অযোধ্যার বিতর্কিত ভূখণ্ড যেখানে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল সেই সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় বেরিয়েছে। শীর্ষ আদালত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিনিধি মামলাকারীদের পক্ষে ঐ জমির স্বত্বাধিকার দিয়েছে।
এই রায়ের প্রকৃত অর্থ দাঁড়াচ্ছে যে, ঐ বিতর্কিত জমিতে একটি রামমন্দির তৈরি হবে এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যার অন্যত্র পৃথক ৫ একর জমি দেওয়া হবে। এই বিচার প্রক্রিয়া তার পূর্ববর্তী ও চূড়ান্ত রায়ের মধ্যে দ্বন্দ্বকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। প্রথমত, বিচার প্রক্রিয়া যখন এই বক্তব্যকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যে, বাবরি মসজিদ ধ্বংস একটি আইন-বিরুদ্ধ কাজ ছিল তখনই মসজিদ ধ্বংসকারীদের পক্ষে ঐ জমির অধিকারের রায় বেরোচ্ছে। দ্বিতীয়ত, যখন বিচারকাজ বিশ্বাসের ভিত্তিতে নয়, ঘটনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলছে তখনই ঘটনার উপর ভিত্তি করে ন্যায়বিচারের নীতিকে পরাজিত করে সংখ্যাগুরুবাদী বিশ্বাসের জয়জয়কার হিসাবে এই রায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে চিহ্নিত হচ্ছে। কিন্তু এটাও জোর দিয়ে বলা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই রায় সুনিশ্চিতভাবেই ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর, সংঘ ব্রিগেডের দ্বারা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অপরাধকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এই রায়ের পরবর্তীতে যাতে ৯০ দশকে গেরুয়া ব্রিগেডের নামিয়ে আনা সাম্প্রদায়িক রক্তস্নানের মতো ঘটনা দেশকে আর দেখতে না হয় – এটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর সংঘ পরিবারের আক্রমণের প্রতিটি চেষ্টার বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে। বিজেপির অতি পরিচিত নেতৃত্ব সহ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সকল চক্রীদের শাস্তির দাবিতে লড়াইকে আমাদের আরো জোরদার করা উচিত। আসুন, আমরা আগামী ৬ ডিসেম্বর দিনটিকে সংঘ পরিবারের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে থাকা ভারতীয়দের অভূতপূর্ব ঐক্যের দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকাকে নিশ্চিত করি।