আবেদন
পশ্চিমবঙ্গে দশম পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৩ : সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের পক্ষ থেকে বাংলার গ্রামীণ জনগণের প্রতি আবেদনপত্র
panchayat-election-2023

বন্ধু,

বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইন-১৯৭৩ অনুযনুায়ী প্রথমবারের নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলায় পঞ্চায়েতব্যবস্থা কায়েম হয়। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকার হিসাবে এই ত্রিস্তরবিশিষ্ট বিকেন্দ্রীত ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি ছিল উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও রূপায়নে গ্রামীণ জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা। এই ক্ষমতায়নের ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠবে রোজগার, খাদ্য, আবাস, শিক্ষা ও সুস্বাস্থ্য পরিষেবার নিশ্চয়তা প্রাপ্তির ভিতের ওপর। নারীর স্বাধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করা এবং ধর্ম ও জাতপাতের বিভাজনের বেড়াজাল ভেঙে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে এক কার্যকরী প্রতিষ্ঠান হিসাবে একে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ছিল শুরুর দিনগুলিতে। ৮০-র দশকের শেষদিক থেকে শাসকদলের একাধিপত্য ও স্থানীয় দলীয় নেতৃত্বের ক্ষমতাকেন্দ্রে পর্যবসিত হতে থাকে নির্বাচিত পঞ্চায়েতগুলি। ক্রমে গ্রামীণক্ষেত্রে এক দাপুটে অংশের সুবিধাভোগী সম্পন্নতা অর্জনে ব্যবহৃত হতে থাকে এই ব্যবস্থা। ৯০'র দশকের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনগুলি হয়ে উঠল শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে সন্ত্রাসের প্রতিযোগিতা। রাজনৈতিক হিংসা বহুকাল যাবত বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরিচিত অভিজ্ঞান হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।

২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস শাসকদল হিসাবে ক্ষমতায় বসে। এরপর ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়কালের মধ্যেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে পর্যুদস্ত করতে দলীয় বাহুবল ও পুলিশী সন্ত্রাসকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী বামেদের হাতে থাকা পঞ্চায়েতগুলিকে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভেঙে দিয়ে এক আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করে শাসকদল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আসর তৃণমূলের পরিকল্পিত সন্ত্রাসের নজিরবিহীন উন্মত্ততায় রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল। জনগণের হাতে যে ছিটেফোঁটা ক্ষমতার অবশেষ ছিল, তাও পার্টির দাদাদের কুক্ষিগত হয়ে পড়ল। স্বশাসিত সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও জনতার প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সেই পরিকল্পনাগুলি রূপায়ন করে গ্রামীণ জনতার ক্ষমতায়নের কাঠামোটিকে অকেজো করে তোলা হ’ল। উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ টাকার পুকুরচুরি, সংগঠিত দুর্নীতি ও লুঠপাটের আখড়া করে তোলা হয়েছে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে। প্রতিটি পঞ্চায়েত সংসদে বছরে দুটি গ্রামসংসদ ও সেইসূত্রে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামসভার মাধ্যমে জনতার অংশীদারিত্বের আইনসম্মত অধিকার আজ ভূলুন্ঠিত। দুর্নীতিতন্ত্র কায়েম করে বুভুক্ষা পীড়িত গ্রামসমাজের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে ১০০ দিনের কাজ, ফসলের ন্যায্য দাম, আবাস যোজনার সুবিধা; কৃষি সমবায়গুলিকে করা হয়েছে অকেজো, গ্রামীণ শ্রমিকেরা জীবিকার অভাবে ভিনরাজ্যে প্রবাসী শ্রমিক হতে বাধ্য হচ্ছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের ন্যূনতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। অন্যদিকে, পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও ও স্থানীয় তৃণমূল বাহুবলী নেতৃত্বের সম্মিলনে এক গ্রামীণ ‘মোড়লতন্ত্র’ কায়েম করা হয়েছে – যার মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাতের এক মোলায়েম ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেছে।

