা করছি।
কমরেড ফুলমণি মাণ্ডি অমর রহে।
কমরেড ফুলমণি মাণ্ডি তোমায় জানাই লাল সেলাম।