ইউরোপে অতি দক্ষিণপন্থীদের উত্থান ঘটেছে এবং ঘটছে। যে সুইডেনকে এক সময় সমাজ গণতন্ত্রের ঘাঁটি বলে মনে করা হতো, সেখানে নয়া-নাজিদের মধ্যে শিকড় থাকা চরম বিদ্বেষপূর্ণ মানসিকতার বর্ণবাদী ও অভিবাসী-বিরোধী দল ‘সুইডেন ডেমোক্র্যাটস’ সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান দখল করে। তারা পাঁচজন ভোটারের মধ্যে একজনের সমর্থন পায়, এবং নতুন যে দক্ষিণ ঝোঁকা জোট সরকার ক্ষমতায় এসেছে তার কাছে এদের সংসদীয় সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই ধরনের স্বৈরাচারী দলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পোল্যাণ্ড, হল্যাণ্ড, অস্ট্রিয়া, স্পেন ও সার্বিয়া এবং অবশ্যই হাঙ্গেরিতে ক্ষমতায় বা ক্ষমতার কাছাকাছি এসেছে। হাঙ্গেরিতে আবার চরম দক্ষিণপন্থী পুতিন সমর্থক প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ও তাঁর ফিডেজ পার্টি ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। এই দলগুলো উগ্ৰ-জাতীয়তাবাদী ও বর্ণবাদী মতাদর্শ এবং অভিবাসী-বিরোধী নীতি দ্বারা চালিত, এরা নারীদের এবং এলজিবিটিদের বিরুদ্ধে জেহাদ চালায় এবং বামেদের বিরুদ্ধেও আক্রমণ হানে (প্রায়শই ‘অভিজাতদের’ ষড়যন্ত্রর অভিযোগ এনে)।
ইতালিতে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল থেকে জানা যাচ্ছে, জর্জিয়া মেলোনিই মুসোলিনির পর ইতালির সবচেয়ে দক্ষিণপন্থী সরকারের নেত্রী হবেন বলে ঠিক হয়ে রয়েছে। তাঁর ফ্রাটেল্লি দ্যা ইতালিয়া দল (ইতালির ভাইয়েরা) সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে, এবং তারা এক নতুন দক্ষিণপন্থী জোট সরকার গড়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
নীচে যে সাক্ষাৎকারটি ছাপা হচ্ছে সেটি দিয়েছেন ডেভিড বর্ডার এবং সাক্ষাৎকারটি প্রথম বেরোয় ‘বাইলাইন টাইমস’ পত্রিকার এ’বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ সংস্করণে। ডেভিড বর্ডার ‘মুসোলিনির নাতি-নাতনিরা: এখনকার ইতালিতে ফ্যাসিবাদ’ নামক পুস্তকের রচয়িতা এবং এই সাক্ষাৎকারটিতে তিনি ইতালির নয়া চরম-দক্ষিণপন্থী নেতৃবৃন্দের ঐতিহাসিক শিকড় সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন।
প্রশ্ন: মেলোনি সম্পর্কে আপনি আমাদের কী জানাবেন?
ডেভিড বর্ডার: জর্জিয়া মেলোনি অনেক কম বয়স থেকেই রাজনৈতিক আন্দোলনের কর্মী হয়ে রয়েছেন। তিনি রোমের শ্রমিক শ্রেণী অধ্যুষিত একটি জেলা থেকে এসেছেন এবং ১৯৯২ সালে ইতালির সামাজিক আন্দোলন সংগঠনে (এমএসআই) যোগ দেন। এমএসআই হলো একটা নয়া-ফ্যাসিবাদী দল, ১৯৪৬ সালে যেটির প্রতিষ্ঠা করে পরাজিত ফ্যাসিস্ত সরকারের সদস্যরা। …এর একটা দীর্ঘ এবং প্রায়শই হিংসা অনুসরণের ইতিহাস রয়েছে।
যুদ্ধ পরবর্তী দশকগুলোতে এমএসআই বরাবরই একটা ছোটো দলই ছিল, তবে মেলোনি ইতালির রাজনীতির এক উথালপাথাল সময়ে ঐ সংগঠনে যোগ দেন এবং এমএসআই’তে তাঁর কর্মজীবন গড়ে নেন।
তিনি প্রথম দিকে রোমের কাউন্সিলর ছিলেন, তারপর এমপি হন, এবং মাত্র ২৯ বছর বয়সে চেম্বার অব ডেপুটিজ’এ তরুণতম ডেপুটি স্পিকার হন। তিনি সিলভিও বারলুসকোনির শেষ সরকারে এমন একটা সময়ে যুবামন্ত্রী হন যখন তাঁর ফ্যাসিবাদ-পরবর্তী পর্যায়ের দলকে বৃহত্তর দক্ষিণপন্থী জোটে স্বাগত জানানো হয়।
অতএব দেখা যাচ্ছে যে, ১৯৯০’র দশকেই পূর্বতন ফ্যাসিস্টরা ছোটো শরিক হিসাবে বারলুসকোনি সরকারে ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশেষভাবে যা দেখা গেছে তা হলো, পূর্বতন ফ্যাসিস্টরা-সহ ঐ সরকারের অধিকাংশ দক্ষিণপন্থী দল প্রাধান্যমূলক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। গত নির্বাচনী ফলাফল হলো ঐ প্রক্রিয়ার যথার্থই চরম মাত্রায় পৌঁছানো।
প্রশ্ন: মেলোনির দল কি এমএসআই’এর মতোই, যে দলে তিনি প্রথম যোগ দিয়েছিলেন?
