পার্শ্বশিক্ষকদের দাবিদাওয়াকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র বের করার আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সিপিআই(এমএল) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে সম্পাদক পার্থ ঘোষ এক চিঠি লেখেন।
মাননীয়া,
সমগ্র শিক্ষা মিশনের (পূর্বতন সর্বশিক্ষা মিশন) অধীনে রাজ্যের সরকারী সাহায্য প্রাপ্ত প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকস্তরে বিদ্যালয়ে প্রায় ৪৮ হাজার পার্শ্বশিক্ষক পঠন-পাঠনের কাজে যুক্ত আছেন। প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে নিযুক্ত থাকার পরেও এবং এনসিটিইউ রুল অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন (ডিএলএড) করলেও পূর্ণশিক্ষকের মর্যাদা তাদের দেওয়া হয়নি। প্রজেক্ট এ্যাপ্রুভাল বোর্ডে (প্যাব) বেতন কাঠামোর উল্লেখ থাকলেও তা প্রদান করা হয় না। নিছক পারিশ্রমিক বা ভাতা প্রদান করা হয়।
গত তিন-চার বছরে শতাধিক পার্শ্বশিক্ষক দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গিয়ে হয় আত্মহত্যা করেছেন বা বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। গত নভেম্বর ১৪ (২০১৯) তারিখ থেকে পঞ্চাশ জনেরও বেশি পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে আমরণ অনশনে রয়েছেন এবং প্রায় ২৫০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা অবস্থান আন্দোলন করছেন। সুপ্রীম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে সমকাজে সমবেতন দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও পার্শ্বশিক্ষকরা একই কাজ করেও পূর্ণশিক্ষকের মর্যাদা পান না। তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো বেতন কাঠামোও নেই। বিভিন্ন মহল থেকে একথাও শোনা যাচ্ছে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের সমগ্র শিক্ষা মিশনের জন্য পাঠানো টাকা অন্য খাতে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে, অথচ পার্শ্বশিক্ষকদের কাছে তা পৌঁছয় না।
যাঁরা জাতির মেরুদন্ড নির্মানে নিযুক্ত তাঁরা এখন শীতের রাতে প্রায় খোলা আকাশের নীচে অনশন অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আপনার সংবেদনশীল হস্তক্ষেপ দাবি করছি। অত্যন্ত দ্রুততায় আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বসে একটা সমাধান সূত্র বের করা হোক এবং ন্যায় সঙ্গত দাবিগুলির সুষ্ঠ মীমাংসা হোক। আপনার প্রত্যুত্তরের অপেক্ষায়।
চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রীকেও।