খবরা-খবর
রাজ্য কর্মী সম্মেলন
st-workers-conference

রাজনৈতিক দিশাকে সংহত করে, সাংগঠনিক বিকাশ ঘটিয়ে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে পূর্ণশক্তি নিয়োগের ডাক দিল রাজ্য কর্মী সম্মেলন।

যখন ফ্যাসিবাদ ভারতকে ধ্বংস করা এবং আমাদের পেছন দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন জনগণের শক্তি ও উদ্যমকে অবারিত করে একে প্রতিরোধ করা ও পরাস্ত করার আহ্বান ছিল সিপিআই(এমএল)-এর ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ অনুষ্ঠিত একাদশ পার্টি কংগ্রেসে। পার্টি কংগ্রেসের পর জাতীয় স্তরে একটি বড়সড় রাজনৈতিক অগ্রগতি ঘটেছে। ভারতের নানা মত ও পথের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির এক জোট তৈরি হয়েছে, যা ‘ইন্ডিয়া’ নাম নিয়ে সামনে এসেছে। এই জোটের অন্যতম শরিক সিপিআই(এমএল)। ভারতের বিভিন্ন শহরে জোটের বৈঠকগুলি হচ্ছে ও তা ভারতের সংসদ থেকে চা দোকান বাজারে জনগণের আলোচনা — সর্বত্র প্রবল প্রভাব ফেলছে।

এই নতুন রাজনৈতিক পরিমণ্ডল নানা রাজ্যে নানারকম প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। পশ্চিমবঙ্গে এই সময়কালেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে এবং সেখানে পশ্চিমবঙ্গে রক্তক্ষয়ী নির্বাচনের ধারা ও রাজ্যের শাসক দলের সন্ত্রাস, গণতান্ত্রিক পরিসরের ওপর হামলা অব্যাহত থেকেছে। আমাদের পার্টি কিছু আসনে বিজয়ী ও কিছু আসনে ভালো ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান পেলেও সামগ্রিকভাবে আমাদের অংশগ্রহণ, প্রচার, ভোট প্রাপ্তি সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। শাসকের হামলা ছাড়াও নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা এর কারণ। ২০২৪’র লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী, ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে দেশের অন্যান্য জায়গার মতো পশ্চিমবঙ্গেও পার্টিকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সাংগঠনিক দুর্বলতাগুলি দ্রুত মেরামত করে পার্টির বিস্তার ঘটানো। রাজনৈতিক প্রশ্নে গোটা পার্টির বোঝাপড়াকে আরো উন্নত ও ঐক্যবদ্ধ করেই একাজে এগোতে হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২০ অগস্ট কলকাতার মৌলালি যুবকেন্দ্রে পার্টির এক কর্মী বৈঠক আয়োজিত হয়। এতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা, গণসংগঠন ও পার্টি বিভাগের দায়িত্বশীলরা অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। পার্টির রাজ্য কমিটির স্ট্যান্ডিং বডি এই কর্মীসভাটি পরিচালনা করে। বৈঠকের শুরুতে, মাঝে ও শেষে সাংস্কৃতিক ফ্রন্টের কর্মী নীতীশ রায়, বাবুনি মজুমদার ও অন্যান্যরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

কর্মী বৈঠক শুরু হয় পার্টির রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদারের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে। যেখানে তিনি কেন এই কর্মী বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে তা তুলে ধরেন ও পার্টির রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করেন।

জাতীয় স্তরে ফ্যাসিবাদী হামলার সাম্প্রতিক নিদর্শন হিসেবে মণিপুরে মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে পরিকল্পিত বিভাজন ও পারস্পরিক হিংসার বীজ ছড়িয়ে দেওয়া, ট্রেনে এক জওয়ানের সংখ্যালঘু মানুষদের হত্যা করা, ইডি বা সিবিআই’এর পাশাপাশি এনআইএ’র মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে গণতন্ত্রের ওপর হামলার মতো ঘটনাগুলির পাশাপাশি এই প্রতিবেদনে ছিল রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও সেখানে গণতন্ত্রহরণের মতো বিষয়গুলি। বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সী দিয়ে, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ তৈরির চেষ্টা করেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিশেষ কিছু করে করতে পারেনি, বরং তার ভোট অনেক কমেছে। বিজেপির ক্ষয়ের পাশাপাশি ইতিবাচক দিক বামেদের ভোট ও আসনের সংখ্যা বৃদ্ধি। তৃণমূলের দাপট ও বাহুবলের নানা প্রকাশ ছাড়াও এই নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ ও ফলাফল যে সন্তোষজনক হয়নি, ছোট স্তরে আমাদের সংগঠন ও কাজের পরিধি আটকে থাকাকে তার অন্যতম কারণ হিসেবে এই প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয়।

