চলছে অর্থহীন কেন্দ্র-রাজ্য তরজা -- খুলতেই হবে বন্ধ কাজের দরজা
doors-must-be-opened

এরাজ্যে প্রায় দু’বছর হতে চলল বছরকার একশ দিনের কাজ নেই। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ অর্থ আটকে দিয়েছে। ফলে এমএনআরইজিএ প্রকল্পের কাজ ফের কবে শুরু হতে পারে সেটা অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে। কেবল তা নয়, বিশাল পরিমাণ মজুরির টাকাও বকেয়া। কেন্দ্রের হিসাব অনুসারে মজুরি বাবদ দেয় ছিল ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ১৯১৬ কোটি টাকা, ২০২২-২৩-এ ৮৩২ কোটি টাকা। রাজ্যের দাবি পাওনার অঙ্ক আরও বেশি। এনিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে চলে আসছে দীর্ঘ তরজা। মাঝখান থেকে বঞ্চনার জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে গ্রামবাংলার ব্যাপক কর্মক্ষম বেকারবাহিনী, যন্ত্রণার শেষ নেই। এই দুর্দশা চলতে দেখে বাংলার গণতান্ত্রিক বিবেকও তিতিবিরক্ত।

কেন্দ্রের অভিযোগ হল, এবিষয়ে রাজ্যের পেশ করা আর্থিক হিসাবের রিপোর্টে স্বচ্ছতা নেই, রয়েছে বিস্তর গরমিল, কারচুপি করে আত্মসাৎ করা হয়েছে বড় অঙ্কের অর্থ, ঘটেছে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি। তাই কেন্দ্র এমএনআরইজি আইনের ২৭ ধারায় অর্থ আটকে দিয়েছে। কেন্দ্রের ফরমান হল, রাজ্য সরকারকে আগে স্বচ্ছ হিসাবের রিপোর্ট দিতে হবে, হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করে প্রকৃত মজুরি প্রাপকদের বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে, তারপর কেন্দ্র আটকে রাখা পরবর্তী কিস্তির বরাদ্দ অর্থ রিলিজ করবে।

পক্ষান্তরে, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সময়কার বিভিন্ন সূত্রের কথায়, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আর্থিক হিসাব পেশে কিছু এদিক-ওদিক হয়ে থাকতে পারে, ওসব তেমন গুরুতর ত্রুটি নয়, রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে, তিলকে তাল করে যে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়, বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিজেপি ২০২১-এ এরাজ্যে ক্ষমতায় আসতে না পেরে নানা ছুতোয় এই সেই ঝামেলা পাকাতে কেন্দ্রকে ব্যবহার করছে। তারই এক নিকৃষ্ট প্রকাশ হল, ১০০ দিনের কাজের শ্রমজীবীদের শুকিয়ে মারতে চাইছে, রাজ্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলে টাইট দিতে চাইছে।

মোদী সরকার প্রাসঙ্গিক বরাদ্দ অর্থ দেওয়া না দেওয়ার পূর্বশর্তের ব্যাপারে নিজের আইনগত অজুহাতে অনড়। তবে আইনের প্রসঙ্গ যখন উঠেই গেছে, তখন এই আইনে কাজ ও কাজের মজুরি দেওয়ার ব্যাপারে কী কী বলা আছে, আর সেই আইনকে মান্যতা দিয়ে চলার প্রশ্নে কেন্দ্রের অবস্থানটি মূলগতভাবে কেমন, একনজরে ফিরে তাকানো যাক সে’কথায়। ২০০৫ সালে কেন্দ্রে ইউপিএ আমলে তৈরি হয়েছে এমএনআরইজিএ (আইনে)। আর তাতে পরিষ্কার বলা আছে, এই সরকারি প্রকল্পে বছরে ন্যূনতম একশ দিনের কাজের বাধ্যতামূলক সংস্থান করে দিতে হবে। প্রত্যেক পরিবারে কাজ করতে সক্ষম এমন পূর্ণবয়স্ক যে’কেউ আবেদন করলে তাঁকে জবকার্ড দিতে হবে। প্রত্যেক জবকার্ড পাওয়া লোকদের কাজ দিতে হবে, না দিতে পারলে আবেদনের পনের দিনের মধ্যে বেকার ভাতা দিতে হবে। এছাড়া ঐ আইনে অতিরিক্ত পঞ্চাশ দিনের কর্মসংস্থানের কথা উল্লেখ করা আছে গ্রামাঞ্চলে খরা-বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেওয়ার ক্ষেত্রে। সংশ্লিষ্ট আইনে তাছাড়া বলা রয়েছে যে, এর বাইরে রাজ্য সরকারগুলি চাইলে অতিরিক্ত কর্মদিবস সৃষ্টি করতে পারে, তবে তারজন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা যাবে না, তা করতে হলে করতে হবে রাজ্য সরকারের নিজস্ব আর্থিক সংস্থান থেকে। কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওনার মোট বরাদ্দে থাকবে মূলধনী ও মজুরি বাবদ নির্ধারিত অনুপাতে দু’রকম খরচের টাকা।