ডেভিড বর্ডার: হ্যাঁ এবং না। ১৯৯০’র দশকে এমএসআই তার নাম পাল্টে নতুন নাম রাখে অ্যালিয়ানজা ন্যাজিওনালে (জাতীয় স্তরের জোট) আর তারপর তারা বারলুসকোনির দলের (ফোর্জা ইতালিয়া) সঙ্গে মিশে যায়। সেই বছরগুলোতে তাদের নেতা জিয়ানফ্রাঙ্কো ফিনি ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তাদের কিছু দূরত্ব রচনা করার চেষ্টা করেন, যারমধ্যে নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশগ্ৰহণ এবং হিংসা ও স্বৈরাচার পরিত্যাগের প্রতিশ্রুতিও থাকে।
ফিনি তাঁদের দলকে বারলুসকোনির দলের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পর সেই সমস্ত লোকজন ২০১২ সালে ফ্রাটেল্লি দ্যা ইতালিয়া গঠন করেন যাঁরা মিশিয়ে দেওয়ার ঐ প্রক্রিয়াকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং পার্টি ঐতিহ্যের পুনপ্রতিষ্ঠার দাবিকে তুলে ধরেন। তাঁরা এমএসআই’এর লোগো তেরঙা অগ্নিশিখাকে গ্ৰহণ করেন এবং ফ্রাটেল্লি দ্যা ইতালিয়ার পতাকাতে এখনও এমএসআই’এর অগ্নিশিখা রয়েছে।
দল গঠিত হওয়ার পর গোড়ার দিকের বছরগুলোতে মেলোনি সেই সমস্ত ব্যক্তিদের ধিক্কৃত করার দিকে ঝোঁকেন যারা এরআগে নয়া-ফ্যাসিবাদী উত্তরাধিকারের অবসান ঘটিয়েছিলেন।
প্রশ্ন: তাহলে, ফ্রাটেল্লি দ্যা ইতালিয়া ফ্যাসিবাদী ঐতিহ্যকেই ফিরিয়ে আনতে চেয়েছে যার ওপর ভর করেই এমএসআই’এর বিকাশ ঘটেছিল?
ডেভিড বর্ডার: সঠিক কথা। জর্জিয়া মেলোনি প্রায়ই তাঁর রাজনৈতিক পূর্বপুরুষ হিসাবে জর্জিয়ো আলমিরান্তের কথা বলেন, যিনি ছিলেন এমএসআই’এর প্রতিষ্ঠাতা নেতা এবং ১৯৮৮ সালে তাঁর মৃত্যুর আগে এর অতীত জীবনের অধিকাংশ সময়ে একে নেতৃত্ব দেন। আলমিরান্তে সরকারে (যুদ্ধের সময়কার ফ্যাসিবাদী সরকারে) অংশ নিয়েছিলেন; তিনি লা ডিফেসা ডেল্লা রাজ্জা (জাতি শ্রেষ্ঠত্বের সুরক্ষা) পত্রিকায় নিবন্ধ লেখেন যাতে তিনি খোলাখুলি জৈবিক বর্ণবাদী ধারণাগুলোর প্রবক্তা হয়ে ওঠেন।
মেলোনি ১৯৯২ সালে যখন এমএসআই’তে যোগদান করেন, তখন ঐ সংগঠনের প্রধান নেতা যাঁরা ছিলেন তাঁদের অনেকেই প্রত্যক্ষভাবে (মুসোলিনির নেতৃত্বাধীন) নাজি কোলাবোরেশনিস্ট সোশ্যাল রিপাবলিক’এ যোগ দিয়েছিলেন।
অবশ্য, বিগত দশকগুলোতে যেভাবে তাঁরা সংগঠিত হয়ে পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তাতে সেটাকে ঐতিহাসিক ফ্যাসিবাদের সমগোত্রীয় বলা যাবেনা। উদাহরণস্বরূপ, তাঁরা সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণের অঙ্গীকার করেছেন, এবং মোটের উপর তাদের দলের বৃত্তে যে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলো ছিল তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।
প্রশ্ন: তবে, যে মহিলা এখন ইতালির নেত্রী হতে যাচ্ছেন তাঁর দল এবং মুসোলিনির মধ্যে প্রকৃতই এক ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে?
