আরওয়াইএ’র পূর্ব বর্ধমান জেলা দ্বিতীয় সম্মেলন
East Burdwan District

পূর্ব বর্ধমান জেলার বিপ্লবী যুব অ্যাসোসিয়েশন (আরওয়াইএ) দ্বিতীয় জেলা সম্মেলন সফল হল ২১ আগস্ট। কালনা থানার লড়াকু শহীদ আব্দুল হালিম এবং জগন্নাথ বিশ্বাস ও সমস্ত শহীদ বিপ্লবী কমিউনিস্টদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং কক্ষে বাবুনী মজুমদার ও মেঘনা মজুমদারের গণসঙ্গীতের পর সম্মলনের মূল অধিবেশন শুরু হয়। প্রেসিডিয়ামে ছিলেন হোসেন আহম্মদ, প্রদ্যুৎ ঘোষ ও নাসরিন খাতুন এবং স্টীয়ারিং কমিটিতে চাঁদু দে ও দিলোয়ার হোসেন। রাজ্য পর্যবেক্ষক ছিলেন সৈকত ভট্টাচার্য। মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন রণজয় সেনগুপ্ত, সজল কুমার দে, কার্তিক পাল, সলিল দত্ত, রফিকুল ইসলাম, সজল পাল, আনসারুল আমান মন্ডল (বাবু), এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনে আরওয়াইএ’র প্রতিনিধি ছিলেন ৭০ জন। খসড়া প্রতিবেদন পাঠ করেন বিদায়ী সম্পাদক সমির বসাক। প্রতিবেদনের উপর বক্তব্য রাখেন ১০ জন প্রতিনিধি এবং নাসরিন বক্তব্যের মধ্যে বলেন যে সরকারি স্কুলগুলো এক ধরনের বন্ধের মুখে অথবা বেসরকারিকরণের হাতে চলে যাচ্ছে। সরকারি স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকা একদম কম তার ফলে এমন অবস্থা। পূর্ব বর্ধমান জেলার সংগঠনের মধ্যে মহিলা কর্মী ও সদস্য সংখ্যা কম। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা। আগামীদিনে জেলা কমিটিকে এই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হোসেন। ভিন রাজ্যে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের এই রাজ্যে কাজের ব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। তাদের কাজের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দাবি তুলতে হবে। কার্তিক পাল, সলিল দত্ত ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ পার্টি ও গণনেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সরকারি নিয়োগে ও সরকারি প্রকল্পে লাগামছাড়া দুর্নীতি চলছে এই রাজ্যের মাটিতে। একশো দিনের কাজে চলছে দুর্নীতি, কাজ করে মিলছে না মজুরি। আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার যেভাবে সাধারণ সংখ্যালঘু মানুষের উপর ফ্যাসিষ্ট আক্রমণ নামিয়ে আনছে, কখনও ধর্মের নামে উস্কানি দিচ্ছে আবার কখনও বুলডোজার রাজ কায়েম করতে চাইছে। মোদী সরকার দু’কোটি বেকার যুবকদের কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল, তার কিছুই হয়নি, উপরন্তু বহু মানুষের চাকরি গেছে, কাজ গেছে। ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্প একটি অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক চাকরির বিষয় মাত্র।

এই অবস্থায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবিতে আগামীদিনে যুব আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হতে হবে।

  • ১) বঞ্চিত শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মপ্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগ করতে হবে।
  • ২) রাজ্য ও কেন্দ্রের সমস্ত শূণ্যপদে স্থায়ী এবং স্বচ্ছভাবে নিয়োগ করতে হবে।
  • ৩) সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদের শাস্তি দিতে হবে।
  • ৪) অগ্নিপথ প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
  • ৫) ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি দিতে হবে, রাজ্য সরকারের নির্ধারিত ন্যুনতম মজুরি চালু করতে হবে, কাজ করতে ইচ্ছুক প্রত্যেককে জবকার্ড দিতে হবে।
  • ৬) ঋণগ্রস্ত মহিলাদের উপর মাইক্রোফিনান্স এজেন্টদের জুলুমবাজি বন্ধ করতে হবে।

প্রতি ব্লকে যতটা সম্ভব ছোট-বড়ো আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ১৬ জনকে নিয়ে নতুন জেলা কমিটি নির্বাচিত হয়। আগামীদিনে পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিপ্লবী যুব অ্যাসোসিয়েশনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা নিয়ে সম্মেলনের পরিসমাপ্তি হয়। জেলা সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে সমীর বসাক ও আব্দুল হাকিম মল্লিক (সুবীর)।

খণ্ড-29
সংখ্যা-33