কাজের আইনগত অধিকারের এই সরকারি প্রকল্পটির সার কথা হল, এটি ‘কাজের চাহিদা নির্ভর’ প্রকল্প, সেই অনুসারেই বাজেটে মোট অর্থ বরাদ্দ করতে হবে, উল্টোভাবে নয়। অর্থাৎ একে বাজেটে বরাদ্দ-নির্ভর কাজ পাওয়ার প্রকল্পে পরিণত করলে চলবে না। কিন্তু কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর থেকে একে ক্রমাগত বরাদ্দ ভিত্তিক প্রকল্পে পরিণত করে আসছে। বাজেট যেমন, প্রকল্প তেমন — এরকমটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে পলিসি। গোড়াতেই গলদ। এভাবে প্রথমে আইন অনুসারে না চলার পন্থা নিয়েছে কেন্দ্রই। আর ফিবছর বরাদ্দ কমে আসছে। সেইমতো জবকার্ড ছাঁটাই থেকে শুরু করে কর্মদিবস সংকোচন, মূল্যবৃদ্ধি অনুপাতে মজুরি বৃদ্ধি না করা, রাজ্যে রাজ্যে মজুরি সমতা না রাখা, বরাদ্দ অর্থ পাঠানোয় দেরী করা এবং এই সবকিছুকেই রীতি বানিয়ে চলা, ফলতঃ খুবই কম সময়ের মধ্যে মোট কর্মদিবসের সম্পূর্ণ সদ্বব্যবহার করা সম্ভব না হওয়ার চাপের প্যাঁচে ফেলা, প্রকল্প রূপায়ণ কার্যত অসম্পূর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকতে বাধ্য করা, সেই অজুহাতে পরের কিস্তির বরাদ্দ অর্থ মঞ্জুর করতে যথারীতি বহু বিলম্ব করা — এভাবেই কেন্দ্র খেলে আসছে তার হাতের তাস। ফলে বছরে মাথাপিছু কর্মদিবস সৃষ্টি হতে থাকে বড়জোর বিশ/তিরিশ/চল্লিশ দিন মাত্র। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে এই খাতে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ ধার্য হয়েছে ৬০,০০০ কোটি টাকা, যা কিনা গত আর্থিক বছরের (২০২২-২৩) বরাদ্দের তুলনায় ১৮ শতাংশ কম। গতবছর বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৭৩,০০০ কোটি টাকা। আর, বেকার ভাতার দেখা সহজে মেলে না। বিগত দু’বছর যাবত বকেয়া মজুরি ও বেকার ভাতার যোগফলে জমে উঠেছে পাওনার পাহাড়। এবছরের (২০২৩) গোড়ার দিককার কেন্দ্রের সূত্রে প্রাপ্ত হিসাব অনুসারে, এই প্রকল্প বাবদ ১৪টি রাজ্যে (যার মধ্যে ৮টি রাজ্য বিরোধী দল শাসিত) কেন্দ্রের অদেয় মোট অর্থের পরিমাণ ৬,১৫৭ কোটি টাকা। পাশাপাশি, ‘ভূয়ো’ কারণ দেখিয়ে, সারা দেশে জবকার্ড ছাঁটাই করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৫ কোটির বেশি। যা তার আগের বছরের (২০২১-২২) তুলনায় ২৪৭ শতাংশের বেশি। পশ্চিমবঙ্গে জবকার্ড বাতিল করা হয়েছে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১,৫৭,৩০৯টি, আর ২০২২-২৩এ ৮৩,৩৬,১১৫টি। বাজেটে বরাদ্দের হার যত হ্রাস পাচ্ছে, ততো কমছে কর্মদিবসের হার, কর্মদিবসের হার যত হ্রাস পাচ্ছে, ততো বাড়ছে জবকার্ড ছাঁটাইয়ের হার। মজুরি বৃদ্ধির কোনও নতুন বিধি-বন্দোবস্ত করার নাম-গন্ধ নেই, পরন্তু রাজ্যে রাজ্যে বড় মাত্রায় রয়েছে মজুরি অসমতা। তা দিবসপ্রতি হরিয়ানায় ৩৫৭ টাকা তো, কেরলে ৩৩৩, কর্ণাটকে ৩১৬, ঝাড়খন্ডে ২২৬, মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড়ে গড়ে ২২১, আর পশ্চিমবঙ্গে কাজ বন্ধ হওয়ার আগের মুহূর্তে মজুরি ২১৩ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২২৩ টাকা। ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এই সামান্য পরিমাণ অর্থ দিয়ে পরিবারে ন্যূনতম রসদের সংস্থান হতে পারে? খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা কতটুকু মিলতে পারে? তাই পরিবর্তনকামী আন্দোলনকারী শক্তিগুলি দাবি তুলেছে, বছরে মাথাপিছু ২০০ দিনের কাজ ও দিনপ্রতি ৬০০ টাকা মজুরি চাই।

