কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলী’র স্মরণসভা
comrade-raghupati-ganguly

আমৃত্যু কমিউনিস্ট তথা সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের অন্যতম সংগঠক কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলী গত ১৬ মার্চ ২০২৪ প্রয়াত হন।

পার্টির পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উদ্যোগে তিনি ছিলেন বালি অঞ্চলের পরিচিত মুখ। কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলী পার্টির হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন দীর্ঘকাল এবং আমৃত্যু ছিলেন বালি-বেলুড় লোকাল কমিটির সদস্য।

আমাদের প্রিয় সাথী প্রয়াত কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলীর অমলিন স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে এবং তার সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে গত ৬ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার বালি আশুতোষ গ্রন্থাগার (তরুণ সংঘ)-এ আয়োজিত হল তাঁর স্মরণসভা।

যদিও এই স্মরণসভা আদতে শপথসভায় পর্যবসিত হল স্বাভাবিকভাবেই। শপথ, প্রিয় কমরেডের স্বপ্নের ভারত গড়ার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার! শপথ, তাঁর জীবনবোধ ও পার্টির প্রতি নিষ্ঠার থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদেরকে শুধরে নেওয়ার! শপথ, তাঁর যুথবদ্ধতার চেতনাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার।

দুপুরের তীব্র দাবদাহ’কে অগ্রাহ্য করে পার্টির বিভিন্ন স্তরের কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে নেতৃত্বরা উপস্থিত হয়েছিলেন। উপস্থিত হয়েছিলেন বালি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথীরা যাদের সাথে নিবিড়ভাবে মিশেছিলেন কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলী। বালি সিনে গিল্ড, বালি উৎসব কমিটি, বালি সাধারণ গ্রন্থাগার কর্মী সংঘ এবং অন্যান্য বিভিন্ন ক্লাব সংগঠন ও ক্রীড়া জগৎের ব্যাক্তিরা। এসেছিলেন বালি অঞ্চলে আমাদের অন্যতম শুভাকাঙ্ক্ষী ও কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলীর বন্ধুপ্রতিম রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট সাহিত্যিক সুনন্দা সিকদার।

এসেছিলেন প্রয়াত কমরেডের পরিবারের ব্যক্তিবর্গ ও তার বোনেরা।

সভার শুরুতে মাল্যদান করেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যনেতা কার্তিক পাল, বাবুদা, দেশব্রতী সম্পাদক অতনু চক্রবর্তী, জেলা সম্পাদক দেবব্রত ভক্ত, আইসা’র জাতীয় সভাপতি নিলাশিস বসু, মহিলা সমিতি তথা পার্টির জেলানেত্রী কল্যাণী গেস্বামী সহ বিভিন্ন সাথীরা। পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও মাল্যদান করেন। মাল্যদান করেন কমঃ রঘুপতি গাঙ্গুলীর সহপাঠী ও পরিবারের ব্যক্তিরা। মাল্যদান শেষে তাঁর স্মৃতিতে নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মূল স্মরণসভা।

প্রথমেই পার্টির হাওড়া জেলা কমিটির পক্ষ থেকে একটি স্মরণিকা পাঠ করেন জেলা সম্পাদক দেবব্রত ভক্ত।

উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিশিষ্ট গণসঙ্গীত শিল্পী ও কবিয়াল কমরেড নীতীশ রায়। এরপরেই পার্টি, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের স্মৃতিচারণায় তুলে ধরেন কমঃ রঘুপতি গাঙ্গুলীর জীবনের নানান অজানা অধ্যায়।

এই সামগ্রিক আলাপচারিতায় শ্রোতাদের কাছে মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল কমঃ রঘুপতি গাঙ্গুলীর পার্টি জীবন ও তাঁর সামাজিক সাংস্কৃতিক জীবন। মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল মিছিলে কমরেডের দেওয়া স্লোগান এবং তাঁর নাট্যমঞ্চের সংলাপ।

এমনই সেতু ছিলেন কমঃ রঘুপতি গাঙ্গুলী!

জলে যেমন মাছ মিশে থাকে, কমিউনিস্ট নকশালপন্থী রঘুপতি গাঙ্গুলী সেরকমই মিশে থাকতেন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের সাথে।

বালির সংযোগ ও ইঙ্গিত সাংস্কৃতিক সংস্থার সাথীরা পরিবেশন করেন গণসঙ্গীত এবং শেষে আন্তর্জাতিকের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় স্মরণসভা। যদিও এক নতুন অধ্যায় শুরুর শপথ নিয়ে পথচলা শুরু তবুও আমরা জানি কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলী অমর হয়ে থাকবেন আমাদের প্রত্যেকটি মিছিলে, প্রত্যেকটি স্লোগানে।

কমরেড রঘুপতি গাঙ্গুলী লাল সেলাম।

খণ্ড-31
সংখ্যা-13