গোটা বিশ্বকে আলোড়িত করে তুলেছে কৃত্রিম মেধা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে কর্মী সংকোচনের বিপদ নিয়ে হাজির সাক্ষাৎ এই দৈত্য। আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এই কৃত্রিম মেধার নানা সংস্করণ এখন শুধু বাজারে নয়, বিভিন্ন সংস্থা ব্যবহার করতে শুরু করায় বিশ্বজুড়েই শ্রম দুনিয়ায়, কাজের বাজারে এমনকি রাষ্ট্র ও সরকারগুলোর মধ্যেও সংশয় ও দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ঘনিয়ে উঠেছে।
এই কৃত্রিম মেধাও দেখা যাচ্ছে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের উপর বেশি নির্দয়। গোল্ডম্যান স্যাস্ এক সমীক্ষা চালায় ‘দ্য পোটেনশিয়ালি লার্জ এফেক্টস্ অফ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স অন ইকনমিক গ্রোথ’। তাতে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ জনের মধ্যে ৮ জন মহিলা এই কৃত্রিম মেধার প্রকোপে মারাত্মকভাবে নিজ নিজ পেশায় বিপন্ন হয়ে পড়েছেন, আর ১০ জনের মধ্যে ৬ জন পুরুষ এই বিপন্নতার সম্মুখীন। দেখা যাচ্ছে, ১৫টি পেশা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে এই নতুন প্রযুক্তিতে যেখানে মহিলা কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
২০২৭’র মধ্যে, এই সমীক্ষার মতে, আমেরিকায় এই কৃত্রিম মেধা ৪৯ লক্ষ কাজের ক্ষেত্রে বিরাট বদল আনবে, আর চ্যাটজিপিটি’র মতো কৃত্রিম মেধার আধুনিকতম প্রযুক্তি কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের উপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইউনিভার্সিটি ইফ নর্থ ক্যারোলিনাস্ কেনান-ফ্ল্যাগলার বিজনেস স্কুলের মতে মহিলারা যে সমস্ত পেশায় কর্মরত, তার ৮০ শতাংশই বিরাটভাবে বিপন্নতার মুখে দাঁড়িয়ে, কারণ কৃত্রিম মেধার প্রবর্তনের ফলে ওই কাজগুলোই লুপ্ত হয়ে যাবে। আরো দেখা যাচ্ছে, যে কৃষ্ণবর্ণের মহিলারাই যে সমস্ত পেশা ও কাজের সাথে যুক্ত, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
সমীক্ষা দেখিয়েছে, এই কৃত্রিম মেধার দৌলতে নতুন করে নতুন কিছু কাজের ক্ষেত্রও তৈরি হবে, তবে তা অত্যন্ত দক্ষতা সম্পন্ন কাজ বা পেশার ক্ষেত্রেই দেখা যাবে। ভারতের মতো দেশগুলোতে মহিলাদের নিয়োগ করা হচ্ছে ইনফর্মাল, নীচু মানের খুবই অদক্ষ কাজে। তাঁদের প্রশিক্ষিত করার কোনো ভাবনা বা পদক্ষেপই কোনো স্তরেই সরকারগুলোর পক্ষ থেকে দেখা যায় না। তাই এটা বলাই যায় যে এই কাজ কেড়ে নেওয়ার নতুন প্রযুক্তি শ্রম বাজারে, কাজের দুনিয়ায় বিরাট বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে, কর্মক্ষেত্রে উচ্চতর স্তরে মহিলা কর্মীরা এরফলে নতুন করে কর্মচ্যুত হওয়ার জন্য দিন গুনছেন।