আচার, বিচার, আইন: স্তব্ধ জীবন ও জীবিকা
stagnant-life-and-livelihood

একজন ফরাসী দার্শনিক বলেছিলেন, হোয়েন অর্ডার ইজ ইনজাস্টিস দেন ডিসঅর্ডার ইজ দ্যা বিগিনিং অব জাস্টিস। আমরা ভারতবাসীরা আজ যখন সমস্ত রকমের ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত তখন ঐ দার্শনিকের কথাটাই মনে পড়ছে। 
সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা!

৭৬ বছরের স্বাধীন ভারতবর্ষে স্বাধীন সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার সারবত্তাকে রক্ষা করার দায় আজ যেন জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য কর্মে সচেতনভাবেই পরিত্যাজ্য। আমাদের দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের আচার আচরণ সাধারণ জনমানসে বহু প্রশ্ন চিহ্নকে হাজির করেছে। আমরা দেখলাম নতুন সংসদ ভবনে প্রজাতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রী সেঙ্গল (রাজদণ্ড) হাতে প্রবেশ করলেন, নারকেল ফাটালেন, সাধু-সন্তদের নিয়ে যজ্ঞ করলেন। বহু ধর্মের মানুষের মিলন ভূমি ভারতবর্ষের সংসদ ভবন নির্দিষ্ট ধর্মাচারে জারিত হল! সংবিধানিক সভাকক্ষকে বিশেষ ধর্মের নিজস্ব সম্পদে পরিণত করা হল।

আমরা আবার অবাক হয়ে দেখলাম দেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্র প্রধানরা ২২ জানুয়ারী রাম মন্দির উদ্বোধনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক অভিসন্ধির কাজে ব্যবহার করলেন।

ন্যায় বিচার (জাস্টিস)!

সংবিধানে উল্লিখিত ন্যায় বিচার আজ রাম মন্দিরের তলায় শ্বাসরুদ্ধ। স্বাধীনতার পর এই প্রথম একটা বিচার হল শুধুমাত্র একটি বিশেষ ধর্মের মানুষের বিশ্বাসের ভিত্তিতে। ভারতীয় সাক্ষ্য বিধি (ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট) কার্যকর করা হলো না। এই প্রথম নিদর্শন হয়ে থাকল যে, এই বিচারের লিখিত রায়ে কোনো বিচারকেরই সাক্ষর দেখা গেল না। সংবিধানের ৩৭০ ধারাকে অকার্যকর করার ক্ষেত্রেও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে একতরফাভাবে অমান্য করা হল।

গান্ধীজির ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে “আজাদী কা অমৃত মহোৎসব” পালিত হচ্ছে। “হর ঘর তিরাঙ্গা”-র আহ্বানে যখন আকাশ বাতাস মুখরিত, লাল কেল্লা থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণে শোনা যাচ্ছে “নারী শক্তি”-র কথা, সেই স্বাধীনতা দিবসের দিনই গুজরাটের বিজেপি সরকার গোধরা জেল থেকে মুক্তি দিল ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত ধর্ষক খুনি অপরাধীদের। দেখা গেল ঐ ১১ জন ধর্ষক-খুনিদেরকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কার্যালয়ে মালা দিয়ে বরণ করল। অপরাধীদের সম্বর্ধনা দেওয়া হল। মাথায় তিলক কেটে, গলায় মালা পরিয়ে, মিষ্টিমুখ করানো হল। বিজেপি-র একজন বিধায়ক সি কে রাউলজি (অভিযুক্তদের মুক্তির সুপারিশ যে কমিটি করেছিল তার অন্যতম সদস্য) জানালো “ওরা সকলেই ব্রাহ্মণ সন্তান। ব্রাহ্মণরা খুব সংস্কারী হয়। মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ।” শোনা গেল ব্রাহ্মণ্যবাদীদের নির্লজ্জ অহংকার।

আবার দেখা গেল একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মহিলাদের অধিকার আদায়ের অজুহাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হল। বলা হল এই আইনটি অত্যন্ত জরুরি কারণ এটা সংবিধানের রাষ্ট্রীয় নীতির নির্দেশমূলক নীতির (ডাইরেক্টিভ প্রিন্সিপলস অব স্টেট পলিসি) ৪৪ নাম্বার ধারায় লিপিবদ্ধ আছে। আমরা জানি, সংবিধানে ৩৬ থেকে ৫১ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় নীতির নির্দেশমূলক নীতির ধারা আছে। এর মধ্যে কয়েকটি ধারা উল্লেখ করছি যে ধারাগুলির জন্য আইন প্রবর্তন অত্যন্ত জরুরি হলেও মোদীজির কাছে তাগুরুত্বই পেল না। যেমন –

৩৯ এর (খ) এবং (গ) ধারায় বলা আছে – রাষ্ট্র এমনভাবে তার নীতি পরিচালনা করবে যাতে সর্বসাধারণের হিতার্থে দেশের পার্থিব সম্পদের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ বণ্টিত হয় এবং ধনসম্পদ ও উৎপাদনের উপকরণসমূহ কিছু লোকের হাতে কেন্দ্রীভূত না হয়।

৩৯(ক) ধারায় - স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে ভারতে প্রত্যেক নাগরিকের উপযুক্ত জীবিকা অর্জনের অধিকার।

৩৯ (চ)(ছ) ধারায় বলা আছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার।

৪১ ধারায় কর্মের অধিকার। বেকার অবস্থায়, বার্ধক্যে, অসুস্থতায় ও অভাবে সরকারি সাহায্য পাওয়ার অধিকার।

৪৭ ধারায় বলা আছে - রাষ্ট্র পুষ্টির ও জীবনযাত্রার মানের স্তর উন্নীত করার এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করবে।

৪৩ ধারায় - গ্রামাঞ্চলে ব্যক্তিগত বা সমবায়ের মাধ্যমে কুটির শিল্পের উন্নতি করা। কর্মীদের জীবনযাপনের জন্য উপযুক্ত মজুরি এবং উন্নত জীবনযাত্রার মান যাতে সুনিশ্চিত হয় এমন কাজের অধিকার।

৪৩(ক) ধারায় শিল্প পরিচালনায় কর্মীদের অংশগ্রহণের অধিকার।

এরকম বহু নীতি, আদর্শ, নির্দেশ, অধিকারের কথা রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশ মূলক নীতিতে থাকলেও হঠাৎ করে ৪৪ নাম্বার ধারার বিষয়টিকে এই মুহূর্তে মোদীজির আইনে রূপ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে কিসের তাগিদে?

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ‘নারী শক্তি’-র ‘বন্দনা’ শোনা যাচ্ছে। ভারতবর্ষের নারীদের গড় দৈনিক মজুরি পুরুষ শ্রমিকদের দৈনিক গড় মজুরির প্রায় অর্ধেক। ১৯৭৬ সালে ভারতবর্ষে সম কাজে সম মজুরি আইন তৈরি হয়েছিল। আজও বৈষম্য রয়েই গেছে। কেরলে একজন পুরুষ শ্রমিকের গড় মজুরি ৮৪২ টাকা, সেখানে মহিলা শ্রমিকের গড় মজুরি ৪৩৪ টাকা। পশ্চিম বাংলায় পুরুষ শ্রমিকের গড় মজুরি ৩৪২ টাকা, সেখানে মহিলা শ্রমিকের গড় মজুরি মাত্র ২১৯ টাকা। এমনকি যখন দেশের শ্রমজীবী মানুষের জন্য ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবি উঠল তখন কেন্দ্রের সরকার ফ্লোর লেবেল দৈনিক মজুরি ঘোষণা করল যা মাত্র ১৭৮ টাকা! এই দৈনিক মজুরিতে একটা শ্রমিকের পরিবারের খরচ চলবে? সব চাইতে লজ্জাজনক মহারাষ্ট্রের আখ চাষিদের মধ্যে ৩০ হাজার মহিলা শ্রমিক তাঁদের জরায়ু অপারেশন করে বাদ দিয়েছেন কারণ তাঁরা ঋতুচক্র চলাকালীন অসুস্থতার কারণে কাজে না গেলে মজুরি পাবেন না। এমনকি ২০১৩ সালে মহিলাদের যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে আইন পাশ হলেও আজও তার কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। যার ফল স্বরূপ ভারতবর্ষে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণের মত অপরাধ ক্রমবর্ধমান।

