আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতীয়দের সামনে প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। সিএসডিএস-লোকনীতি’র প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা থেকে এই তথ্যই উঠে এল।
প্রায় সকলেই বলেছেন, গত পাঁচ বছরে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কমে গেছে। আবার, তার হাত ধরে মাথা তুলেছে মূল্যবৃদ্ধি। এই যুগ্ম সমস্যা অধিকাংশ পরিবারের আর্থিক জীবনের মানকে নিচের দিকে নামিয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, আসন্ন নির্বাচনে এই দুটি বিষয় প্রভাব ফেলবে।
সমীক্ষায় ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ মনে করেন, এখন কাজ পাওয়াটা রীতিমতো কঠিন হয়ে গেছে। কর্মহীনতা এতটাই প্রকট যে তা আর গ্রাম-শহরের বিভাজন রেখা মানছে না।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষই জানিয়েছেন, বড় বড় শহরে, ছোট শহরতলীতে, এমনকি গ্রামাঞ্চলেও শোভন কাজ জোগাড় করাটা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, কর্মসংস্থানের বিষয়টিতে লিঙ্গ অসাম্যও বেশ প্রকট। নারীদের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ ক্রমেই কমে আসছে।
সমীক্ষায় ৭১ শতাংশ মানুষ মনে করে, গত পাঁচ বছরে মূল্যবৃদ্ধি অনেক বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধি সমস্ত স্তরের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন গরিব, নিম্ন আয় সম্পন্ন পরিবার এবং প্রান্তিক গ্রামীণ সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা। ব্যাপক সংখ্যক ভারতবাসীর অর্থনৈতিক ভাবে প্রান্তসীমায় চলে যাওয়াটা দেশের আর্থিক অসাম্যকে অনেক চওড়া করে দিয়েছে।
চলমান আর্থিক সংকট নতুন এক মাত্রা পেয়েছে। সমস্ত সামাজিক স্তর মনে করে, বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি তাঁদের আর্থিক জীবনে বড় ধরনের সংকট নিয়ে এসেছে। দলিত, আদিবাসী এবং মুসলিমরা এ’প্রশ্নে অনেক সোচ্চার। ৬৭ শতাংশ মুসলিম জানিয়েছেন, তাঁদের কাজ পাওয়াটা ক্রমেই বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ৭৬ শতাংশ মুসলিম ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে খুব চিন্তিত। সমীক্ষা দেখিয়েছে, তৃণমূলস্তরে আর্থিক প্রশ্নগুলো সামাজিক অবস্থানের আয়নায় বিবেচিত হচ্ছে।
সমীক্ষায় অধিকাংশ মানুষই মনে করেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। ২১ শতাংশ মানুষ মনে করেন বেকারত্বের জন্য কেন্দ্র এবং ১৭ শতাংশ মনে করেন রাজ্য সরকার এরজন্য দায়ী। আর, ৫৭ শতাংশ উভয় সরকারকেই দায়ী করেছেন।