এই বিরোধীশূন্য লুঠতন্ত্রের বিরুদ্ধে গ্রামীণ সমাজ ক্রমশ ক্ষিপ্ত ও আন্দোলনমুখি হয়ে ওঠায় ১২ বছর একাধিপত্যে আসীন সরকার ও ক্ষমতাশালী দলপতিরা শঙ্কিত হয়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিকে নামিয়ে এনেছে রাজ্য সরকার, যা অধিকারের প্রশ্নটিকে মান্যতা না দিয়ে প্রকল্প সুবিধাগুলিকে সহজলভ্য করে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূলের যুবনেতৃত্ব জনগণের অসন্তোষকে প্রশমিত করতে ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মীবাহিনীকে আশ্বস্ত করতে ‘নবজোয়ার’ অভিযান সংঘটিত করেছে। এই কর্মসূচি তৃণমূলের সংগঠনের ভেতরে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেইসঙ্গে বিরোধী প্রার্থীদের ওপর হামলা বাড়িয়েছে, এমনকি মহিলারাও আক্রমণের শিকার হয়েছেন। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কিছু কিছু অঞ্চলে রাজ্য শাসকদলের পক্ষে পূর্বেকার সমর্থন আলগা হতে দেখা যাচ্ছে। বাংলার মানুষ আজ ক্রমশই হতাশ ও আস্থাহীন হয়ে পড়ছে শাসকদল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি সম্পর্কে। বিদ্রোহী অংশটিকে শায়েস্তা করতে মিথ্যা মামলা, পুলিশী সন্ত্রাস ইত্যাদি আজ শাসকের একমাত্র অস্ত্র। ২০২৩-এর দশম পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পেশ ও প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের প্রথমপর্বে ইতিমধ্যেই দলীয় সন্ত্রাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৮ জন। সন্ত্রাস একমাত্র সম্বল হয়ে ওঠায় নির্বাচন সম্পন্ন না হতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছু পঞ্চায়েত হাতে এসে গেছে শাসকদলের। এমনকি রাজ্য নির্বাচনী কমিশনারকে নিরপেক্ষতা বর্জন করে শাসকদলের প্রায় আজ্ঞাবহের ভূমিকায় দেখতে পাচ্ছি।

তৃণমূল সরকারের এই নিবিড় দুর্নীতি ও উদগ্র অপশাসনের বিরুদ্ধে জনরোষকে কাজে লাগাতে তৎপরতা বাড়িয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। দুর্নীতির অভিযোগকে ব্যবহার করে বিজেপি সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই খাতে কেন্দ্রীয় বাজেট বরাদ্দ ৩৩% কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিনে দু’বার ডিজিটাল হাজিরা, আধার সংযোগ ইত্যাদি বিধিনিয়মের ফাঁদে ফেলে গ্রামীণ শ্রমিকদের বঞ্চনার এক পরিকল্পিত আইনি ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। ভোটপর্বে সন্ত্রাস, প্রাণহানির প্রেক্ষিতে শক্তিশালী বিরোধীপক্ষের প্রতিরোধ না থাকায় বিজেপির ক্রীড়নক কেন্দ্রীয়বাহিনী মোতায়েনের আদালতি সিদ্ধান্ত জনমানসে একমাত্র প্রতিকার হিসাবে মান্যতা পেয়ে যাচ্ছে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে কোচবিহারের শীতলকুচিতে ৫ জন নিরীহ, দরিদ্র গ্রামবাসীর নির্মম হত্যালীলা আজ ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী ও দলিত দরিদ্র অধ্যুষিত গ্রামবাংলায় তাদের শাখার সংখ্যাবৃদ্ধি করে আরএসএস একদিকে বিজেপির পক্ষে মান্যতা আদায়ে তৎপর, অন্যদিকে হিন্দুত্বের ভুয়ো মতাদর্শকে কাজে লাগিয়ে ধর্মীয় বিভাজন বাড়িয়ে দাঙ্গাসঙ্কুল অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে সদা সচেষ্ট। রাজ্যে নবনিযুক্ত রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ককে ধ্বস্ত করতে রাজভবনে ‘পীস রুম’ সংরচনা ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাদান সমানে চলছে। রাজভবনের এই অতিসক্রিয়তা ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর তুলনামলূকভাবে দুর্বল বিজেপিকে অক্সিজেন যুগিয়ে চাঙ্গা করার অপচেষ্টা মাত্র। প্রতিপক্ষ হিসাবে তৃণমূল সরকারের অবিজেপি রাজ্যগুলি থেকে পুলিশ মোতায়েনের বাগাড়ম্বর কেন্দ্র-রাজ্যের শাসকদলের নিরন্তর কাজিয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটদানের অধিকারকে প্রহসনে পরিণত করতে উদ্যত।

যযুধান শাসকদলগুলি শুধমুাত্র পঞ্চায়েতস্তরে দুর্নীতির আখড়াগুলিকে বাঁচিয়ে রেখে ক্ষমতা দখলের লড়াই চালিয়ে যাবে। পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় জনগণের অধিকার ফিরিয়ে এনে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত জনগণের স্বশাসন ফেরানোর কোনো দায় এদের নেই। বুভুক্ষা ও অধিকারচ্যুতির প্রসারিত মানচিত্র বদলাতে, জনগণের অসন্তোষকে জনবিদ্রোহে পাল্টে দিতে আজ তাই প্রকৃত বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ও নির্ভয় প্রতিরোধ গড়ে তুলে জনগণের হাতে এক স্বচ্ছ, স্বাধীকারযুক্ত কার্যকরী পঞ্চায়েত ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রচার শানানোর সাথে সাথে বৃহত্তর জনশত্রু বিজেপি-আরএসএসের গ্রামবাংলা দখলের সমস্ত অপকৌশলকে প্রতিহত করতে হবে।