সংবিধানের ভ্রাতৃত্ব বোধ

সাম্প্রদায়িক, জাতি, বর্ণ ঘৃণা আজ মানুষকে উন্মাদে পরিণত করেছে। ধর্মীয় সংখ্যা লঘু হত্যা, দলিতদের হত্যা, জাতি দাঙ্গা এমনকি মহিলাদের উলঙ্গ করে রাস্তায় হাঁটানোর মতো ঘটনা আজ বহু ধর্ম, জাতি, বর্ণের মিলন ভূমি ভারতবর্ষের সংবিধানে উল্লিখিত ‘ভ্রাতৃত্ব’ -র সারবত্তাকে কলঙ্কিত করে চলেছে।

নাগরিকত্ব না বেনাগরিকত্ব!

সিএএ-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উঠে আসছে। খুব স্পষ্টভাবেই ঘোষণা করা হচ্ছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান বা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা সব ধর্মের (হিন্দু, বৌদ্ধ, পার্সী, জৈন, খৃষ্টান) মানুষকেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ বাদে। প্রথমত, ভারতের সংবিধানের ২৫ ও ২৬ ধারায় ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ১৫, ১৬, ২৯, ৩২৫ ধারায় বলা হয়েছে যে, ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকদের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না। তৃতীয়ত, ২৭ ও ২৮ ধারাকে বিশ্লেষণ করলে এই সিদ্ধান্তে আসতে হয় যে, ভারতে কোনো রাষ্ট্রধর্ম নেই; এবং চতুর্থত, ধর্মের প্রসারের জন্য রাষ্ট্র কোনো পৃষ্ঠপোষকতা করে না। ভারতবর্ষের সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও সংবিধান বিরোধী আইনটি পাশ করানো হয়েছে শুধুমাত্র একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে।

আইনের শৃঙ্খল

বৃটিশ আমলের আইন বাতিল করে স্বাধীন দেশের আইন তৈরি করার নামে জনগণের অধিকার খর্ব করে নতুন করে শৃঙ্খলিত করার কৌশল চলছে। আমরা দেখেছি ক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রশ্ন করায় একের পর এক প্রতিষ্ঠিত সমাজকর্মী, আইনজীবী, প্রফেসর, রাজনৈতিক কর্মীদের দানবীয় আইনে (১২৪ এর ক ধারা) আটক করে বছরের পর বছর কারা অন্তরালে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ফাদার স্ট্যান স্বামীকে প্রাতিষ্ঠানিক হত্যা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে ২০২২ সালে ১২৪(ক) ধারায় এফআইআর নিষিদ্ধ করায় নতুন ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ১৫০ নাম্বার ধারা আনা হয়েছে। ‘রাজদ্রোহী’ শব্দটাকে বাতিল করে যে বিষয়গুলিকে এই আইনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে তা আরও মারাত্মক। সেখানে বলা হচ্ছে ‘কেউ যদি উদ্দেশ্যমুলক ভাবে বা জেনেবুঝে, লিখিত শব্দে বা বলার মাধ্যমে, বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বা আর্থিক উপায়ে, বা দৃশ্যমান কোনো আকার ইঙ্গিতে, অথবা অন্য কোনোভাবে, সশস্ত্র বিদ্রোহ বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের ভাবনাকে উৎসাহিত করে বা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করে বা ভারতের সার্বভৌমত্ব বা ঐক্য বা অখন্ডতা বিপন্ন করে বা এরকম কোনো কাজে যুক্ত থাকে তাহলে শাস্তি হবে আজীবন কারাদণ্ড অথবা ৭ বছর পর্যন্ত কারাবাস এবং জরিমানা।’ — এই সকল কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না থাকলেও সরকারের মনে হওয়াটাই শেষ কথা। আগের আইনে ‘আইনত প্রতিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে’ ষড়যন্ত্রমুলক কর্মকান্ড সংক্রান্ত বিষয়ে লেখা ছিল। নতুন আইনে ‘সরকারের প্রশাসনিক বা অন্য কোনো পদক্ষেপের ন্যায্যতার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করা সেই সব মন্তব্য যা এই ধারায় বর্ণিত কার্যকলাপগুলি উস্কে দিয়ে অথবা উস্কানি না দিয়ে আইনসম্মতভাবে সরকারের সেই পদক্ষেপগুলি বদলে দিতে চায়’— এই সবই ঐ নতুন ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত হবে।

