গত ৩০ আগস্ট, কৃষিমজুর ও গ্রামীণ মজুরদের সংগঠন আয়ারলা’র পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল বিহারের রাজস্ব ও ভূমি সংস্কারক মন্ত্রী কুমার মেহেতা ও গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রবণ কুমারের সাথে দেখা করে স্মারকলিপি দেয়। আয়ারলা সম্পাদক ধীরেন্দ্র ঝা বলেন, বিহারে জমির অভাব বা ভূমিহীনতা হল অন্যতম প্রধান সমস্যা। জন্মহার বৃদ্ধির কারণে বিহারের বহু মানুষ ঘরহীন-ভূমিহীন৷ পূর্বতন সরকারের আমলে যাদের কাছে বসত-ভিটার কাগজপত্র ছিল, তাদেরও নিজেদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এধরনের যথেচ্ছাচারের মাধ্যমে জনগণকে জমি-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
ভূমি সংস্কার মন্ত্রীকে প্রতিনিধিরা বলেন, সরকারি জমিতে বসবাসকারি গরিব মানুষের প্রত্যেকের ওপর সঠিক সমীক্ষা প্রয়োজন। সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে এরজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। এই সমীক্ষায় সমাজের বুদ্ধিজীবী অংশ, দলিত, শ্রমিক ও গরিব শ্রেণী এবং গবেষকদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধিদের রাখতে হবে। এদের সকলের উপস্থিতিতে সমগ্র সমীক্ষাটি চলবে। স্থান সমীক্ষায় আয়ারলা সর্বোতভাবে যুক্ত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। যাদের কাছে জমির পাট্টা আছে, তাদের কোনওভাবেই উচ্ছেদ করা যাবে না — এই বিষয়টা সরকারকে সুনিশ্চিত করতে হবে, একইসাথে এইসমস্ত পাট্টা বাতিলের ষড়যন্ত্র করা চলবে না। বেসরকারি জমিতে তৈরি বস্তিগুলো উচ্ছেদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হবে। অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত এখন শহরের কর্পোরেশনের অংশ হয়েছে এবং অনেক ছোট চটি-বাজারকে পৌরসভার চেহারা দেওয়া হয়েছে। তাই শহরাঞ্চলেও বাসস্থানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি বরাদ্দ করা প্রয়োজন। আদালতের একতরফা রায় রুখতে পাট্টাসহ জমি দখলকারীদের আইনি সহায়তা প্রদান করতে হবে।
গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে যেসমস্ত দাবি আয়ারলা নেতৃত্ব তুলে ধরেন, সেগুলো হল — খরার পরিপ্রেক্ষিতে এমএনআরইজিএ প্রকল্পের কাজ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করতে হবে, এইবছর এই প্রকল্পের কাজ ১০০ দিন চালাতে হবে, প্রকল্পে নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, প্রকল্পে কাজ দেয়না — এমন কর্মকর্তাদের বেতন থেকে বেকার ভাতা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করতে হবে, প্রকল্পের তদারকি করার কাউন্সিল গঠন করতে হবে, প্রয়োজনমতো কাজ ও সাপ্তাহিক অর্থ প্রদান সুনিশ্চিত করতে হবে, বিহার সরকারকে এই প্রকল্পের মজুরির সাথে ২৫ টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে, খাল-নদী-পুকুর-বাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা ও সংস্কার করাকে প্রকল্পের কাজের সাথে যুক্ত করতে হবে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী প্রকল্প কর্মীদের ৩০,০০০ টাকা বেতন সুনিশ্চিত করতে হবে।
আগামীদিনে আয়ারলা বিহার জুড়ে ‘দরিদ্র পুনর্বাসন’ অভিযান করবে।