election-2023-in-west-bengal

এই লক্ষ্যে সিপিআই(এমএল) দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে মাটি আঁকড়ে লড়াই করে তৃণমূল-বিজেপিকে পরাস্ত করে রাজনৈতিক মেরুকরণের মোড় ঘোরাতে সচেষ্ট থাকবে। আবারও একবার বাংলার যুব-ছাত্র ব্রিগেডকে শহর ছেড়ে গ্রামভিত্তিক প্রচারের মাধ্যমে সাম্য, স্বাধীনতা ও স্বাধীকারের উজ্জ্বল মতাদর্শের ব্যারিকেড গড়ার নিবিড় কাজে ব্রতী হতে হবে। যে সমস্ত কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী নেই সেখানে বাম-গণতান্ত্রিক প্রার্থীদের পক্ষে আমাদের নিঃশর্ত সমর্থন থাকবে।

আসুন আমরা এই অঙ্গীকার মুক্তকণ্ঠে ঘোষণা করি, ‘গ্রামবাংলার প্রতিটি পঞ্চায়েত জনতার হাতে ফিরিয়ে দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবো’। কোনো হুমকি, প্রতারণা, সন্ত্রাসের কাছে আমরা মাথা নোয়াবো না। ভুয়ো মতাদর্শ ও গদী-মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারকে খন্ডন করে আমরা কঠিন, সঙ্কটদীর্ণ পথে হেঁটে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে বাংলার সংগ্রামী বামপন্থী ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবো।

আসুন আমরা দাবি জানাই, সন্ত্রাসমুুক্ত শান্তিপর্ণূ নির্বাচন পরিচালনার দায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ১০০ শতাংশ সুনিশ্চিত করতে হবে।

বাংলার গ্রামীণ জনগণের প্রতি আমাদের আবেদন সন্ত্রাসকে সাহসী প্রত্যয়ে রুখে দিন, নির্ভয়ে নিজের ভোট নিজে দিন।

আওয়াজ তুলুন -

(১) লুঠের পঞ্চায়েত হঠাও! জনগণের পঞ্চায়েত ফিরিয়ে আনতে সিপিআই(এমএল) প্রার্থীদের ভোট দিন।

(২) বিজেপি-আরএসএস’এর হিংসা ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক জনগণের সংগ্রামী ঐক্য গড়ে তুলুন। সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের দ্রুত শাস্তি সুনিশ্চিত করতে হবে।

(৩) পঞ্চায়েতকে দলতন্ত্র ও আমলাতন্ত্রের শাসন থেকে মুক্ত করো, গ্রামীণ জনতার অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করো। গ্রামসভার বৈঠককে প্রহসনে পরিণত করা চলবে না। দলবাজিমুক্ত-দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়তে হবে।

(৪) দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি চাই কিন্তু দুর্নীতির অজহুাতে ‘১০০ দিনের কাজ’ বন্ধ রাখা চলবে না। কেন্দ্র-রাজ্য বুঝি না; কাজ চাই, কাজ দাও। কাজ করেছি, বকেয়া মজুরি দাও।

(৫) প্রমোটার-জমি মাফিয়াদের হাতে কৃষিজমির লুঠ রুখতে হবে। অকৃষিজনিত প্রকল্পে গ্রামসভার ন্যূনতম ৮০ শতাংশ মানুষের সম্মতি নেওয়া কঠোরভাবে মানতে হবে।

(৬) পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় নথিভুক্ত করে প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিকের কল্যাণ ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

(৭) লিজচাষি-ভাগচাষিদের সরকারি সহায়তা সুনিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারকে ফসলের দামের গ্যারান্টি আইন করতে হবে।

(৮) মাইক্রো ফিন্যান্স কোম্পানিগুলির জুলুমবাজি বন্ধ করে, সুদের হার নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে ‘রাজ্য আইন’ করতে হবে। ঋণমকুব করতে হবে।

(৯) বাস্তু সহ আবাস যোজনায় সকলের ঘর এবং গ্রামীণ দরিদ্রদের বিনাপয়সায় ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ দিতে হবে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মকুব করতে হবে।

(১০) প্রত্যেক ৬০ ঊর্ধ্ব মানুষের বার্ধক্য ভাতা সুনিশ্চিত করতে হবে।

(১১) রেশন মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

(১২) যবুদের কাজ চাই, শিশুদের শিক্ষা চাই, নারীদের নিরাপত্তা চাই।

সিপিআই(এমএল) লিবারেশন
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি

খণ্ড-30
সংখ্যা-21