উত্তরপ্রদেশ বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্য থেকে প্রথম সেরা বাছাই করা ২৭০ জনের একটা অংশকে নিয়োগ করা হচ্ছে আজ ২০ সেপ্টেম্বর থেকে অযোধ্যায় নির্মীয়মান রামমন্দিরের নিরাপত্তার কাজে। এরা ঘিরে থাকবে মন্দিরের লাগোয়া ১০৮ একর এলাকা জুড়ে চত্বর, যে অংশকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘রেড জোন’।
এছাড়া সিআরপিএফ এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের প্রাদেশিক বাহিনী সশস্ত্র কনস্টেবুলারির বাছাই করা অংশ যেমন রামলালার নির্মীয়মান মন্দিরের মূল এলাকার নিরাপত্তা রক্ষার কাজে নিযুক্ত রয়েছে তেমনটা থাকছেই।
আর, সেইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সমস্ত হিন্দু ধর্মস্থান ও তার সন্নিহিত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজ্যের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী থেকে ঝাড়া-বাছা করে একটা ব্যাচকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। বলাবাহুল্য যে, এই বাহিনী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে প্রথম ও প্রধানতম মানদন্ড করা হয়ে থাকবে প্রবল ঘৃণা ও বিদ্বেষের রাজনীতি ও সমাজনীতিতে উন্মত্ত জঙ্গী হিন্দুত্বকে। অর্থাৎ ভারতীয় সেনা ও আধা সেনার মধ্যে গোপনে হিন্দুত্বের ফ্যাসিবাদী সামরিকীকরণের যে কাজ, প্রস্তুতি এবং সেকথা কখনো কখনো প্রকাশ্যেও হুঙ্কার দিয়ে চালিয়ে আসার প্রকল্প রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার দৌলতে বিজেপি করতে পারছে, যা কিনা চূড়ান্ত বিচারে ওপরে নানারঙের উর্দি পরা থাকলেও ভেতরে ভেতরে আরএসএস-এর সংঘ বাহিনীর সাম্প্রদায়িক সেনার পরিপূরক ভূমিকাই পালন করায় নিযোজিত থাকবে। এভাবে অযোধ্যায় একদা ভারতীয় সংবিধান স্বীকৃত ধর্মনিরপেক্ষতার অন্যতম প্রতীক (যা সামাজিক বহুত্বের ও সহাবস্থানের অধিকার স্বীকৃত) বাবরি মসজিদকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘বিতর্কিত’ করে তুলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ফেলা হয়েছে তিন দশক আগে। আর, সেই স্থানে হিন্দুধর্মরাষ্ট্রের এক প্রতীক নির্মাণের মহড়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে আরএসএস সমন্বয়ে পুষ্ট বিজেপির ক্ষমতাসীন যোগীরাজের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে। এই সুবাদে হিন্দুত্বের সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থার রূপায়ণের জন্য প্রথম পরীক্ষাগার বানানো হচ্ছে উত্তরপ্রদেশকে।