বিহারে সাফাই ও জল সরবরাহ কর্মীরা ধর্মঘটে
supply workers are on strike in Bihar

এআইসিসিটিইউ অনুমোদিত বিহার রাজ্য আঞ্চলিক পৌরনিগম শ্রমিক মহাসঙ্ঘ এবং বিহার আঞ্চলিক যৌথ শ্রমিক সংঘর্ষ মোর্চা গত ২৭ আগস্ট থেকে রাজ্যব্যাপী এক অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যে সমস্ত দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই ধর্মঘট, সেগুলি হল –

১) দৈনিক/ঠিকা কর্মীদের নিয়মিতকরণ।
২) সমকাজে সমবেতন।
৩) ঠিকা ব্যবস্থার বিলোপ।
৪) কর্তব্যরত অবস্থায় কোনো শ্রমিকের মৃত্যু হলে তার ওপর নির্ভরশীলদের সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি।
৫) পরিচয়পত্র চালু করা।
৬) ইপিএফ ও ইএসআই সুবিধা।
৭) সরকারি কর্মচারীদের মতো অবসরকালীন সুবিধা, পেনশন, নিয়মিত কর্মীদের এসিপি বা পদোন্নতি নিশ্চিতকরণ।
৮) ৭ম বেতন কমিশনের পর্যালোচনা।
৯) ৫ম ও ৬ষ্ঠ বেতন কমিশনের সংশোধন থেকে বকেয়া বেতন।
১০) বেতন থেকে কেটে নেওয়া পিএফের টাকা কর্মীদের একাউন্টে জমা করা।

এআইসিসিটিইউ’র বিহার শাখার যুগ্মসচিব মুকেশ মুক্ত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং ধর্মঘটের জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, দৈনিক/ঠিকা সাফাই ও জল সরবরাহ কর্মীরা ১৫ বছর ধরে পৌর নিগমগুলিতে কাজ করে আসছেন। নিয়মানুযায়ী তাদের ২৪০ দিন পর নিয়মিত করার কথা, কিন্তু সরকার তাদের নিয়মিত কর্মী হিসেবে ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়েছে, শুধু তাই নয়, তাদের কাজের সুযোগ শেষ করে দিয়ে তা অন্য ঠিকেদার সংস্থায় দিয়ে দিচ্ছে। ফলে এই শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ। এই শ্রমিকেরাই শহরকে জঞ্জালমুক্ত করে শহরবাসীকে নারকীয় অবস্থা থেকে উদ্ধার করে এবং গোটা শহরে জল সরবরাহ করে। এমনকি কোভিডকালেও তারা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিকদের জন্য এই পরিষেবা চালিয়ে গেছে। তারফলে অনেক শ্রমিক কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন। তারা বছরের পর বছর ধরে লাগাতার তাদের দাবিগুলি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছেন, কিন্তু তাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেনি সরকার।

মুকেশ মুক্ত বলেন, মহাসঙ্ঘের উদ্যোগে অনেকগুলি পৌরনিগম শ্রমিক সংগঠনের একটি যৌথফ্রন্ট গঠিত হয়েছে এবং কয়েক দফায় আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে, কিন্তু তবুও সরকার নীরবই থেকেছে। ১৩ আগস্ট পাটনায় মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের সামনে এক বিশাল বিক্ষোভ সংঘটিত হয়, কিন্তু তারপরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এবং কোনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ডাকও দেওয়া হয়নি, ফলত শ্রমিকরা ২৭ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

আগামীদিনে ভাগলপুর সহ রাজ্যজুড়ে পৌর কর্মীদের ধর্মঘট দেখা যেতে পারে। দাবি পূরণ না হলে ধর্মঘট হবেই। ধর্মঘট শ্রমিকদের অধিকার, এরফলে যে প্রভাব পড়বে তার জন্য রাজ্য সরকার দায়ী থাকবে। এআইসিসিটিইউ দাবি করছে, অনতিবিলম্বে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ডাক দিতে হবে এবং ধর্মঘটের সমাপ্তি হবে শ্রমিকদের দাবি পূরণ হওয়ার পর।

খণ্ড-29
সংখ্যা-36