অগণতান্ত্রিক ‘আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে’ বৈধতার ছাপ সর্বোচ্চ আদালতের
The Supreme Court's stamp_0

গণতন্ত্রের অলঙ্ঘনীয় শর্ত হল বিরোধীপক্ষের সবল উপস্থিতি। সেই বিরোধীপক্ষের অস্তিত্বকে বিলীন করতে নিরন্তর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আর সরকারের এই কাজে সহায়তা জুগিয়ে চলেছে গোটা বিচার ব্যবস্থা, সরকারের গোটা পীড়নযন্ত্রই পাচ্ছে আইনি মদত। যে পিএমএলএ বা আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট বা ইডি’র ক্ষমতাকে লাগামহীন করে তোলা হয়েছে, যে আইনকে সর্বোচ্চ আদালত এর আগে ‘স্বেচ্ছাচারী’ বলেছিল, সেই আইনে ইডি’র ক্ষমতায় বৈধতার স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়।

পিএমএলএ আইন তৈরি হয়েছিল ২০০২ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী জমানার শেষ দিকে, মনমোহন সিং’এর ইউপিএ জমানায় তা সচল হয় এবং নরেন্দ্র মোদী জমানায় বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে তা দানবীয় রূপ নেয়। আর্থিক তছরূপ প্রতিরোধ আইনে ইডি’র লাগামহীন ক্ষমতার বিরোধিতা করে সর্বোচ্চ আদালতে ২৪০টিরও বেশি মামলা হয়েছিল। কিন্তু সমস্ত বিরোধী যুক্তিকে খারিজ করে বিচারপতি এ এম খানউইলকর, দীনেশ মাহেশ্বরী ও সি টি রবিকুমারের বেঞ্চের রায় ইডির হাতে তুলে দেওয়া যথেচ্ছ ক্ষমতাকে ‘সংবিধান অনুগত’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা সরকারের পীড়ন অভিপ্রায়েই প্রেরণা সঞ্চারের অন্য নাম। বিভিন্ন সংশোধনীর পরিণামে আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের দানবীয়তা কী আকার নিয়েছে তার দিকে তাকানো যাক।

গোড়ায় এই আইনে বলা ছিল, অন্য কোনো তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করে এফআইআর দায়ের করলে তবেই কোনো স্থানে বা ব্যক্তির উপর ইডি তল্লাশি চালাতে ও সম্পত্তি আটক করতে পারবে। কিন্তু আইন সংশোধন করে এই সংস্থানকে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশের এফআইআর’এর সমতুল্য ইডি’র ইসিআইআর না দিয়েই, অর্থাৎ, অভিযোগ কি তা না জানিয়েই তল্লাশি ও গ্ৰেপ্তারির অধিকারকে আইনসম্মত করা হয়েছে। কারুর অধীনে থাকা সম্পত্তির সঙ্গে আইনে উল্লিখিত অপরাধগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ থাকলেই তিনি অপরাধী বলে গণ্য হয়ে ইডি’র তদন্তের আওতায় আসবেন। বেআইনি পথে অর্জিত সম্পত্তি গোপন করলে বা সেটাকে সৎপথে অর্জিত সম্পত্তি বলে চালানোর চেষ্টা করলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অপরাধে জড়িত বলে বিবেচিত হয়ে ইডি’র নাকানি-চোবানি খাওয়ানো তদন্ত প্রক্রিয়ার মুখে পড়বেন। এছাড়া, প্রতারণা, জালিয়াতি, প্রবঞ্চনা, অপহরণ এবং এমনকি কপিরাইট লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলিও আইনে সংযোজিত অপরাধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় নিশানা বানানো মানুষের অভাব ইডি’র কখনই হবে না।

