খবরা-খবর
জেলায় জেলায় ২৮ জুলাই পালন
july-28-celebration
দার্জিলিং

কমরেড চারু মজুমদারের ৫২তম শহীদ দিবস ও ৪৯তম পার্টি পুনর্গঠন দিবসে প্রত্যেকবারের মতো এবারেও দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ির শহর থেকে গ্রাম, ফাঁসিদেওয়া থেকে খড়িবাড়ি, পার্টির জেলা নেতৃত্ব থেকে কর্মীরা যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে দিনটি পালন করতে তৎপর ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক কমরেড অভিজিৎ মজুমদার।

শিলিগুড়ি : পার্টি সার্কুলার অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির বদলে জেলা জুড়ে বিকেন্দ্রীগতভাবে সংগঠনকে সুদৃঢ়, সুসংহত ভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্রাঞ্চ ও লোকাল কমিটির স্তরে সংকল্প দিবসের বার্তা নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ২৮ জুলাই সকালে শিলিগুড়ি সুভাষপল্লিস্থিত কমরেড চারু মজুমদারের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার, জেলা সম্পাদক পবিত্র সিংহ সহ উপস্থিত জেলা ও লোকাল কমিটির নেতৃত্ব ও কর্মীরা। রাজ্য সম্পাদক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বর্তমান সময়ের রাজনীতিতে চারু মজুমদারের প্রাসঙ্গিকতা, ফ্যাসিস্ট বিজেপি যে ক্রমবর্ধমান বিপদ এবং রাজ্যে চলমান তৃণমূলী সন্ত্রাস নিয়ে বলেন। এবং এসবের মুখোমুখি হতে হলে সংগঠন এবং একমাত্র সংগঠনকে শক্তিশালী করেই যে এগিয়ে যেতে হবে সেই বিষয়টি সকলের সামনে রাখেন। বক্তব্য রাখেন জেলা সম্পাদক পবিত্র সিংহ।

শিলিগুড়ি জেলা কার্যালয়ে শিলিগুড়ি লোকাল কমিটি ও ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি লোকাল কমিটি একত্রিতভাবে একটি সভা করে। সেখানে সদস্যদের উপস্থিতি আশানুরূপ না হলেও উপস্থিত সকলেই সংগ্রামী উদ্দীপনা নিয়েই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। সংকল্প দিবসের আহ্বান পাঠ করেন শাশ্বতী সেনগুপ্ত। সংকল্প দিবসের আহ্বানের ওপর বক্তব্য রাখেন শিলিগুড়ির লোকাল কমিটি সম্পাদিকা মুক্তি সরকার ও শাশ্বতী সেনগুপ্ত। বিষয়গুলি সামগ্রিকতার সঙ্গে তুলে ধরেন এবং ব্যাখ্যা করেন রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার। উপস্থিত কমরেডরা সকলেই সাংগঠনিক খামতি মিটিয়ে সংগঠনকে নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

শক্তিগড় ব্রাঞ্চ কমিটি : শিলিগুড়ির শক্তিগড়ে দুটি ব্রাঞ্চ কমিটির উদ্যোগে শহীদ দিবস পালন করা হয়। কমরেড চারু মজুমদারের প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির শুরু হয়। উপস্থিত কর্মীদের সামনে ২৮ জুলাইয়ের সংকল্প পড়ে শোনান শাশ্বতী সেনগুপ্ত, এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকল্প বা পার্টির ২৮ জুলাইয়ের আহ্বানের তাৎপর্য সংক্ষেপে উপস্থিত সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন। ভবিষ্যতে স্থানীয়স্তরের এবং জেলাগত ভাবে বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলনমূখি প্রতিরোধ তৈরি করার মধ্য দিয়ে সংগঠনের পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার সংকল্পে কর্মসূচি শেষ হয়।

ফাঁসিদেওয়া : ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপাণিতে ছয়টি ব্রাঞ্চ কমিটি পক্ষ থেকে শহীদ দিবস পালন করা হয়। উপস্থিত জেলা সম্পাদক পবিত্র সিংহ জাতীয় ও রাজ্য পরিস্থিতির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন উপস্থিত কর্মীদের সামনে। পার্টি কাঠামোর বুনিয়াদী কাঠামো ব্রাঞ্চগুলিকে পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে অনেক বেশি মানুষকে সমাবেশিত করে সংগঠনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আহ্বান রাখেন।

খড়িবাড়ি : পার্টির বহুদিনের কাজের জায়গা খড়িবাড়ির বুড়াগঞ্জে নকশালবাড়ি আন্দোলনের অগ্রণী সেনানী জেলা সদস্য খেমু সিংহ ও বন্ধু বেকের উপস্থিতিতে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কমরেড চারু মজুমদারের ৫২তম শহীদ দিবস ও পার্টি পুনর্গঠনের ৪৯তম বার্ষিকী পালিত হয়। পাঠ করা হয় ২৮ জুলাইয়ের সংকল্প।

উদ্যোগ ছোট হোক বা বড়ো, উদ্দীপনার ঘাটতি কোথাও ছিলো না একথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। সংগঠনকে সুসংহত, শক্তিশালী করার চেষ্টার মধ্য দিয়েই ফ্যাসিস্ট বিজেপি ও এই রাজ্যের সরকারের জনবিরোধী সমস্ত উদ্যোগকে পদানত করে আমরা এগিয়ে যাবো আগামীর দিকে।

বাহান্নতম শহীদ দিবসেও তাইতো নিশ্চিত বলা যায়, স্বপ্নের মৃত্যু হয় না…।

স্বপ্নদ্রষ্টারও না!

