জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় পালওয়ান!
ai-jawan

• সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দীপঙ্কর ভট্টাচার্য কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়ে এই আন্দোলনকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

• এখন আমাদের গোটা দেশকে যন্তরমন্তরের মতো করে গড়ে তুলতে হবে এবং মহিলা কুস্তিগীরদের জন্য ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।

গত ৮ মে সিপিআই(এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড দীপঙ্কর ভট্টাচার্য দিল্লির যন্তরমন্তরে কুস্তিগীরদের বিক্ষোভে যোগ দেন। যারা বিজেপি সাংসদ ব্রীজভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে সাহসের সাথে বলিষ্ঠ কন্ঠে আওয়াজ তুলেছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য রাজপথে নেমেছেম, সেইসকল কুস্তিগীরের সঙ্গে তিনি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। দীপঙ্কর ভট্টাচার্য আরও বলেছেন, বিজেপি সরকার একাধিক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্রীজভূষণকে কীভাবে আড়াল করছে এবং সমস্ত দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে! কুস্তিগীরদের আন্দোলনকে তিনি সংহতি জানিয়েছেন। কমরেড দীপঙ্কর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দেশের প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের নির্বাচনের প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। একদিকে ভারতের কুস্তিগীররা সুবিচারের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করছে, অন্যদিকে মণিপুরের জনগণের জীবন জেরবার। অথচ, কেন্দ্রের মসনদে বসে থাকা বিজেপি সরকারের নিজের দেশের জনগণের জন্য কোনও সময় নেই।”

যন্তরমন্তরে দ্বিতীয় পর্বের ধর্ণার দুই সপ্তাহ কেটে গেছে। কোর্টের হস্তক্ষেপে বিজেপি সাংসদ ব্রীজভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পর দশদিন পেরিয়ে গেছে। স্বর্ণপদক জয়ী খেলোয়াড়দের যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের কোনওরকম জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। আজ পর্যন্ত ব্রীজভূষণকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

সাতজন অভিযুক্তদের মধ্যে একজন নাবালক। তাই দুটি এফআইআর-এর মধ্যে একটি যৌন হেনস্তা থেকে শিশুদের রক্ষা (পকসো) আইনের অধীনে দায়ের করা হয়েছে। ব্রীজভূষণ সিং যদিও জেলের বাইরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কুস্তিগীরদের হুমকি দিচ্ছেন এবং বলছেন যে তাকে বিজেপি সরকারের উচ্চপদস্থ নেতারা সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন যে, যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ অথবা বিজেপি’র সভাপতি নাড্ডা তাকে পদত্যাগ করতে বলেন, তবে তিনি অবশ্যই পদত্যাগ করবেন। কিন্তু নেতা-মন্ত্রীরা এখনও সর্বত্র নীরব।

jai-palwan

আইসা, এআইসিসিটিইউ, আরওয়াইএ ও আইলাজ-এর সাথে পার্টির সদস্যদের একটি দল যন্তরমন্তরে বিক্ষোভের স্থান পরিদর্শনে গিয়েছিল। সাক্ষী মালিক ও ভিনেশ ফোগাট সহ অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের সাথে পার্টির সাধারণ সম্পাদক যোগাযোগ স্থাপন করেন।

ভারতের খ্যাতিমান কুস্তিগীরদের উপর যৌন নির্যাতনের ন্যায়বিচারের দাবিতে এই আন্দোলন গত এক দশকের জনপ্রিয় আন্দোলনগুলির চেতনাকে পুনরায় প্রজ্জ্বলিত করেছে এবং অন্যায় ও ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদের ঢেউ গোটা দেশ জুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে। কুস্তিগীরদের আন্দোলনকে সামনে রেখে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের সাথে শ্রমিক, ছাত্র, আইনজীবী ও দিল্লির অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মী-সমাজকর্মীদের যন্তরমন্তরে একত্রে জমায়েত করার এই আন্দোলনের শক্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। “জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় পালওয়ান” — স্লোগানটি বৃহৎ পরিধিতে প্রতিবাদীদের মধ্যে ঐক্য ও সংকল্পবদ্ধ চেতনার উন্মেষকে তরান্বিত করেছে।

সিপিআই(এমএল) দেশের আপামর জনগণকে কুস্তিগীরদের সমর্থনে দাঁড়ানোর কথা বলেন, ব্রীজভূষণ শরণ সিং-কে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানায় এবং লিঙ্গ ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করার এই আন্দোলনে সকলকে আহ্বান জানায়।

- সিপিআই(এমএল) কেন্দ্রীয় কমিটি

খণ্ড-30
সংখ্যা-14