সিপিআই(এমএল) ২০১৯-এর ২১ নভেম্বর রাঁচিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পার্টি ইস্তাহার এবং প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। সাংবাদিক সম্মেলনে পার্টি সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য্য বলেন—বিজেপি যখন বিরোধী পক্ষে ছিল তখন সে বারবারই “ভয়, ক্ষুধা ও দুর্নীতির” উল্লেখ করত এবং নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এলে এই তিনটিকেই দূর করার কথা বলত। কিন্তু গত ১৯ বছরে প্রধানত বিজেপিই ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতায় থেকেছে, আর গত ছ-বছরে রঘুবর দাসের শাসনে ২৫টা গণ প্রহারের ঘটনা ঘটেছে আর নিয়মিত ঘটেছে হত্যার ঘটনা যা সংখ্যালঘু এবং দলিত ও আদিবাসীদের ভয় ও সন্ত্রাসে জর্জরিত করেছে। গ্ৰামীণ দরিদ্রদের মধ্যে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনাও বেড়ে চলেছে এবং এই ধরনের ঘটনা ৩০টি ছাড়িয়ে গেছে। সরকারি প্রকল্পগুলিতে এবং রেশন বণ্টনে দুর্নীতি ও লুট অবাধে চলছে যার ফলে গ্ৰামীণ দরিদ্রদের মধ্যে ভয়াবহ অনাহার ও বেকারি ঘটছে। এইভাবে ভয়, ক্ষুধা ও দুর্নীতি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে এবং এর বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ নিয়ে নির্ধারক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবে সিপিআই(এমএল)। মোদী-শাহ জুটি এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মতো ধোঁকা দেওয়ার কৌশলকে কাজে লাগিয়ে জনগণের মধ্যে আতঙ্কের সঞ্চার করতে এবং ভয়, ক্ষুধা ও দুর্নীতির মতো ইস্যু থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের জনগণ এই জনবিরোধী বিজেপি সরকারকে অবশ্যই পরাজিত করবেন। সিপিআই(এমএল) মহেন্দ্র সিং-এর মতো জনগণের প্রিয় নেতার উত্তরাধিকার অর্জন করেছে এবং সবসময়ই বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে জনগণের ইস্যুগুলোকে তুলে ধরেছে। এই দিক থেকে সিপিআই(এমএল) অন্য যে কোনো রাজনৈতিক দলের থেকে আলাদা। আর তাই বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সিপিআই(এমএল) ও অন্যান্য বাম দলগুলো সামনের সারিতে রয়েছে।
সিপিআই(এমএল) ১৬টা বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে। যে সমস্ত কেন্দ্রে অন্যান্য বাম দলগুলো বিজেপির বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে সেই সমস্ত কেন্দ্রে আমরা বাম দলগুলোর প্রার্থীদের সমর্থন করব, আর বাকি কেন্দ্রগুলোতে সেই সমস্ত দলের প্রার্থীদের সমর্থন করব যাদের বিজেপিকে পরাজিত করার সম্ভাবনা রয়েছে। দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, এবার বাম দলগুলো আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব করবে। আর এই অঙ্গীকার নিয়েই আমরা ইস্তাহার প্রকাশ করছি।