ডেভিড বর্ডার: একেবারে সঠিক কথা। আর, আমরা তো প্রায়ই এই ধরনের গালগল্প শুনতে পাই যে, “পার্টি তো অতীত থেকে সরে এসেছে, অতীত আর প্রাসঙ্গিক নয়, ইত্যাদি”। তবে তাঁর পার্টি প্রকৃতই যা বলছে তার দিকে তাকালে বুঝতে পারবেন যে তারা যথেষ্ট পক্ষপাতিত্ব দেখায় এবং ফ্যাসিবাদের (মাত্র) আংশিক সমালোচনা করে।
উদাহরণস্বরূপ, প্রায় এক মাস আগে জর্জিয়া মেলোনি একটা ভিডিও পোস্ট করেন যাতে তিনি তাঁর দল ফ্যাসিবাদে আচ্ছন্ন হওয়ার অভিযোগকে খারিজ করতে চেয়েছেন। এরমধ্যে যথেষ্ট চিত্তাকর্ষক ব্যাপারটা ছিল এই যে, ফ্যাসিবাদের সার্বিক বিরোধিতাকে এড়াতে তাঁর কেতাবি বুলির ব্যবহার। এটা করার একটা মার্কামারা উপায় হল ইতালির ১৯৩৮ সালের জাতিগত আইনের নিন্দা করা, যে আইনে জনজীবনে অংশগ্ৰহণ থেকে ইহুদি এবং অন্যান্য জাতির সংখ্যালঘুদের বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল … এবং আরও বলা যে ইহুদি নিধনযজ্ঞে অংশগ্ৰহণকে অবশ্যই ধিক্কার জানাতে হবে — কিন্তু সামগ্ৰিক ফ্যাসিবাদী অভিজ্ঞতার নিন্দা করা হবে না। এটা করার উদ্দেশ্য হল এই বিষয়টার আভাস দেওয়া যে, মুসোলিনি যখন হিটলারের নেতৃত্বে চলেছিলেন তখন তিনি পথভ্রষ্ট হয়েছিলেন।
অন্যান্য চরম দক্ষিণপন্থী দলগুলোর তুলনায় — যেমন ফ্রান্সের দল (মারি লা পেনের ন্যাশনাল রেলি) — এই দলটার তাই অনেক বেশি সংশয়হীন ফ্যাসিবাদী উত্তরাধিকার রয়েছে।
প্রশ্ন: মেলোনি কী লা পেনের মতো তাঁর আবেদনকে মূল ধারার করে তুলতে চেয়েছেন?
ডেভিড বর্ডার: তা চেয়েছেন, কিন্তু আংশিক ভাবে, তবে সেটা অত্যন্ত বৈপরীত্যপূর্ণ প্রক্রিয়া। মেলোনি জোরের সঙ্গে বলেছেন যে তিনি ইতালির আন্তর্জাতিক অবস্থানে হস্তক্ষেপ করবেন না, গুরুত্বের সঙ্গে বলেছেন যে তিনি রাশিয়া নয় ইউক্রেনকেই সমর্থন করেন, তিনি ন্যাটোর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং তিনি ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বদলে তাতে পরিবর্তন আনতে চান।
এরই সাথে আমরা জর্জ সোরোস (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়োনেয়ার মানবহিতৈষী) এবং বামেদের মতো ‘বিশ্বজনীনতাবাদীদের ষড়যন্ত্রর’ বিরুদ্ধে চালিত তীব্র বৈরিতাকেও দেখতে পাচ্ছি, যাদের বিরুদ্ধে ইতালির সমাজকে ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হচ্ছে। মেলোনি প্রায়শই ‘বিশাল পরিবর্তন’ তত্ত্বের ভাষার আশ্রয় নিয়েছেন যার মধ্যে দিয়ে শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়দের সরিয়ে অভিবাসী ও মুসলিমদের আনার গোপন পরিকল্পনার কথা বলা হয়।
মেলোনির এমন অনেক নীতি রয়েছে যেগুলো অভিবাসী বিদ্বেষী এবং যেগুলোর মধ্যে নিপীড়নের অত্যন্ত অদ্ভুত ধরনের ও কঠোর পথের প্রস্তাব রয়েছে, যার একটা হল অভিবাসীদের নৌকাগুলোকে আটকাতে ভূমধ্যসাগরে নৌ অবরোধের আহ্বান। মেলোনি-সহ অতি দক্ষিণপন্থীদের আন্দোলন অন্যতম যে বিষয়টায় জোর দেয় তা হল তাঁরা অভিবাসীদের সন্তান-সন্ততিদের নাগরিকত্ব প্রদানের ধারণার বিরোধী, এমনকি তারা ইতালিতে জন্মালেও নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে না। চরম দক্ষিণপন্থী দলগুলি চালিত স্থানীয় কাউন্সিলগুলোর কিছু ঘটনায় আমরা তাদের অ-ইউরোপীয় নাগরিকদের বিনামূল্যের খাবার দিতে অস্বীকার করতে দেখেছি, যদিও সেই সমস্ত শিশুরা ইতালিতেই জন্মেছে এবং এখানে থাকা ছাড়া অন্য কোনো উপায় তাদের নেই।
প্রশ্ন: ইহুদি-বিরোধী প্রচ্ছন্ন কোনো রাজনৈতিক বার্তাও কি রয়েছে?