বহু চর্চিত কুখ্যাত ইউএপিএ আইনে অপরাধের তালিকার সাথে সংযোজন ঘটিয়ে নতুন ন্যায় সংহিতার ১১১ নাম্বার ধারা নিয়ে আসা হয়েছে। যেমন ‘বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এমন পরিকঠামো নষ্ট করা, অত্যন্ত জরুরি ব্যবস্থাপনাকে ব্যাহত করা, সরকার, বা তার সংস্থাকে ভয় দেখানো, সরকারি অফিসারদের মৃত্যু বা আহত করার সম্ভাবনা তৈরি করা, সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা বা দেশের কাঠামোকে অস্থির করে তোলা’ ইত্যাদির মাধ্যমে ভারতের ঐক্য, অখন্ডতা ও সুরক্ষা বিঘ্নিত করা এই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের আওতায় আনা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে যে কোনো আন্দোলনকে সহজেই সন্ত্রাসবাদী অপরাধের ধারায় দমন কারার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও এমন বহু ধারা এই ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায় এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম সংহিতায় আনা হয়েছে যেখানে ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক অধিকারকগুলিকে একদিকে যেমন খর্ব করা হয়েছে অপরদিকে দেশের কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকারের এবং পরিশেষে দেশের পুলিশের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।

নতুন শ্রম কোড - দাস ব্যবস্থা প্রচলনের হাতিয়ার

বহু ধরনের শ্রম আইনকে সহজ সরল এবং একত্রিত করার নামে চারটে শ্রম কোড চালু করা হল। যার মধ্য দিয়ে মালিক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করা হল এবং শ্রমজীবী মানুষকে নতুনভাবে দাসে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হল।

আমরা জানি ভারতবর্ষের প্রায় পঞ্চাশভাগ মানুষ একবেলার খাবার জোগাড় করতে পারলেও অন্য বেলার খাবার জোগাড় করতে পারবেন কিনা জানেন না। ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে’র তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে বিগত নয় বছরে (মোদী জমানায়) বিশ্বের ১২৫টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১১১ তম। অপরদিকে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা ৬০, নেপাল ৬৯, বাংলাদেশ ৮১ এবং পাকিস্তান ১০২ তম স্থানে এগিয়ে আছে। আগামী পাঁচ বছরে হয়ত ভারতবর্ষ ১২৫ তম স্থানটিই দখল করে (অধঃপতন) নেবে। তবুও মোদী “বিশ্ব গুরু”(?) বলে চলেছেন “সবকা সাথ সবকা বিকাশ”, দেশ এগিয়ে চলেছে। যাইহোক, এই পরিমান দারিদ্রতায় যে দেশ নিমজ্জিত সেখানে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হল। দেশের দারিদ্রতার সমাধান করা, চুক্তিভিত্তিক চাকরির পরিবর্তে স্থায়ী চাকরির সংস্থান করা, ন্যূনতম মজুরি ও সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতিকে হ্রাস করা, দেশের মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বা সাংবিধানিক অধিকার — এই বিষয়গুলি আজ চরম ভাবে অবহেলিত হওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকা স্তব্ধ হয়ে আসছে।

শেষ করব আর একজন সমাজবিজ্ঞানী দার্শনিকের উক্তি দিয়ে ‘পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করাটাই শেষ কথা না, পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটানোটাই আজকের কর্তব্য।’

- দিবাকর ভট্টাচার্য

খণ্ড-31
সংখ্যা-9