দেশের বৃহত্তম আর্থিক বর্গ, কৃষি-শ্রমিকদের আর্থিক দুরাবস্থা দিনের পর দিন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সংখ্যায় প্রায় ১৪ কোটি এই বিপুল সামাজিক অংশটি সবচেয়ে দরিদ্র, সবচেয়ে কম আয় করে, কোনোক্রমে টিঁকে থাকতে বিভিন্ন সময়ে মরশুমি চরিত্রের নানান ধরনের কাজ করতে বাধ্য হন।
কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা যায়, গত পাঁচ বছরের পুরুষ কৃষি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে প্রতি বছরে মাত্র ১৫ টাকা করে, অর্থাৎ, বছরে ৬ শতাংশ হারে। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে বৃদ্ধি মাত্র ২৯ শতাংশ।
২০২২’র আগস্টে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, একজন পুরুষ কৃষি শ্রমিকের মজুরির হার দৈনিক ৩৪৩ টাকা। এদিকে, একই কাজে একজন মহিলা কৃষি শ্রমিক পান দৈনিক ২৭১ টাকা। অর্থাৎ, পুরুষের তুলনায় মহিলা শ্রমিকদের মজুরি ২০ শতাংশ কম।
এটা লক্ষণীয়, গ্রামাঞ্চলে সবচেয়ে কম মজুরির কাজগুলো করেন সামাজিক ভাবে সবচেয়ে নিপীড়িত সামাজিক স্তর তপশীলি জাতি ও উপজাতি অংশের মানুষেরা। মজুরির ক্ষেত্রে এই বৈষম্য দিনের পর দিন বজায় রয়েছে। প্রচণ্ড কম হারের এই অনিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন দেশের বৃহত্তম অংশের মানুষ। বুঝতে অসুবিধে হয় না, দেশের অর্থনীতির আভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে, এই বিপুল সংখ্যাধিক্য জনসংখ্যার ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো কতটা জরুরি, যা আমাদের আর্থিক নীতিকাররা আজ পর্যন্ত আমলই দিল না।
আজ পর্যন্ত এই বৃহত্তম নিপীড়িত সামাজিক স্তরটির জন্য আইনি সুরক্ষা, ভদ্রস্থ মজুরি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কাজের নিশ্চয়তা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সরকার নীরব। এই দাবিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠবে আগামীর লড়াই।