ডেভিড বর্ডার: হ্যাঁ, তা রয়েছে, এবং দলের প্রচারে জর্জ সোরোস বেশি আক্রান্ত হওয়ার মধ্যে আমরা এটা দেখতে পাচ্ছি। তারা এই দাবিটা করে থাকে যে সোরোসই হলেন সেই ব্যক্তি যিনি ‘জাতিগত প্রতিস্থাপন’এর পিছনে রয়েছেন এবং মেলোনি তাঁর একটা পোস্টে সোরোসকে ‘কুসীদজীবী’ বলে অভিহিত করেছেন — যে শব্দটায় শক্তিশালী (ইহুদি বিরোধী) ব্যঞ্জনা রয়েছে।
প্রশ্ন: এলজিবিটি সম্প্রদায় এবং নারীদের অধিকার সম্পর্কে তাদের ধারণা কী?
ডেভিড বর্ডার: মেলোনি বলেন যে, গর্ভপাতের যে অধিকার এখন রয়েছে তিনি সেটাকে বাতিল করতে চান না। কিন্তু তাঁর দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলে আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি যে তাঁরা গর্ভপাতের সুযোগ নেওয়াকে কঠিনতর করে তুলছেন, অবাস্তব নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দিচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক সপ্তাহের বাধ্যতামূলক সময়কাল-সহ সাত সপ্তাহের সীমা বেঁধে দিচ্ছেন।
ফ্রাটেল্লি দ্যা ইতালিয়ার একটা মার্কামারা বিষয় হলো ফাটকাবাজদের, অনলাইন সমাজমাধ্যমগুলোর দ্বারা, তাঁরা যেটাকে বলে থাকেন ‘অর্থের আন্তর্জাতিক প্রজাতন্ত্র’ তদের দ্বারা আমাদের পরিচিতির ধ্বংসসাধনের অভিযোগ, যাতে আনুগত্য বা শিকড় না থাকা খন্ডীকৃত নাগরিকদের অবয়বহীন জনসাধারণ তৈরি করা যায়।
এর বিরুদ্ধে তারা প্রথাগত, বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে মিলন হওয়া পরিবারের ধারণাকে তুলে ধরে। তারমধ্যে এলজিবিটি জনগণ সম্পর্কে অত্যন্ত রূঢ় ধারণা রয়েছে যাদের প্রকৃতিবিরুদ্ধ ও শিকড়হীন বলে বর্ণনা করা হয় এবং যারা মনুষ্যোচিত বলে বিবেচিত হয়নি। এই দলের বিজয় সব ধরনের মনুষ্য বিদ্বেষী এবং প্রতিক্রিয়াশীলদের কাছে উৎসাহজনক হয়ে দেখা দেবে।
প্রশ্ন: এটা কি তাহলে ইতালীয় ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন?
ডেভিড বর্ডার: প্রতিটি নতুন দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীকে আমি কখনই ‘ফ্যাসিবাদের ফিরে আসা’ বলে অভিহিত করিনি; তবে, ফ্যাসিবাদে তাদের শিকড় এবং এই সমস্ত ধারণাকে গ্ৰহণ করার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে না পেলে আপনাকে একেবারেই দৃষ্টিহীন হতে হবে।
ইতালির সরকার যে সমস্ত নীতি অনুসরণ করছে সেগুলোকে ছাড়িয়ে মেলোনি যে উদাহরণ স্থাপন করছেন সেটা এবং রাষ্ট্র আজ যাদের নিয়ন্ত্রণে তারা এই সমস্ত ধারণার পৃষ্ঠপোষক হওয়াটা ইতালির সমাজে অত্যন্ত বিদ্বেষভাবাপন্ন পরিমন্ডলের জন্ম দেবে।
(লিবারেশন, নভেম্বর ২০২২ সংখ্যা থেকে)