আবেদন
নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর কাছে সিপিআই(এমএল)-এর আবেদন
post-election-situation

১২ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অভিজিত মজুমদার এক প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে আবেদনে জানান — দশম পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পেশ থেকে ভোটদান ও গণনা পর্ব পর্যন্ত শাসকদল তৃণমূলের পরিকল্পিত রিগিং, বিরোধীদের শারীরিকভাবে আক্রমণ, হত্যা ও সর্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাজ্যবাসী তীব্রভাবে সোচ্চার হোন।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পেশের প্রথমদিন থেকে ভোট গণনার দিন অবধি এই একমাস সময়সীমায় রাজ্যে নির্বাচনী হিংসার শিকার হয়েছেন ৪৩ জন সহনাগরিক। প্রাণ হারিয়েছেন হতদরিদ্র গ্রামীণ মানুষেরা। রাজ্যবাসী অসহায়ভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন পঞ্চায়েত স্তরে চলমান পাহাড়প্রমান দুর্নীতি, স্বজনপোষন ও তৃণমূলের বাহুবলীদের দ্বারা সামাজিক সন্ত্রাসকে নিরঙ্কুশ রাখতে বিরোধী দলের কর্মী ও প্রার্থীদের ওপর যুথবদ্ধ শারীরিক আক্রমণ, খুন, বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট, পুলিশের সহযোগিতায় গণনাকেন্দ্র দখল করে ফলাফল পাল্টে দেওয়ার নির্লজ্জ আত্মপ্রকাশ। তৃণমূলী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাম গণতান্ত্রিক প্রার্থীদের সমর্থনে দলীয় কর্মী ও গ্রামবাসীদের প্রতিস্পর্ধায় কতকগুলি কেন্দ্রে শাসক অনুগত দুষ্কৃতিরা পিছু হটেছে। কিন্তু রাজ্যের সর্বত্র মাত্রাছাড়া সন্ত্রাসকে অব্যাহত রাখতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের ইন্ধন, নির্বাচন কমিশনারের শাসকের তল্পিবাহকের ভূমিকায় অবস্থান করা এবং পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় কর্মীর ভূমিকায় রাখতে সফল হয়েছে শাসকদল।

ভোট গণনাকেন্দ্রে বিরোধীদলগুলির গণনাকারীদের ভয় দেখিয়ে হটিয়ে দেওয়া থেকে শারীরিক নিগ্রহে সক্রিয় থেকেছে তৃণমূলী গুণ্ডারা। এমনকি গণনা শেষে বিরোধী দলের বিজয়ীদের তৃণমূলে যোগদান করার জন্য নানান অন্যায্য, অসাধু কৌশল ও ভীতি প্রদর্শনের রাস্তা নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী আগেই এই মর্মে বিবৃতি দিয়েছিলেন।

সংবাদ মাধ্যমের সূত্রে জানা যাচ্ছে গণনা চলাকালীন গতকাল গভীর রাতে ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন আইএসএফ কর্মী। মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের অভিযোগ র‍্যাফের পোষাকে তৃণমূলের খুনে বাহিনী এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। এখনও এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের প্রকৃত পরিচয় জানা যায়নি।

আমরা এই হত্যাকাণ্ডের উচ্চস্তরীয় তদন্ত, খুনিদের কঠোর শাস্তি ও নিহতদের পরিবারগুলিকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই।

নির্বাচনী অঙ্গনকে শুধু প্রহসন নয়, বরং এক সর্বব্যাপী বধ্যভূমিতে রূপান্তর ঘটিয়েছে মমতা ব্যানার্জী পরিচালিত সরকার ও শাসকদল।

রাজ্যবাসীর কাছে আমাদের আবেদন কেবলমাত্র ধিক্কার জানানোই যথেষ্ট নয়, আসুন এই ভক্ষক ও খুনি শাসকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ সংগঠিত করি।

খণ্ড-30
সংখ্যা-23