শাহীনবাগের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এনআরসি বিরোধী অবস্থান, ১৯ দিন ধরে ধর্ণা চলছে নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ ব্লকের ঐতিহাসিক পলাশীর প্রান্তরের ফুলবাগান মোড়ে। বিরাট মঞ্চ, সামনে বসার জায়গা, মঞ্চে লাগানো আছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র ধরর্ণা মঞ্চের ব্যানার, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিল করার দাবিতে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ও ছবি লাগানো হয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয় বিহীন বক্তব্য, সঙ্গীত, আবৃতি চলছে লাগাতার। নদীয়া, মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষক, ক্ষেতমজুর, বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলিম সকলেই প্রতিদিন শামিল হচ্ছেন। প্রত্যেকে সামর্থ্য অনুযায়ী সঙ্গে করে নিয়ে আসছেন চাল, ডাল, তরকারি। রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে অবস্থানে অংশগ্রহণকারীদের। এই উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা মুসলিম সমাজের মানুষদের পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও ক্রমাগত হিন্দু সমাজের মানুষরা শামিল হচ্ছেন, ভূমিকা নিচ্ছেন।
৯ ফেব্রুয়ারি সারা ভারত কিষান সভা ও এআইসিসিটিইউ সংগঠনের কমরেড জয়তু দেশমুখ, কৃষ্ণপদ প্রামানিক ও বিজয় সাহা বক্তব্য রাখেন। বিজেপির তৈরি করা নাগরিকত্ব আইনে গ্রামীণ গরিবদের বে-নাগরিক করে দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ধরা হয়। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিক আইন তৈরি করার জন্য বিজেপি আরএসএস-এর ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করা হয়। কিভাবে তারা অল্প কিছু মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেবার টোপ দিয়ে কোটি কোটি ভারতীয় নাগরিককে নাগরিকত্ব ছাড়া করছে, দিল্লির ভোটে বিজেপির পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনা তীব্র একথা বলার সাথে সাথে করতালি দিয়ে বক্তাকে অভিনন্দন জানান শ্রোতারা। এমনিতে কোন কাগজপত্র গরিব মানুষের নেই তারপরে যা কিছু ছিল সবই ২০০০ সালের বন্যায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ‘‘কোনো কাগজ দেখাবো না” এই দাবিকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক পলাশীতে অস্তমিত স্বাধীনতার সূর্য আবার নতুন করে উদয় হবে, সেই আজাদির লড়াই শুরু হয়েছে, ফ্যাসিবাদী শক্তি বিজেপির বিরুদ্ধে সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বক্তব্য শেষ করেন।