এই আইনের আর একটা দানবীয় বিধান হল — ইডি’র অফিসারদের কাছে অভিযুক্ত কোনো বয়ান দিলে তা তথ্যপ্রমাণ বলে স্বীকৃত হবে। পুলিশ বা সিবিআই’এর ক্ষেত্রে তা প্রমাণ বলে গ্ৰাহ্য হওয়ার নয়, পুলিশের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তির নিপীড়নের মাধ্যমে আদায় হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে বলে। ইডি’র অফিসারদের কাজের ধারা পুলিশের কাজের অনুরূপ হলেও সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের বিদগ্ধ বিবেচনায় ইডি অফিসাররা পুলিশের তুল্য নন, আর তাই তাদের কাছে দেওয়া বয়ান বা স্বীকারোক্তি — তা যেভাবেই আসুক — তথ্যপ্রমাণ বলে স্বীকৃত হবে। এরসাথেই রয়েছে যে কাউকে ডেকে আনা, অর্থাৎ সমন পাঠানো ও গ্ৰেপ্তারির যথেচ্ছ অধিকার। কারুর কাছে সমন পাঠানো হলে সাক্ষী না অভিযুক্ত কী হিসাবে ডাকা হচ্ছে, তা জানানোর দায়ও ইডি অফিসারদের নেই। এই বিপুল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠা ইডি অফিসারদের কেউ সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন ভোগ করা সেনাদলের সমতুল্য বলে জ্ঞান করলে তাকে বোধ হয় খুব একটা দোষ দেওয়া যাবে না।

এই আইনে জামিনলাভকে একরকম অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। জামিনের শর্ত হিসাবে আইনে বলা হয়েছে, গ্ৰেপ্তারের পর কেউ জামিনের আবেদন করলে বিচারক বা বিচারপতিকে আগে সেই জামিনের বিরোধিতা করার সুযোগ সরকারি পক্ষের উকিল বা পিপিকে দিতে হবে। আর সেই পিপি জামিনের বিরোধিতা করার পর বিচারক যদি মনে করেন যে, অভিযুক্তকে অপরাধী নয় বলে বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে এবং জামিনে থাকার সময় তিনি কোনো অপরাধ করবেন না, সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের জামিন লাভ সম্ভব হতে পারে। কিন্তু পিপি জামিনের বিরোধিতা করার পর মামলার ভারপ্রাপ্ত বিচারক জামিন মঞ্জুরিতে কতটা নিঃশঙ্ক হতে পারবেন? নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্ট এবং এমনকি সর্বোচ্চ আদালতও যেভাবে রাষ্ট্রের চোখেই অভিযুক্তকে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, তাতে জামিন ব্যতিক্রম এবং কারাবাসই নিয়ম হয়ে উঠেছে (সম্প্রতি মহম্মদ জুবেরের জামিন লাভ এক ব্যতিক্রমী ঘটনাই)। আর নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার যে দায় অভিযুক্তর ওপর বর্তানো হয়েছে, তার সুযোগ অভিযুক্ত কতটা পাবেন আর তাঁর বক্তব্যই বা কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে?

আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের দানবীয়তা বাড়ে ২০১৯ সালে আইনকে সংশোধন করার পর। সে সময় রাজ্যসভায় বিজেপি’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সেখানে ভোটাভুটি এড়াতে অর্থবিল রূপে এই সংশোধনীগুলো পাশ হয়েছিল, এবং তা যথার্থ ছিল কিনা সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের এক বেঞ্চ তার বিচার করবে। সে যাই হোক, পরিসংখ্যান বলছে, ঐ সংশোধনীগুলোর পর মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফার দু’বছরে ইডি আগের পাঁচ বছরের তুলনায় তিনগুণ মামলা দায়ের করেছে। পরিসংখ্যান আরও জানাচ্ছে, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জমানায় যেখানে মাত্র ১১২টি তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি, মোদী জমানায় ২০১৪ থেকে ২০২২ সালে সেখানে তল্লাশি চালানো হয়েছে ৩,০৮০টি। এই বিপুল পরিমাণ তল্লাশি ও সম্পত্তি আটকের ঘটনাকেই বিজেপি আইনটার সার্থকতা ও সাফল্য হিসাবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই বলে চালাতে চাইছে। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জয় ভার্মা বলেছেন, “মোদী সরকারের অধীনে আর্থিক তছরূপের ঘটনায় ইডি’র হানা ২৬ গুণ বেড়েছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িত ৯৯,৩৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আটক হয়েছে, যেখানে ২০০৪ থেকে ২০১৪’র মধ্যে কংগ্ৰেস সরকারের আমলে আটক হয়েছিল মাত্র ৫,৩৪৬ কোটি টাকার সম্পত্তি।…” কিন্তু তল্লাশি, সম্পত্তি আটক ও গ্ৰেপ্তারির পরিমাণের ব্যাপকতাই কি আইনের সার্থকতা ও সফলতার একমাত্র নির্দেশক হতে পারে? প্রতিহিংসা ও বিরোধীদের হেনস্থা ঘটানোর অভিপ্রায়ও কি তল্লাশিকে বাড়িয়ে তুলতে পারেনা? পশ্চিমবাংলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্ৰেপ্তারি এবং ইডি’র বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা সত্ত্বেও বাস্তব সত্য এটাই। ইডি’র চালানো মামলাগুলোয় অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার হারকেই আইনের যথার্থতা এবং ইডি’র কার্যকলাপের পক্ষপাতশূন্যতা ও আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধের একনিষ্ঠতার মাপকাঠি বলে ধরা যেতে পারে। এই ব্যাপারে পরিসংখ্যান কিন্তু ইডি’র বিপরীতেই ব্যাপক হারে ঝুঁকে আছে, এই আইনে তাদের চালানো মামলাগুলোয় অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার হার ১ শতাংশেরও কম, মাত্র ০.৫ শতাংশ। অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার এই অকিঞ্চিৎকর হার বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ভাষ্যকারদের এই অভিযোগকেই অভ্রান্ত বলে প্রতিপন্ন করছে যে, আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের প্রয়োগ হচ্ছে প্রতিহিংসা চালিত হয়ে রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং বিরোধীদের দমনে মোদী সরকার ইডি’কে তাদের অস্ত্র করে তুলছে। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এবং কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের রায় সম্পর্কে অভিমত পোষণ করতে গিয়ে যা বলেছেন তা এই প্রসঙ্গে যথেষ্ট প্রণিধানযোগ্য — “গত বছর আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্ট নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে জানতে চায় যে কতজন আইন প্রণেতার বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে তদন্ত চলছে। মোট ১২২ জন বর্তমান ও প্রাক্তন আইন প্রণেতাদের মধ্যে মাত্র তিনটে নাম ছিল শাসক দল বিজেপির থেকে। এরথেকে কি এটাই বুঝতে হবে যে শাসক দলে অপরাধী বলতে গেলে কী নেই? তা একেবারেই নয়। এই বিষয়টা তদন্তকারী সংস্থার বেছে-বেছে অপব্যবহারকেই দেখাচ্ছে।… অভিযুক্ত নেতারা শাসক দলে যোগ দিলেই যে মামলাগুলো হিমঘরে চলে যায়, সেই ঘটনাগুলোকেও মাথায় রাখতে হবে।…”

আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের সমস্ত দানবীয় বিধিতে সিলমোহর দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের যে বেঞ্চ, তার নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি এ এম খানউইলকর। অবসর নেওয়ার মাত্র দু’দিন আগে ২৭ জুলাই তিনি এই রায়টি দেন। তাঁর দেওয়া আগের রায়গুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে, ব্যক্তি স্বাধীনতাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরায় তাঁর প্রবল অনীহা, বিপরীতে, সরকারের পীড়ননীতি ও দমনস্পৃহাকে শক্তিশালী করাতেই তাঁর অভিনিবেশ। বিষয়টির প্রতিপাদনে তাঁর দেওয়া কয়েকটি রায়ের উল্লেখ যথার্থ হবে বলেই মনে হয়। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে অর্থ জোগানোয় অভিযুক্ত জহুর আহমেদ সাহ ওয়াতলির জামিন আবেদনের রায়ে তিনি বললেন, জামিনের শুনানি প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রমাণগুলোর বিশদ বিচার বা কাটাছেঁড়া করার প্রয়োজন নেই, আর এইভাবে তিনি ইউএপিএ আইনে জামিন লাভকে একেবারেই দুরূহ করে তোলেন, যে প্রতিবন্ধকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। শবরিমালা মামলায় তিনি প্রথমে ঋতুমতী নারীদের মন্দিরে ঢোকার পক্ষেই দাঁড়ান। কিন্তু এর একবছর পর শবরিমালা পুনর্বিবেচনা মামলায় সম্পূর্ণ বিপরীতে ঘুরে যান, এবং বলেন তাঁর আগের অবস্থান ভুল ছিল। জাকিয়া জাফরি ও হিমাংশু কুমার মামলায় (এই মামলার রায় তিনি না লিখলেও বেঞ্চে থেকে রায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন) তিনি রাষ্ট্রের নিপীড়নের বিরুদ্ধে আবেদনগুলিকে খারিজ করে আবেদনকারীদেরই অভিযুক্ত প্রতিপন্ন করে তাদের গ্ৰেপ্তারে প্ররোচনা দেন এবং হিমাংশু কুমারের ওপর পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা চাপান। এই ধরনের মামলাগুলোর বিচারের ভার, যেগুলোতে রাষ্ট্রের নিপীড়নের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার প্রার্থিত, খানউইলকরের মতো বিচারপতিদের হাতে ন্যস্ত হয় কেন? কারণ, সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি সেটাই চান। গত ৮ আগস্টের দ্য টেলিগ্ৰাফ পত্রিকার এক সংবাদ নিবন্ধে উদ্ধৃত হয়েছে বরিষ্ঠ অ্যাডভোকেট ও রাজ্যসভার সদস্য কপিল সিব্বলের এই প্রাসঙ্গিক মন্তব্য — “প্রধান বিচারপতি স্থির করেন কোন মামলা কার কাছে যাবে, সেটা কখন শোনা হবে। এই ধরনের আদালত স্বাধীন হতে পারে না। সংবেদনশীল মামলাগুলো, যাতে সমস্যা আছে, অবধারিতভাবে যায় গুটিকয়েক বেছে নেওয়া বিচারপতির কাছে। রায় কী হবে তা আমরা জানি।” প্রসঙ্গত, কপিল সিব্বল জাকিয়া জাফরি মামলায় আবেদনকারী জাফরির অ্যাডভোকেট ছিলেন।

কয়েকদিন আগে সংবাদপত্রে ছোটো একটা খবর বোধকরি অনেকেরই দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি, ছোটো হলেও যার তাৎপর্য একটুও কম নয়। গত ৩ আগস্ট মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক আগরওয়াল পান্না জেলার কালেক্টরকে শাসক দলের ‘রাজনৈতিক এজেন্ট’ বলে অভিহিত করেন। মামলাটা ছিল এই যে, প্রমানন্দ শর্মা ব্লকস্তরে পঞ্চায়েত সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২৫টির মধ্যে সর্বাধিক ১৩টি ভোট পান। ২৭ জুলাই তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করে সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়। কিন্তু জেলার কালেক্টর সঞ্জয় কুমার মিশ্র তাঁর নির্বাচনকে খারিজ করে লটারির মাধ্যমে শাসক দলের প্রার্থী রাম শিরোমনিকে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করেন। বিচারপতি তাঁর নির্দেশিকায় বলেন, জেলা কালেক্টর “শাসক দলের রাজনৈতিক এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন”। এরপর বিচারপতি নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্দেশ পাঠান — সঞ্জয় কুমার মিশ্রকে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কাজে যেন যুক্ত করা না হয়। এই ‘রাজনৈতিক এজেন্টরা’ আজ প্রতিটি সংস্থায়, প্রশাসননিক ও সাংবিধানিক সমস্ত প্রতিষ্ঠানেই ঢুকে আছে। সর্বোচ্চ আদালতই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন! সংবিধান বিশেষজ্ঞ অনুজ ভুওয়ানিয়া যখন “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংখ্যাগুরুবাদী শাসনের কাছে সুপ্রিমকোর্টের পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ”এর অভিমত পোষণ করেন, তখন তাকে একটুও অতিরঞ্জিত বলে মনে হয় না।

- জয়দীপ মিত্র

খণ্ড-29
সংখ্যা-36