এআইসিসিটিইউ অনুমোদিত বেলারি জিলা খনি কর্মীকারা সংঘ ১১ অক্টোবর ২০২২ সান্দুর থেকে শুরু করে ৭০ কিলোমিটার পদযাত্রা ১৩ অক্টোবর ২০২২ বেলারিতে শেষ করে। তিন দিনের এই পদযাত্রা সংগঠিত হয়েছিল ২০১১ সালে খনিগুলো বন্ধ হওয়ার পর কাজ হারানো শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের দাবিকে জোরালোভাবে তুলে ধরতে। এক দশক ধরে শ্রমিকদের এই সংগ্ৰাম ন্যায্য অধিকার লাভের জন্য। পদযাত্রার সূচনা করেন সমাজ আন্দোলনের কর্মী মেধা পাটকার ও কন্নড় অভিনেতা চেতন অহিমসা।
তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে মেধা পাটকার পদযাত্রার গুরুত্ব প্রসঙ্গে বলেন, এই পদযাত্রা হল শ্রমিকদের জীবিকা, সমান অংশ, পরিবর্তন এবং ন্যায় লাভের জন্য। কর্পোরেটপন্থী এবং ‘জল, জমি জঙ্গল’এর বেসরকারিকরণে উদ্যত যে সরকার, সেই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শ্রমিক শ্রেণী এবং কৃষকদের সংগ্ৰামকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং এটাও প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যে ভারতবর্ষ শ্রমিক এবং কৃষকদের শ্রমে গড়া। সরকারের নামানো সাম্প্রদায়িক এজেন্ডার মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন হল ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে জনগণের মধ্যে বিভাজন ঘটতে না দেওয়া। তিনি আরও বলেন, সরকার বলছে যে তারা জনগণকে সবকিছু ন্যূনতম দেবে — ন্যূনতম মজুরি, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য; আমরা কিন্তু এটা গ্ৰহণ করব না, আমাদের চাই সমান অংশ। যা কিছুতে আমাদের ন্যায্য অধিকার তারজন্যই আমাদের সংগ্ৰাম, আমাদের লড়াইটা সংবিধানের বুনিয়াদি মূল্যকে রক্ষা করার জন্যও।
চেতন অহিমসা বলেন, ন্যায় লাভের একমাত্র উপায় হল সংগ্ৰাম, এবং এই বিষয়টাকে দেখিয়ে দিয়েছে কৃষক-বিরোধী আইন প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করা কৃষকদের সংগ্ৰাম। খনি শ্রমিক এবং তাদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন তিনি ব্যক্ত করেন।
সান্দুর থেকে পদযাত্রার সূচনায় শ্রমিকরা জানান, জরিমানা হিসাবে যে ১৯,৪৪৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে তা শ্রমিকদেরই শ্রমের ফসল, এবং শ্রমিকরা তার ন্যায্য অংশ চায়। পদযাত্রা বহু গ্ৰাম পরিক্রমা করে এবং তাতে নারী, শিশু, প্রবীণ নাগরিকরা ভালো সংখ্যায় পদযাত্রায় অংশ নিয়ে শ্রমিকদের দাবিগুলোকে তুলে ধরেন। আর গ্ৰামের জনগণও শ্রমিকদের সংগ্ৰামে পরিপূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
পদযাত্রা ৭০ কিলোমিটার পূর্ণ করার পর ১৩ অক্টোবর বেলারির ডেপুটি কমিশনারের অফিসের বাইরে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি কতৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবিগুলোকে বিবেচনার আশ্বাস দেন এবং শ্রমিকদের জন্য বিশেষ পুনর্বাসন প্যাকেজের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। শ্রমিকরা যে বিশেষ পুনর্বাসনের প্রস্তাব করেছেন তা নিয়ে আলোচনার জন্য বেলারির ডেপুটি কমিশনারের তত্ত্বাবধানে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রমিকদের অধিকারকে আর উপেক্ষা করা সম্ভব নয়, এবং সরকারের উচিত অবিলম্বে উদ্যোগ নিয়ে খনি শ্রমিকদের প্রতি সংঘটিত ঐতিহাসিক অন্যায়ের সুবিচার করা। বেলারির খনি শ্রমিকদের এই সংগ্ৰাম ন্যায়, মর্যাদাপূর্ণ জীবন এবং সমান অংশের জন্য।