conference wb

এই সমস্যার সমাধানে ও বিস্তারের লক্ষ্যে কিছু অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার কথা রাজ্য সম্পাদক উল্লেখ করেন। এছাড়াও যে সমস্ত বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা হয় সেগুলি হল — ব্রাঞ্চ ও লোকাল কমিটির পুনর্গঠন, সমস্ত সদস্যকে কাঠামোর মধ্যে আনা, এজন্য জেলা, ব্লক ও এলাকা স্তরে উদ্যোগ গ্রহণ করা। যে সমস্ত পদক্ষেপ নেবার কথা রাজ্য সম্পাদকের প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয় তারমধ্যে রয়েছে স্থানীয় নেতা ও ইস্যু নির্ধারণ, ফ্যাসিবিরোধী ব্যূহ তৈরি, নিষ্ক্রিয় পার্টি ব্রাঞ্চকে সক্রিয় করা, নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি করা ইত্যাদি। পঞ্চায়েত ভিত্তিক লোকাল কমিটি গঠনের কথা ও দেশব্রতীর প্রচার সংখ্যা বাড়ানোর ওপরে জোর দেওয়ার প্রয়োজনিয়তার কথা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়। গণ উদ্যোগ বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে গণসংগঠনগুলির বকেয়া সম্মেলনসমূহ সম্পন্ন করার ওপর জোর দেওয়া হয়। পার্টি কংগ্রেসের দলিল নিয়ে অধ্যয়নের ব্যবস্থা জেলা কমিটিগুলিকে করতে হবে। এজন্য রাজ্য শিক্ষা সেলের সদস্যরা প্রয়োজনে সাহায্য করবেন। সেই সেলটি গঠনের কাজ চলছে।

২০২৪’র আসন্ন লোকসভা নির্বাচন ও সেখানে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট নিয়েও কিছু পর্যবেক্ষণ রাজ্য সম্পাদকের প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয়। জোটের অনেক দল বিজেপিকে ফ্যাসিবাদী মনে করেনা। এই জোটে বামেরা বা সিপিআই(এমএল) নির্ণায়ক শক্তি নয়। জোটের কার্যক্রম কোনপথে এগোবে তা তাই আমাদের ইচ্ছানুসারে নির্ধারিত হবেনা। কিন্তু বিজেপি বিরোধী সমস্ত উদ্যোগে সারা দেশের মতো এ’রাজ্যেও আমরা সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করব।

এই প্রতিবেদনের ওপর এরপর বিভিন্ন জেলা ও গণসংগঠনের নেতৃত্ব তাঁদের মতামত পেশ করেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রনেতা বর্ষা বড়াল ও সায়নী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তাঁদের পর্যবেক্ষণ সভায় পেশ করেন। বর্ষা বলেন আইসা র‍্যাগিং ও তার ফলে ছাত্রমৃত্যুর দুঃখজনক ও নন্দনীয় ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে অবস্থান চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে। এই আলোড়নের পর্বে অন্যান্য নানা প্রতিষ্ঠান থেকেও র‍্যাগিং’এর খবর আসছে। পরিস্থিতির জটিলতাকে দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলো কাজে লাগানোর প্রবল চেষ্টা করছে। বিজেপি, তৃণমূল এখানে দখলদারি নিতে চাইছে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিজেপি নিজেদের কর্মকর্তাদের ঢুকিয়ে দিয়ে সেগুলিকে নিজেদের মতো করে চালানোর চেষ্টা করছে বিগত কয়েক বছর ধরেই। আমাদের রাজ্যের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তার একটি উদাহরণ। যাদবপুরেও রাজ্যপাল এমন একজনকেই সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর দায়িত্ব দিলেন।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ধ্বংস করার জন্য মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বর্ষা বলেন এর বিরুদ্ধে শিক্ষক সমাজের সাহায্য দরকার। তাঁরা যেন প্রগতিশীল শিক্ষা পরিবেশের পক্ষে দাঁড়ান, সেই আবেদন নিয়ে শিক্ষকদের কাছে যেতে হবে।

