৫ মে ‘আদিবাসী মাচেৎ মাহা’ ... …
adivasi-machet-maha

অলচিকি লিপি বা সান্তালি বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা, গুরু গমকে রঘুনাথ মুর্ম্মুর জন্মদিবসকে আদিবাসী শিক্ষক দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হল, সারা বাংলা আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের পক্ষ থেকে।

এইদিন খাতড়া পাম্প মোড়ে, পন্ডিত রঘুনাথ মুর্ম্মুকে স্মরণ করে তাঁর ছবিতে মাল্যদান করা হয় এবং বিশিষ্ট সাঁওতালী কবি সাহিত্যিক মনোরঞ্জন বেসরার উপস্থিতিতে তিনজন আদিবাসী শিক্ষক মহাশয়কে সম্বোধিত করে এই দিনটিকে আগামীতে ‘আদিবাসী শিক্ষক দিবস’ হিসাবে পালন করার ঘোষণা করা হয়।

সমগ্র কর্মসূচিকে সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি ও শিক্ষক মাননীয় সুনীল মান্ডি মহাশয়। তিনি বলেন, “আদিবাসী বিভিন্ন সংগঠনগুলিকে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের পরিবর্তে একতা নিয়ে চলতে হবে, এ’প্রশ্নে আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি”।

ঝাড়খন্ড জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এই জন্মদিবস পালনে উপস্থিত হয়ে সর্বভারতীয় সভাপতি ও শিক্ষক গৌর হেমব্রম, সহ-সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ মান্ডি শিক্ষক মহাশয় হ্যামলেট বাস্কেরা অলচিকি হরফে শিক্ষা প্রদানের দাবি তোলেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজ সংস্কারক হিসাবে রঘুনাথ মুর্ম্মুর অবদান বর্ণনা করেন। পাশাপাশি নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির আওতায় আদিবাসী হস্টেল উঠিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ উঠিয়ে দেওয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়া নিপীড়িত জাতিগুলির মিলিত প্রতিরোধকে জোরদার করার শপথ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ছাত্র সংগঠন আইসা’র নেতা সুশান্ত ধীবর। প্রধান উদ্যোক্তা ও আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের নেতা সুধীর মুর্মু জানান, “আজ থেকে পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ে সেঁন্দরা (ল-বীর বাইসি) শুরু, এটা আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ, বর্তমান কেন্দ্র সরকার আমাদের ধর্ম কেড়ে নিতে চায়, তায় আদিবাসীদের প্রকৃতি ধ্বংসকারী ও বন্যপ্রাণী নিধনকারী হিসাবে প্রচার করছে কিন্তু আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের দেখানো পথ ভুলিনি। বীর বান্টা সিধু কানু ফুলো ঝানোর পথও আমরা ভুলিনি।” অবশেষে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন পন্ডিত রঘুনাথ মুর্ম্মুর কবিতা,

“বর্ণমালা আছে তোমার,
আছে তোমার ভাষা ধর্মাচরন
আছে তোমার জীবনেরই আশা।
হারিয়ে গেলে ভাষা তোমার, হারিয়ে যাবে বর্ণ,
নিজেই তুমি হারিয়ে যাবে, হারিয়ে গেলে ধর্ম।”

খণ্ড-30
সংখ্যা-14