আগুনের গ্রাসে ফতুয়া-আজাদ নগর কলোনি: বিজেপি-নীতীশ জোট শাসন ক্ষমতায় ফিরে আসায় স্পর্ধিত হয়ে উঠেছে সাম্প্রদায়িক-মাফিয়া শক্তি
colony-engulfed-in-flames

আশ্রয়হীন দরিদ্র পরিবারগুলো পাটনার ফতুয়া বিধানসভা ক্ষেত্রে ২০ বিঘা বা ৫ একর জায়গায় যে প্রায় ৬০০ কুঁড়েঘর বানিয়েছিলেন, ১০ মার্চ রাতে সেগুলো আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনে পুড়ে অন্তত একজন মারা গেছেন এবং বেশ কয়েকজন শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। যে সমস্ত পরিবারের কাছে এই ৬০০ কুঁড়েঘর ছিল তাদের বাসভূমি, সেই পরিবারগুলোর জীবন ও জীবিকার অত্যাবশ্যকীয় সমস্ত বস্তু পুড়ে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।

সিপিআই(এমএল)-এর ফতুয়া কমিটির নেতৃত্বে ২০২৩-এর নভেম্বরে এই কুঁড়েঘরগুলো তৈরি হয়। জনপ্রিয় সিপিআই(এমএল) নেতা সুরেশ বিন্দ ওরফে আজাদের নামে এই কলোনির নামকরণ করা হয় আজাদ নগর; ১৯৯৮-এর লোকসভা নির্বাচনের দিন নিজের ভোট দেওয়ার পর স্থানীয় সাম্প্রদায়িক-দুর্বৃত্ত গাঁটছড়া তাকে হত্যা করে। আজাদের নেতৃত্বেই এলাকার ভূমিহীন দরিদ্ররা সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোর নিয়ন্ত্রণ থেকে সিলিং বহির্ভূত ও বেনামি জমিগুলোকে মুক্ত করে সেখানে সমবেতভাবে চাষাবাদ ও বসত বাড়ি নির্মাণের দাবি জানায়।

fatua-azad-nagar-colony-engulfed-in-flames-2

নীতীশ কুমারের সাম্প্রতিক ডিগবাজির পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতায় বিজেপির প্রত্যাবর্তনে সারা বিহারেই সাম্প্রদায়িক-মাফিয়া শক্তিগুলো স্পর্ধিত হয়ে উঠেছে। জমি মাফিয়ারা দরিদ্রদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে। আজাদ নগরের জনগণ উচ্ছেদের হুমকি পেতে শুরু করেছেন। গত ৩ মার্চ আজাদ নগর থেকে পাঁচ বাস ভর্তি জনগণ পাটনার গান্ধি ময়দানে অনুষ্ঠিত জন বিশ্বাস মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। সিপিআই(এমএল) নেতা কমরেড সন্দীপ সৌরভ গ্রামীণ পাটনার যে বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক, সেই পালিগঞ্জে অমিত শাহ ৯ মার্চ একটি সভা করেন এবং সেই সভা থেকে তিনি জমি দখলদারদের পা ওপর দিকে আর মাথা নীচু করে ঝোলানোর হুমকি দেন, আর তার পরদিনই আজাদ নগর আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়।

সিপিআই(এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড দীপঙ্কর ভট্টাচার্য সিপিআই(এমএল) সদস্যদের নিয়ে গড়া একটি দলের সঙ্গে ১১ মার্চ ভস্মীভূত স্থল পরিদর্শন করেন। আগুনের ঐ গ্রাস আজাদ নগরের বাসিন্দাদের জীবনে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে, তবে তা কিন্তু তাদের লড়াকু মানসিকতা ও পরাক্রমকে দুর্বল করতে পারেনি। বাঁচা, ন্যায়বিচার  ও পুনর্বাসন লাভের লড়াইয়ে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। ত্রাণ সরবরাহের ব্যবস্থা যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় তার জন্য এখন জেলা প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

খণ্ড-31
সংখ্যা-9