প্রতিনিধিদের আলোচনার পর রাজনৈতিক দিশা ও সাংগঠনিক বিষয়গুলি নিয়ে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। যাদবপুর প্রসঙ্গ দিয়ে আলোচনা শুরু করে তিনি বলেন যে র‍্যাগিংকে কাজে লাগিয়ে যাদবপুরকে দখল করতে চাইছে আরএসএস। একারণেই তাদের পছন্দমতো ভিসিকে পদে বসানো হয়েছে। যাদবপুরের পরিবেশকে কলুষিত করার জন্য নানা মহল থেকে চেষ্টা চলছে। আমাদের যাদবপুরের পাশে দাঁড়াতে হবে। নাগরিক উদ্যোগ সংগঠিত করতে হবে। এরপর সাধারণ সম্পাদক নবগঠিত ইন্ডিয়া জোট ও তার প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে এটা ঠিকই যে এই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অনেকেই ফ্যাসিবাদ বিরোধী জায়গা থেকে বিজেপি বিরোধী নন। তারা অনেকে হয়ত মনে করেন না বিজেপি ফ্যাসিবাদী। কিন্তু তারা এটা বোঝেন যে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে অন্য কোনও দলের আর রাজনৈতিক জমি থাকবে না।

কোনও কোনও রাজ্যে কেউ কেউ বিজেপিকে হারাতে পারলেও জাতীয় স্তরে বিজেপিকে হারানো দূরে থাক, কেউ বিজেপির কাছাকাছিও আসতে পারছে না। ভোটপ্রাপ্তির শতাংশ থেকে আসনসংখ্যা — সবেতেই বিজেপির সঙ্গে বাকীদের অনেকটা ব্যবধান। কিন্তু বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় আনলে বিজেপিকে ঠেকানো যাবে, এরকম একটা অঙ্কের হিসেব আছে। ইন্ডিয়া জোট তৈরিতে এটা প্রভাব ফেলেছে।

এই জোটে বামেরা দুর্বল। চিনে মাও’এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট কুয়োমিনটাং’এর জোটের থেকে এটা আলাদা, কারণ চিনে বামেরা সেসময় শক্তিশালী অবস্থান থেকে লড়েছিলেন। এখানে পরিস্থিতিটা আলাদা। এখন এখানে রাজনৈতিক ভারসাম্য তাঁদের দিকে হেলে নেই। আমরা এই জোটকে নিয়ন্ত্রণের জায়গায় নেই। এমনও নয় যে নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে পারলে ফ্যাসিবাদকে নির্ণায়কভাবে হারানো যাবে। কিন্তু এটাও ঠিক নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক লড়াই এবং এই লড়াইতে আমাদের সমস্ত শক্তিকে বিজেপিকে হারানোর চেষ্টায় নিয়োজিত করতে হবে। গণআন্দোলন, গণসংগ্রামের ময়দানে আমাদের লড়াই চলবে। নিজেদের সংগঠন ও বাম ঐক্যকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টায় আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। শ্রমিক, কৃষক, সংখ্যালঘু, প্রান্তিক পরিচিতির মানুষদের জীবন, জীবিকা, সম্মান, অধিকারের লড়াইতে রাস্তার আন্দোলনে আমাদের সক্রিয়তাকে বাড়িয়ে যেতে হবে। এসবের পাশাপাশিই বিভিন্ন মত ও পথের নানা রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে তৈরি ইন্ডিয়া জোট এবং তারমধ্যে দিয়ে নির্বাচনী লড়াইতে বিজেপিকে পরাস্ত করার চেষ্টাতেও আমরা সক্রিয় থাকব। গোটা দেশের মতো এই রাজ্যেও আমরা সক্রিয়ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইকে আমাদের মূল নিশানা করে লড়াই আন্দোলন জারি রাখব। বিজেপি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্রকে শেষ করতে চায়। তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের জোটে যে আমরা আছি সেটা আমাদের সামাজিক স্বীকৃতি, রাজনৈতিক পরিচিতিকে বাড়িয়েছে। এর সুযোগটা আমাদের নিতে হবে।

