অবিলম্বে ‘একশো দিনের কাজ’ চালু করা সহ পাঁচদফা দাবিতে পান্ডুয়ায় বিডিও গণডেপুটেশন দেওয়া হয় গত ১৮ আগস্ট সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের পান্ডুয়া ব্লক কমিটির উদ্যোগে। ডেপুটেশনে ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বেশকিছু সংগ্রামী নারী-পুরুষ অংশ নেন। পাঁচজনের এক প্রতিনিধিদল বিডিওর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়।
১) বন্ধ হয়ে থাকা এনআরইজিএ’র কাজ পুনরায় চালু করতে হবে এবং কোন অজুহাতেই ঘোষিত মজুরির চেয়ে কম মজুরি দেওয়া চলবেনা। পরিবারভিত্তিক নয়, ব্যক্তিভিত্তিক জবকার্ড দিতে হবে।
২) সরকারি আবাসন প্রকল্পে ঘরের জন্য যাদের নাম অনুমোদিত হয়েছে তাদের নামের তালিকা জনসমক্ষে, খোলা জায়গায় প্রকাশ করতে হবে। জীর্ন হয়ে পড়া ঘর ইটের হলেও (তা সে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি বা কোনও এক সময়ে সরকারি অর্থে নির্মিত — যাই হোক না কেন) উপযুক্ত তদন্ত সাপেক্ষে, আবেদনকারীকে প্রকল্পের সুযোগ দিতে হবে।
৩) ‘খাদ্য সুরক্ষা’র প্রশ্নে, দাবি করা হয়, পরিবার পিছু বিনামূল্যে মাসিক ৩৫ কিলো খাদ্যশস্য সহ সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। আধার সংযুক্তি না হওয়ার কারণে কোনও ব্যক্তিকে রেশন থেকে বঞ্চিত করা চলবে না।
৪) সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে ‘বিধবা ভাতা’ পাওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান বিধিতে ৪০ বছরের কম বয়সী কোনও বিধবা এই ভাতা পান না। এই বিধির বিরোধিতা করে দাবি জানানো হয়, একজন বিধবা যে বয়সেরই হ’ন না কেন, আবেদন জানালে, তাঁকে ভাতা দিতেই হবে।
৫) ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি যখন চলেনা তখনও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলি (বিভিন্ন ভাতা থেকে এসসি/এসটি কার্ডদেওয়া পর্যন্ত) সাধারণ প্রশাসনিক দপ্তর মারফত সচল রাখতে হবে।
সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দাবির (‘একশো দিনের কাজ’ ফের চালু করা) প্রশ্নেই বিডিও তাঁর সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেন এবং বলেন, “এটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প। কেন্দ্র শ্রম বাজেটে যতদিন অর্থ বরাদ্দ না করছে ততদিন এই কাজ পুনরায় চালু করা সম্ভব নয়।” তিনি জানান, এই কারণেই নতুন জবকার্ড দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ‘আবাসনের’ ক্ষেত্রে আমাদের দাবিকে নীতিগতভাবে সমর্থন জানিয়েও তিনি বলেন, “নতুন প্রকল্পে (‘আবাস প্লাস প্রকল্প’) কারা ঘর পেতে পারেন তা নিয়ে সমীক্ষা চলছে। এই সমীক্ষায় উপভোক্তাদের তালিকা প্রস্তুত করা সময় সাপেক্ষ।” তিনি আশ্বাস দেন, আধার সংযুক্তির সমস্যা হলেও কোন মানুষ রেশন থেকে বঞ্চিত হবেন না। ‘বিধবা ভাতা’ প্রসঙ্গে স্মারকলিপিতে তুলে ধরা দাবিকে তিনি পূর্ণ সমর্থন জানান এবং বলেন, বিষয়টির প্রতি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। তিনি নিশ্চিত করেন, “বিভিন্ন প্রয়োজনে, বিডিও অফিসে এলে মানুষ নিয়মিত পরিষেবা পাবে”।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন শিপ্রা চ্যাটার্জি, দিবস মালিক, বিনয় দাস, মহম্মদ ইউসুফ মন্ডল ও মুকুল কুমার।