কমরেড চারু মজুমদার লালসেলাম।

28 July in all district

ফটো : শিলিগুড়ি-হাওড়া-কলকাতা একত্রে

পুর্ব বর্ধমান

বর্তমানে দেশজুড়ে ফ্যাসীবাদকে মোকাবিলার জন্য আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গড়ে উঠেছে। এই জোটের শরিক সিপিআই(এমএল) লিবরেশন। তাই এই জোটে পার্টির ভুমিকা জোরালো করার জন্য দেশজুড়ে পার্টির অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য এবং পার্টির বিস্তারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টি ব্রাঞ্চ ও লোকাল কমিটিগুলিকে পুনর্গঠন ও পুনরুজীবন এবং পার্টি সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ডাক দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ভারতীয় বিপ্লবের স্বপ্নদষ্টা কমরেড চারু মজুমদারের ৫২তম শহীদ দিবসে ও পার্টি পুনর্গঠনের ৪৯তম বার্ষিকীতে এই অভিযানের সুচনা করার ডাক দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি।

পুর্ব বর্ধমান জেলায় বিভিন্ন ব্লকে এই দিনটি পালিত হয়। শহীদ বেদীতে মাল্যদান, নিরবতা পালন ও কেন্দ্রীয় কমিটির দেওয়া সপথ বার্তা পাঠ করে আলোচনা করা হয়। কালনা-২, মেমারী-১, সদর-১, সদর-২, মন্তেশ্বর, নাদনঘাট, কাটোয়া-২, ভাতার এবং পুর্বস্থলী-২ ব্লকে এই কর্মসুচি পালন করা হয়। পুর্বস্থলী-২ ব্লকের ফলেয়া স্টেশন বাজারে এই কর্মসুচির পরে মিছিল করে মনিপুরে পৈষাচিক নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও দাঙ্গাসৃষ্টি করে শতশত মানুষের হত্যার জন্য দায়ী বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে প্রতিবাদ সংগঠিত করা হয়।

হাওড়া

বালি-বেলুড় লোকাল কমিটি : গত ২৮ জুলাই সকাল সাড়ে নটায় জেলা সম্পাদক দেবব্রত ভক্তের উপস্থিতিতে বালি-বেলুড় লোকাল কমিটির পক্ষ থেকে বালি জোড়া অশত্থতলার শহীদবেদীতে পালিত হয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কমরেড চারু মজুমদারের শহীদ দিবস। রক্ত পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে পার্টির হাওড়া জেলা সম্পাদক দেবব্রত ২৮ জুলাইয়ের তাৎপর্য এবং বর্তমান সময়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভারত গঠনে কমরেড চারু মজুমদারের উত্তরসূরিদের ঐতিহাসিক কর্তব্যের কথা তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষদের কাছে তুলে ধরেন।

বালি গ্রামাঞ্চল : গত ২৮ জুলাই কমরেড চারু মজুমদারের শহীদ দিবস পালন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় হাওড়া জেলার বালি গ্রামাঞ্চলে নতুন বাজার এলাকায়। সিপিআই(এমএল)-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কমরেড চারু মজুমদারের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দীপক চক্রবর্তী, পার্থ মিত্র এবং বাবলু গুহ পথসভায় বক্তব্য রাখেন। পার্টি সদস্যদের ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী স্লোগানের মধ্য দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সমগ্র সভাটি সঞ্চালনা করেন বালি গ্রামাঞ্চলের লিডিং টিমের আহ্বায়ক মাধব মুখার্জী।

বাঙালপুর-হাটুরিয়া : বাঙালপুর-হাটুরিয়া লোকাল কমিটির উদ্যোগে শহীদ দিবস পালিত হয় ২৮ জুলাই, রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন নবকুমার মণ্ডল, মহিলা সমিতির আলপনা রুইদাস, দিলীপ দে, তপন সেখ, মনেস আদক ও অন্যান্য কমরেডরা শহীদ বেদীতে মাল্যদন করেন। সংক্ষিপ্ত সভা ও স্লোগানের মাধ্যমে শেষ হয় কর্মসূচি।

এই দিনেই সন্ধ্যায় জেলা সম্পাদক দেবব্রত ভক্তের উপস্থিতিতে তপন শেখের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ সভার। সেখানে গত পঞ্চায়েতের মূল্যায়ন ও আগামী সময়ে বিজেপি-আরএসএস বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

মধ্য হাওড়া লোকাল : পার্টির মধ্য হাওড়া লোকাল কমিটির পক্ষ থেকে পালিত হয় ২৮ জুলাই’এর কর্মসূচি হালদার পাড়া শহীদবেদীতে। উপস্থিত ছিলেন এই এলাকার অন্যতম পার্টি সংগঠন রতন দত্ত, লোকাল সম্পাদক পরিতোষ ব্যানার্জী সহ অন্যান্য সাথীরা।

শহীদস্মরণ কর্মসূচী ও সংক্ষিপ্ত সভার মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হয় এই অনুষ্ঠান।

আড়ুপাড়া লোকাল : আড়ুপাড়া-জগাছা লোকাল কমিটি শহীদ দিবস পালন করে। পতাকা উত্তোলন করেন বুলা মাইতি। শহীদ বেদীতে মাল্যদানের পর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সন্ধ্যায় কর্মী বৈঠক ও সংকল্প পত্র পাঠ হয়।

খণ্ড-30
সংখ্যা-26