খবরা-খবর
ধুবুলিয়ায় ভূমি দপ্তরে বিক্ষোভ ডেপুটেশন
land office in Dhubulia

এখন জোর খবর ‘শিবিরে জমির পাট্টা’! রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির থেকে জমির পাট্টা দেওয়া হবে। অসংখ্য গরিব মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তথা আন্দোলনের চাপে সরকার এমন পরিকল্পনা নিতে বাধ্য হয়েছে। যদিও সামনে পঞ্চায়েত ভোট, সেটাও ভীষণ বালাই! কিন্তু প্রশ্ন হলো এ’রাজ্যে তৃণমূলের রাজত্বে লক্ষ লক্ষ পাট্টাদার বর্গাদার যে উচ্ছেদ হয়ে গেলো সেটা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ কোথায়?

আজ নদীয়া জেলার ধুবুলিয়ার ভূমি দপ্তরে এই দাবিতেই সংগঠিত হল এক বিক্ষোভ ডেপুটেশন। ব্লক ভূমি আধিকারিকের কথায় বোঝা গেলো এ’বিষয়ে সরকারী নীতির অভিমুখটা কী! তিনি স্পস্টই জানালেন, জমির দখল যার তার নামেই পাট্টা হবে, পুরানো পাট্টা বাতিল হবে। বিভাগীয় এনকোয়ারী করার পর বর্তমান দখলদারকে পাট্টা প্রাপকের তথাকথিত ‘মানদণ্ড’ পূরণ করতে হবে! বলা বাহুল্য তৃণমূলের রাজত্বে ক্ষমতার দাপটকেই শেষ কথা বলে চাপিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তেমনটাই চলছে। এভাবে উচ্ছেদকে বৈধ করে তোলা হচ্ছে। ধুবুলিয়ার নওপাড়া ২নং অঞ্চলে সোনাতলা গ্রামের ৮ জন পাট্টাদার ও বেশ কয়েকজন বর্গাদার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে ডেপুটেশনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা সোচ্চার হন। চাপের মুখে বিএলএলআরও বিষয়টি পূনর্বিবেচনার আশ্বাস দিলেন। বোঝা গেল জমির অধিকার লড়েই নিতে হবে।

গতবছর এক জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যেই বলেছিলেন “ভূমি দপ্তর ঘুঘুর বাসা”! ভূমিদপ্তরের অবৈধ কাজকারবারে ভুক্তভোগী গ্রামীণ মানুষের ক্ষোভকে অভিভাবক সুলভ কায়দায় কিছুটা প্রশমিত করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। ঘুঘুর বাসা ভাঙ্গার কোনো সদর্থক পদক্ষেপ আদৌ দেখা যায়নি। ধুবুলিয়ায় কৃষ্ণনগর ২নং ব্লকে ভূমি দপ্তরের দুর্নীতির বিভিন্ন ঘটনাবলীতে দেখা যাচ্ছে, রিফিউজি দপ্তরের জমি রায়তি সম্পত্তি দেখিয়ে রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জমির রেকর্ড করার ক্ষেত্রে দালালি ঘুষের অবৈধ কারবার, মিস কেস বলে চিহ্নিত করে বছরের পর বছর মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে, চলছে ঘুষ দালালির অবৈধ কাজ। শাসক দলের নেতা-জমির দালাল-সরকারী কর্তাদের অশুভ চক্র এই অপকর্মে যুক্ত। এসব নিয়ে কয়েকটি তথ্য তুলে ধরলে বিএলএলআরও সেগুলি নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানানোর কথা বলেন। অবৈধ রেকর্ড কিভাবে হল এনিয়ে ইতিপূর্বেই একটা আরটিআই করা হয়েছিল। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তিনি তার জবাব দেবেন বলে জানালেন। পরিশেষে বিভিন্ন দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার বার্তা দিয়ে স্লোগানে মিছিলে ধুবুলিয়ায় জোড়ালো প্রচার করা হল। কমসূচিতে অংশ নেন পার্টির ধুবুলিয়া এলাকা কমিটির সদস্য সাইদুল মোল্লা, আনসারুল হক, ঠান্ডু সেখ, কলম বিশ্বাস, সুব্রত রায়, বেলা নন্দী, যুব সংগঠক অমিত মন্ডল, জেলা কমিটি সদস্য কৃষ্ণ প্রামানিক, সম্পাদক জয়তু দেশমুখ প্রমূখ।

খণ্ড-29
সংখ্যা-42