খবরা-খবর
বালীতে আইসার সভায় বিজেপি-আর এস এস গুন্ডাদের হামলা, পাল্টা প্রতিরোধ

জেএনইউ-র ছাত্রদের সমর্থনে প্রচারসভা করতে গিয়ে বালীতে বিজেপি-আরএসএস গুন্ডাদের আক্রমণে আক্রান্ত হল আইসা কর্মীরা। তবে বিনা প্রতিবাদে চুপচাপ এই আক্রমণ মেনে নেয়নি, সাধ্যমতো রুখে দাঁড়িয়েছে। তা দেখে গেরুয়া গুন্ডারা আরও হিংস্র হয়ে ওঠে, এলোপাথারি মারতে থাকে। ছাত্রী কর্মীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য গালিগালাজ করতে থাকে। এতে আহত হন আইসার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক স্বর্ণেন্দু মিত্র, রাজ্য সভাপতি নিলাশীষ বসু সহ সৌরভ, অঙ্কিতা, শুভদীপ আহত হন। শুভদীপের আঘাত গুরুতর, তার চোখের ওপর ক্ষত খুব মারাত্মক ফুলে রয়েছে। তাকে উত্তরপাড়া প্যারীমোহন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজনে

injuri

 

হোস্টেল ফী বৃদ্ধির বিরুদ্ধে জেএনইউ-র আন্দোলনরত, পুলিশী আক্রমণে রক্তাক্ত ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সমর্থনে ১৯ নভেম্বর দেশজুড়ে সংহতি কর্মসূচী নেয় আইসা। তারই অঙ্গ ছিল বালীতে প্রচারসভা। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সম্মেলন থেকে ফিরে এদিনই আইসার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির বৈঠকে বসেছিল বালীতে। বৈঠক শেষ হওয়ার পর পথসভা শুরু হয় এবং সেখানে সংগঠনের রাজ্য নেতৃবৃন্দও ছিলেন। তাদের ওপর এই ঘৃণ্য আক্রমণের জবাব দিতে ২০ নভেম্বর আইসা রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ দিবস সংগঠিত করার কর্মসূচী নেয়। সংবাদ মাধ্যমে এখবর প্রকাশিত হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বিজেপির রাজ্যস্তরের এক ‘কসাই’ সম্পাদক ‘খোঁজ নিয়ে দেখছি দেখব’ বলে এড়ানোর চেষ্টা করেছেন মাত্র। ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী বালী থানায় এফআইআর করা হয়েছে ১২ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কিন্তু এই পত্রিকা প্রেসে যাওয়ার আগে পর্যন্ত দোষীদের গ্রেপ্তারের কোন খবর নেই। দেখা যাক মমতা সরকারের পুলিশ কি ব্যবস্থা নেয়। মুখ্যমন্ত্রী কাগজে বিবৃতি দিচ্ছেন ‘পুলিশ কি ভয় পাচ্ছে!’ কিন্তু ওসব ছেঁদো কথায় ভালোমানুষী দেখানোয় প্রতিবাদী কণ্ঠকে চুপ করানো যাবে না। বালী এলাকায় এর আগেও আইসা বা সিপিআই(এমএল) কর্মীদের বিজেপি হামলাবাজদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে কয়েকবার। প্রত্যেকবারই পাল্টা প্রতিরোধের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেওয়া হয়। এবারে ওরা সরাসরি সভায় আক্রমণ করল। আইসাও প্রত্যুত্তর দিতে প্রস্তুত গণতান্ত্রিক প্রতিরোধের পথে। আর প্রতিবাদী বাম গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর সমর্থনকে পাথেয় করে নিয়ে চলবে। ২০ নভেম্বর বালী বাজার এলাকার হরিসভা থেকে কলকাতার কলেজ স্ট্রীট, রাজ্যের যেখানেই সম্ভব আইসা কর্মসূচী নিয়েছে বিজেপি হামলাকারীদের রুখে দাও।

bally

 

বালীতে ছাত্রদের ওপর গেরুয়া গুন্ডাদের হামলার খবর শুনে সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতা কর্মীরা ছুটে যান। হাওড়া জেলার সিপিআই(এমএল) সদস্যরা, হুগলীতে বৈঠকে থাকা এআইসিসিটিইউ সংগঠকরা, উত্তর ২৪ পরগণার শ্রমিক সংগঠকরা এবং আরও অনেকেই বালীতে পৌঁছে যান। এইভাবে নাছোড় প্রতিরোধের মেজাজ সংগঠিত হয়ে যায়। আজকের দিনে এটাই সবচেয়ে বেশি করে দরকার। যেখানেই আক্রমণ সেখানেই চাই প্রতিরোধ।

 

১৯ নভেম্বর সিপিআই(এমএল)-এর রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, হাওড়া বালি জোড়া অশ্বত্থতলায় আইসা-র রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষে জেএনইউ-তে আন্দোলনরত ছাত্রদের সমর্থনে এক সংহতি সভা চলাকালীন বিজেপি-আরএসএস-র গুণ্ডাবাহিনী হামলা চালায়। কয়েকজন ছাত্রী সহ আইসার রাজ্য সম্পাদক স্বর্ণেন্দু মিত্র সহ বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। বালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং ১২ ঘন্টার মধ্যে বিজেপির গুণ্ডাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।

siliguri

 

খণ্ড-26
সংখ্যা-37