১০ ফেব্রুয়ারি মালদা জেলার কালিয়াচক নজরুল মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ সংগ্রামী বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের ১ম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এই তিনটি জেলায় কাজের ভরকেন্দ্র করে পূর্ব বর্ধমান, উত্তর দিনাজপুর, উত্তর ২৪ পরগণা, বাঁকুড়া—যোগাযোগ, বৈঠক ও সদস্য করার মধ্য দিয়ে কিছুটা কাজের বিস্তার ঘটিয়ে সম্মেলন হল।
সম্মেলন কক্ষের নাম দেওয়া হয় কমরেড ধীরেনন্দ্রনাথ সরকার সভাগৃহ। পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এআইসিসিটিইউ-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব বোস। শুরুতে শহীদ বেদিতে পতাকা উত্তলনের মধ্য দিয়ে। পতাকা উত্তোলন করেন বিদায়ী রাজ্য কমিটির সভাপতি অমল তরফদার। মাল্যদান করেন জেলাগুলি থেকে আগত বিড়ি শ্রমিক কৃষক সমতি, যুব এ্যাসোসিয়েশন, পশ্চিমবঙ্গ গণ সংস্কৃতি পরিষদের নেতৃত্ব। শহীদদের উদ্দেশ্যে নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের কাজ শুরু হয়। পাঁচ জনকে নিয়ে সভাপতিমন্ডলী গঠিত হয়। অমল তরফদার, আবুল কাসেম, বেলা নন্দি, কয়েশ আলি ও সায়রাবানু। বাবুনী মজুমদারের গণসংগীত পরিবেশনের। পর্যবেক্ষক উদ্বোধনী ভাষণ রাখেন। বিদায়ী রাজ্য সম্পাদিকা প্রতিবেদন পাঠ করেন। ৯ জনের মত প্রতিনিধি প্রতিবেদনের উপরে বক্তব্য রাখেন।
এই সম্মেলন বিড়ি শ্রমিকদের কাছে আহ্বান রাখে—ধর্ম নিরপেক্ষ রাস্ট্রীয় ব্যবস্থা, সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করার, নিজেদের দাবিগুলি আদায়ের লক্ষ্যে এক বৃহত্তর শ্রমিক ঐক্য গড়ে তোলার। এই সম্মেলন থেকে যে কর্মসূচী নেওয়া হয় নতুন রাজ্য কমিটিকে আগামী ৩ বছরে বর্তমান কাজের ভরকেন্দ্র জেলাগুলিতে গুরুত্বের সাথে সংগঠন ও কাজের বিস্তার ঘটাতে হবে। পাশাপাশি বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত জেলাগুলিতে সাংগঠনিক বিস্তার ঘটানো এবং ন্যূনতম ৬ হাজার সদস্য সংগ্রহ করা। এআইসিসিটিইউ-র সর্বভারতীয় সম্মেলন হতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগণা নৈহাটিতে ২-৪ মার্চ এই সম্মেলনকে সফল করতে সংগঠনের তরফে সর্বাত্বক উদ্যোগ নিয়ে প্রচার ও আর্থিক সহযোগিতা করা। বিড়ি একটি কুটির শিল্প যার উপর জিএসটি বসানো যায় না। মোিদ সরকার অন্যায় ও বেআইনিভাবে জিএসটি বসিয়ে এবং বাড়িয়ে বিড়ি শ্রমিকদের সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলা। বিড়ি শ্রমিকদের জ্বলন্ত দাবিগুলো নিয়ে জেলা ও রাজ্যভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা ও মার্চের পর শ্রমদপ্তরে ডেপুটেশন দেওয়া, তার আগে জেলা স্তরে ডিএম-এর কাছে ডেপুটেশন দেওয়া। জেলা ও ব্লকস্তরে সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলা এবং সম্মেলন করা। নিয়মিত বৈঠক ও সংগঠন পরিচালনার ব্যবস্থা করা। এনআরসি, এনপিআর, সিএএ বাতিলের দাবিতে এবং ধর্মীয় বিভাজন ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা। সর্বসম্মতিতে প্রতিবেদন গৃহীত হয়। এরপর ১২৫ জনের কাউন্সিল এবং ১১ জনের কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়। সভাপতি নির্বাচিত হন অমল তরফদার সহ সভাপতি আবুল কাশেম এবং কয়েশ আলি, সাধারণ সম্পাদিকা নির্বাচিত হন মীনা পাল, সম্পাদকমন্ডলী ইব্রাহিম সেখ ও বেলা নন্দী, কোষাধ্যক্ষ দেবব্রত বিশ্বাস। আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষিত হয়।