বিজেপি আরএসএস কীভাবে আমাদের দেশটাকে পালটে দিতে চাইছে, ভারতের বুকে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছে তা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বিশদে চর্চা করেছি। আমরা দেখতে পাই নরেন্দ্র মোদী দীর্ঘদিন ধরেই হাজার বছর ধরে পরাধীন থাকার কথা বলেন। এটা ব্রিটিশ সরকারের শাসন নয়, মুসলিম শাসনের সময়কালটা হিসেবের মধ্যে ধরে বলা হয়। বিজেপি আরএসএস বলার চেষ্টা করে হাজার বছর পরাধীনতার পর আগামী হাজার বছরের জন্য মোদী এখন কাজ করছেন। মোদীকে ভগবানের স্তরে নিয়ে গিয়ে বলা হয় ভগবানের কাছে যেমন ছোটখাটো জিনিস নয়, বড় কিছু চাইতে হয়, তেমনি মোদী শাসনের বিচার রামরাজত্ব তথা হিন্দুরাষ্ট্র স্থাপণ ইত্যাদি দিয়ে দেখতে হবে। বেকারের চাকরী, জিনিসপত্রের দাম ইত্যাদি ‘তুলনায় গৌণ ছোটখাটো জাগতিক বিষয়’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা যাবে না।

সংবিধানকে বদলে ফেলার কথা আরো একবার জোরের সাথে বলতে শুরু করেছে বিজেপি-আরএসএস শিবির। ভারতের এই সংবিধানকে ব্রিটিশ শাসনের উত্তরাধিকারজাত বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে ১৯৩৫’র ভারত শাসনের আইনের উত্তরাধিকার নিয়ে এই সংবিধান তৈরি। এটার মূল কাঠামো তাই বদলানো দরকার। এটা সংবিধানের ছোটখাটো রদবদলের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বর্তমান সাংসদ রঞ্জন গগৈ সংবিধানের মূল কাঠামো বদলানোর কথা বলেছেন সংসদে। মিন্ট কাগজে এ’বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন জাতীয় অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বিবেক দেবরায়।

হিন্দুরাষ্ট্র গঠন থেকে সংবিধানকে পালটে দেবার এই সমস্ত প্রচেষ্টাকে আমাদের রুখতে হবে। এজন্য সাংগঠনিক শক্তি ও ব্যক্তির সাহস — সবকিছুই দরকার। ব্যক্তির সাহসের বিকল্প নেই। ফাদার স্ট্যানস্বামী সহ অনেকের লড়াই যার গৌরবোজ্জ্বল উদাহরণ। পাশাপাশি দরকার নির্বাচনী জোট। ইন্ডিয়া জোট নিয়ে, তার নাম সংক্ষেপ নিয়ে বিজেপির অস্বস্তি আছে। সেটা তাদের নানা কথায় বারবার সামনে চলে আসছে।

রাজ্যে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে যে জটিলতা আছে, সেই ধরনের নানা জটিলতা নানা জায়গায় আছে। আমাদের উদ্যোগ বাড়িয়ে, সংগঠনকে শক্তিশালী করে এই রাজ্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। একইদিনে একসঙ্গে অনেক জায়গায় সভা করা, স্থানীয় স্তরে শক্তি বাড়ানো এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ। পার্টি পত্রিকাকে শক্তিশালী করাটা সংগঠনের শক্তি ও সক্রিয়তা বাড়ানোর জন্য অপরিহার্য। সেদিকে বিশেষ নজর বাড়াতে হবে।

সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের পরে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত সেনগুপ্ত। সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য আগামী একমাসব্যাপী পার্টি যে নিবিড় অভিযানের ডাক দিয়েছে, সেগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন। এই বিষয়ে ও সামগ্রিকভাবে আরো কিছু পরামর্শ দেন পার্টির বর্ষীয়ান নেতা পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল। কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক গান ‘আমরা করব জয়’ দিয়ে রাজ্য কর্মী সম্মেলন উৎসাহের সঙ্গে সমাপ্ত হয়।

খণ্ড-30
সংখ্যা-29