গত ১৩ জুন সিপিআই(এমএল) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয় — বহু টালবাহানার পরে ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্ধকারে রেখে ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করা হল। শাসকদলের জনজোয়ার কর্মসূচির আড়ালে এলাকায় এলাকায় দলীয় নির্বাচনী কাঠামোকে সজীব করে তোলা এবং দলীয় আধিপত্য বিস্তারের জন্য বাহিনী প্রস্তুত করে তোলার পর রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিদ্যুৎ গতিতে নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণা করলো। মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার প্রথম দিনেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য প্রশাসনের কঙ্কালসার চেহারা বেড়িয়ে আসে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক দলগুলোর প্রার্থীরা যাতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারে, তার জন্য বিডিও অফিস ঘিরে রাখা (১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে), পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতিতে বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র কেড়ে নেওয়া, ছিঁড়ে ফেলা, বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মীদের উপর শারীরিক হামলা বেড়েই চলেছে। উত্তর ২৪ পরগণার সন্দেশখালি ন্যাজাট কালিনগর অঞ্চলে মজদুর ক্রান্তি পরিষদের কর্মীদের উপর কিংবা ভাঙড় অঞ্চলে বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মীদের উপর বোমা, গুলি, বন্দুক নিয়ে হামলা, কোচবিহারে গুলিবর্ষণ ২০১৮ সালের সন্ত্রাসদীর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। আমরা এই সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা করি।
কোন যুক্তিতে রাজ্যের ৭ উত্তেজনা প্রবণ জেলায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট,তা বোধগম্য হল না। হাইকোর্ট রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে শান্তি বিরাজমান বলেই ধরে নিয়েছে। আজকের আদালতের নির্দেশ শাসক দলগুলোকে পেশি শক্তি ও অর্থ শক্তি ব্যবহারের রাস্তা পরিষ্কার করল কিনা, বোঝা গেল না।
রাজ্যবাসীর কাছে আমাদের আবেদন, রাজ্যের গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে এবং জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সোচ্চার হোন। জনগণের সক্রিয়তাই গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারে।