সুপ্রীম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কিসাণ কাউল ও এমএম সুন্দ্রেশের ডিভিশন বেঞ্চ কোনো এক বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে গত ১১ জুলাই বলেন, তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে দিয়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে হাজতে বন্দী করে রাখা বন্ধ করা হোক। এই ধরণের গ্রেপ্তারি বস্তুত ঔপনিবেশিক মানসিক গড়ন ও পুলিশী রাষ্ট্র চলনকেই প্রতিফলিত করে। এই অনভিপ্রেত অতিসক্রিয়তা থামাতে প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়নের পদক্ষেপ করা হোক। তাছাড়া আগাম জামিন বা হেফাজতে থাকা অবস্থায় জামিন পাওয়া যাতে সহজ হয়, নতুন আইনে সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
বিচারপতি দুজন আরও বলেন, দেশের কারাগারগুলো বিচারাধীন বন্দীদের ভিড়ে গাদাগাদি হয়ে থাকছে। সমীক্ষা-পরিসংখ্যান বলছে, বন্দীদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি বিচারাধীন বন্দী। এদের অধিকাংশই কোনও মারাত্মক অপরাধী নন, দোষী সাব্যস্ত হলে বড়জোর পাঁচ-সাত বছর বা তার কম সাজা হলেও হতে পারে। এদের জেলবন্দী করে রাখার কোনও দরকার নেই, জামিনে রেখে বিচার চালানো যেতে পারে। এরা সব কেবল হতদরিদ্র নয়, অশিক্ষার শিকার, এদের মধ্যে মহিলা বন্দী রয়েছেন বেশ বড় সংখ্যায়। এরা হয়ত নানা কারণে নানা অপরাধ করে থাকবেন, কিন্তু এরা দেশের পক্ষে আদৌ বিপজ্জনক নন, এদের এভাবে বন্দী করে রাখা ঔপনিবেশিক আমলে ভারত শাসনের জুলুমকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। তাই এইসমস্ত বিচারাধীন বন্দীদের কারাগারের বাইরে জীবন কাটাতে দেওয়া হোক, সেই মতো আইন প্রণয়ন করা হোক।