খবরা-খবর
“কারারুদ্ধ ভারত” মুক্তির দাবিতে দিল্লীতে সোচ্চার নাগরিক সমাজ
Delhi is vocal

কয়েকশ ছাত্রীছাত্র, টিচার, আন্দোলনকর্মী ও দিল্লীর সহনাগরিকেরা “ইন্ডিয়া বিহাইন্ড বারস্” প্রেস কনফারেন্সে সামিল হন। আন্দোলনকর্মী ও কারাবন্দীদের পরিবারের মানুষেরা সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হন।

৮ অক্টোবর প্রবল বৃষ্টির মধ্যে নাগরিকেরা দিল্লী প্রেস ক্লাব উপছে হাজির হন ইউএপিএ, পিএসএ, এনআইএ ইত্যাদি আইনে কারারুদ্ধ রাজনৈতিক বন্দীদের সংহতিতে। এইসব বন্দীদের পরিবারের লোকজন বন্ধুদের সাথে নিয়ে টিচার ও এক্টিভিস্টরা একযোগে আওয়াজ তোলেন বিজেপি রাজত্বে গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে।

রাজনৈতিক আন্দোলনের অন্যতম কর্মী এবং খালিদ সাইফির স্ত্রী নার্গিস সাইফি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “উমর খালিদের ওপর যে অবিচার চালানো হচ্ছে তা দেশের ওপরই অবিচার। খালিদ তো দেশের সংবিধানের জন্যই লড়ছিলেন। বিজেপির বিদ্বেষে কারাবন্দী নাগরিকদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব”। সিপিআই (এমএল) সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে এই লড়াই স্বাধীনতা সংগ্রামের মাত্রায় তাৎপর্যপূর্ণ। এই ঘৃণা ও হিংসার শাসনের বিরুদ্ধে লড়তে এক নতুন রাজনৈতিক চেতনায় আমাদের জাগ্রত হতে হবে।” দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এবং হানি বাবুর পার্টনার জেনি রোয়েনা ইউএপিএ-র বিরুদ্ধে বলেন, “আর কোনোভাবে মুখ বন্ধ না করতে পারলে তখন ওদের শাস্তি দেওয়ার হাতিয়ার হয় ইউএপিএ”।

রাজ্যসভার সাংসদ মনোজ ঝা বলেন, “আমি সংসদে হাজির ছিলাম যখন সংসদে ইউএপিএ পেশ করা হয়েছিল। তখন আমরা যা আশঙ্কা ও সমালোচনা ব্যক্ত করেছিলাম সেগুলি সবই বাস্তব হচ্ছে বর্তমানে সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তির ওপর নির্মম আক্রমণের মাধ্যমে”। আন্দোলনের কর্মী এবং জিএন সাইবাবার সহযোগী বসন্ত বলেন, “সাইবাবা বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন শারিরীক অসুস্থতায় ভুগছেন। নাগরিকদের প্রতি এই সরকারের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা বা সহমর্মিতার বেসিক সেন্সটুকুও নেই”।

Civil society in Delhi is vocal

রাজনৈতিক আন্দোলনের কর্মী এবং উমর খলিদের বন্ধু বনজ্যোৎস্না লাহিড়ি বলেন, “যেসব মামলা, সওয়াল বা আইনকে আমাদের উদ্ভট মনে হয় সেই সবকিছুকে এই একনায়ক সরকার স্বাভাবিক বিষয় করে তুলেছে”। প্রবীণ আইনজীবী কলিন গনজালভেস বলেন, “পৃথিবীতে কোনও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই পুলিশ ও রাজনৈতিক শাসককে চরম ক্ষমতা দেয় না কে টেররিস্ট তা ঠিক করার। অধ্যাপক নন্দিনি সুন্দর বলেন, “এখন তো পুলিশই ঠিক করে দিচ্ছে দেশের বুদ্ধিজীবীরা কী লিখবেন না লিখবেন।’’

স্বাধীন সাংবাদিক নেহা দিক্ষিত বিচারবিভাগের স্বাতন্ত্র্য সম্পর্কে বলেন, “নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতগুলির সম্পূর্ণ রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে, কোর্টের সিনিয়র আধিকারিকরাই এখন স্বাধীন সাংবাদিক ও এক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে। এই সরকার এবং আরএসএস বিচারবিভাগের স্বাধীন চরিত্র ধ্বংস করে দিয়েছে”। দ্য ওয়্যায়ারের সিনিয়র এডিটর আরফা খানুম বলেন, “সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললে নির্যাতনের আশঙ্কা এখন সকলের মনে। ভয়কে এইভাবে স্বাভাবিক করে তোলার বিরুদ্ধে লড়তে হবে সাহস নিয়ে”।

ইউএপিএ, পিএসএ, এনআইএ, আফস্পা বাতিল কর। সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্ত কর। সমস্ত বন্দীদের অবিলম্বে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা কর।

– আইসা-এআইএলএজে-আরওয়াইএ

খণ্ড-29
সংখ্যা-39