কেন্দ্র পরিষ্কার হিসাব না পাওয়ার কথা তুলে, বরাদ্দ অর্থ আটকে রেখে ছড়ি ঘোড়াচ্ছে। রাজ্যের শাসকদের চেয়ে বেশি ন্যায়-নীতি-আইন ভাঙছে কেন্দ্রের শাসকরা। একশ দিনের কাজের জন্য দেয় অর্থ আটকে দিয়ে শেষবিচারে চূড়ান্ত আঘাতটা নামাচ্ছে বেকারিতে জর্জরিত গ্রামীণ গোটা গরিবশ্রেণীর উপর।

কেন্দ্রের অন্যায়-অনাচার-আইন ভাঙাভাঙি যথেচ্ছ হলেও রাজ্যের তৃণমূল সরকার ধোয়া তুলসীপাতা নয়। তার বিরুদ্ধে ওঠা গুচ্ছের অভিযোগের সারবত্তা আছে যথেষ্ট। প্রধানত উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। একশ দিনের কাজের প্রকল্পে শাসকদল ও আমলাচক্রের আঁতাত যে পাহাড় সমান দুর্নীতি করেছে এটা সত্য। এর প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটতে দেখা যায় তৃণমূলের তীব্র গোষ্ঠী সংঘাতে — খুনোখুনিতে, অন্যদিকে বিভিন্ন স্তরের প্রশাসনিক কৈফিয়ত তলবে ও তদন্তে, এমনকি ২০২৩’র পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট বিলির ক্ষেত্রে ওপর থেকে সরাসরি বড় আকারে হস্তক্ষেপ ও পরিবর্তন করার মধ্যে। প্রথম ও তৃতীয় ধরণটির তথ্য-পরিসংখ্যান অতি চেনা। অজানা থাকতে পারে হয়ত প্রশাসনিক অন্দর থেকে পাওয়া খবরাখবর। প্রসঙ্গত খবরে প্রকাশ, দুর্নীতির টাকা উদ্ধার হওয়ার জেলাগত শীর্ষ তিন স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা (১৯.১২ লক্ষ টাকা), উত্তর দিনাজপুর (১০.৫৮ লক্ষ টাকা) এবং পূর্ব মেদিনীপুর (৯.৭১ লক্ষ টাকা)। আর, শতাধিক সরকারি কর্মচারিদের তলব করে, তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরিয়ে, তথ্য সংগ্রহ ও নির্দিষ্ট অভিযোগ দাঁড় করানোর ভিত্তিতে দুর্নীতির ছবিগুলি প্রকাশ্যে এসেছে। ২০১৯-২১ দু’বছরে কেন্দ্র নাকি প্রায় ২৫০ লক্ষ টাকা নয়ছয় হওয়ার মোট অভিযোগ পেয়েছিল ৩,৩৫৮টি এবং রাজ্য সরকার নাকি চাপে পড়ে তার মধ্যে ৫২.৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল মাত্র। প্রকৃত সত্যমিথ্যা বোঝা এখনও বহুদূরের বিষয়, যা কিছু জানা গেছে তা দৃশ্যমান শিলাখন্ড মাত্র। আর, দুর্নীতির দুর্গন্ধ পাওয়া গেছে শুধু একশ দিনের কাজ বাবদ নয়, আবাস যোজনায় গরিব মানুষের পাকা বাড়ি তৈরির টাকা আত্মসাৎ করা, এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির তথ্য মিলেছে পর্বত সমান।

কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তৃণমূল বহুদিন যাবত বলে আসছে, কিন্তু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তেমন কার্যকরী টক্কর রাজ্যের শাসকদলটি দেখাতে পারছে কোথায়? নিজেরা দুর্নীতির পাঁকে ডুবে সে আর কিভাবে সম্ভব! বিশ্বাসযোগ্যতা পাচ্ছে না। অগত্যা অতি সম্প্রতি তৃণমূলের দলীয় এক দিবস পালনের মঞ্চ থেকে দুটি কর্মসূচির ঘোষণা শোনা গেল। এক, একশ দিনের কাজের পাওনাগন্ডা বুঝে নেওয়ার দাবিতে ‘দিল্লী চলো’ অভিযান; দুই, রাজ্য সরকারের টাকায় এমএনআরইজিএ কাজ শুরু করা হবে। ‘দিল্লী চলো’ প্রধানত রাজনৈতিক অভিযান, পরে এরসাথে জুড়েছে এরাজ্য থেকে সংগৃহীত জিএসটি বাবদ ১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা বঞ্চনার প্রসঙ্গ। এইসব আদায়ে তাদের দৌড় কতদূর তা সময় চলে যাওয়ার সাথে সাথে বুঝে নেওয়া যাবে। আর, প্রশ্ন জাগে শেষোক্ত ঘোষণাটি প্রসঙ্গে। এই ভাবনা ভাবতে দু’বছর লেগে গেল কেন? এরকম স্বতন্ত্র এ্যক্তিয়ারের সহাবস্থানের কথা তো এমএনআরইজিএ’তে স্বীকৃত রয়েছেই। আজ দাবি করা হচ্ছে, শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার আবাস যোজনা প্রকল্পে ১১ লক্ষ ‘বাংলার বাড়ি’ বানিয়ে দেবে। এক্ষেত্রেও প্রশ্ন হল, এই চৈতন্যের উদয় হতে এতদিন লাগল কেন? এসবের টাকার সংস্থান কোথা থেকে হবে সেটা খোলসা করে বলা হয়নি। আজ যদি তা মসৃণভাবে সম্ভব হয় তবে এতদিন হয়নি কেন? বিশেষ করে কোভিড পরিস্থিতির পর যেখানে বেকারি ছেয়ে যায় আরও, তখনও (ক্লাব, কার্নিভাল ইত্যাদিতে অনেক অর্থ ঢাললেও) গ্রামের গরিবদের হাতে কাজ আর মাথার ওপর ছাদ করে দেওয়ার চিন্তা অগ্রাধিকার পায়নি কেন? অন্যদিকে প্রধানত কেন্দ্রের কাছ থেকে সমস্ত বকেয়া আদায়ের সংঘাত যা তুঙ্গে তোলার, তাও তোলা হয়নি কেন? কোভিডকালীন জীবন-মরণ সংকটের তাড়নায় ভিনরাজ্যে পরিযায়ী হওয়া অগুন্তি শ্রমিকরা নিজেদের রাজ্যে ফিরে আসেন। ফলে কাজের খোঁজে দেখা দেয় হাহাকার অবস্থা। কোভিডোত্তর পরিস্থিতিতেও যখন একশ দিনের কাজের সুযোগ তেমন তৈরি হল না, তখন গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে দলে দলে বেকার যুব মেহনতিরা আবার ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে পরিযায়ী হতে থাকে, সেই ধারা চলছে এখনও। তাদের গন্তব্য প্রধানত দক্ষিণের বিভিন্ন রাজ্য — তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা। ঐসব রাজ্যে দিনমজুরি গড়ে ৭০০-৮০০ টাকা। আর এখানে? কাজ ও মজুরি অনেক কম। এরকম দুঃসহ অবস্থায় দীর্ঘ সময় যাবত একশ দিনের কাজে বিকল্প আর্থিক উদ্যোগ গ্রহণের ভাবনা মাথায় এল না কেন? এই জিজ্ঞাসা তো তৃণমূল সরকারকে তাড়িয়ে নিয়ে চলবেই। প্রত্যক্ষ করা যাবে কত টাকায় কত মজুরিতে কতদিনের কাজ হচ্ছে, গরিবদের কেমন পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছে।

গ্রামবাংলার গরিব জনতা অনেক সহ্য করেছে অর্থহীন অন্তহীন কেন্দ্র-রাজ্য তরজা। এবার যেভাবে হোক, খুলতেই হবে বন্ধ একশ দিনের কাজের দরজা, মিটিয়ে দিতে হবে সমস্ত বকেয়া মজুরি, আর আবাস যোজনায় হকের পাওনা পাকা বাড়ি।

– অনিমেষ চক্রবর্তী

খণ্ড-30
সংখ্যা-28