খরচের বকেয়া টাকা মিলছেনা। ফলে, তালিকা মিলিয়ে ডিম, আনাজ কিনতে পারছে না রাজ্যের বেশ কিছু জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি। জ্বালানি কিনতেও খুবই সমস্যা হচ্ছে। অগত্যা অনেক কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে, পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতিরা।
করোনাকালে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি। চাল-ডাল দেওয়া হলেও কোপ পড়ছিল রান্না করা খাবারে পুষ্টিতে। এবারও সেই পুষ্টিই বাদ পড়ছে বহু জেলার অঙ্গনওয়াড়িতে। জলপাইগুড়ির ৩,৯৩৬টি অঙ্গনওয়াড়ির মধ্যে গতমাসের খাবারের খরচের বিল না মেলায় বন্ধ বা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে অন্তত ৭০টি কেন্দ্র। উত্তর দিনাজপুরের ৩,৭৮৭টি অঙ্গনওয়াড়ির মধ্যে প্রায় ৯০টি গত শনিবার থেকে বন্ধ। গত দু’মাসের বরাদ্দ পাননি পূর্ব বর্ধমানের অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীরাও। জামালপুর ব্লকের ৫৩৪টি অঙ্গনওয়াড়ি তাই শনিবার খাবার দেওয়া বন্ধ রাখে। কেন্দ্রগুলির দরজায় কাগজে সাঁটানো ছিল — “গত দু’মাস ধরে নিজেদের পয়সায় সেন্টার চালানোর পরেও আনাজ, জ্বালানি ও ডিমের টাকা না পাওয়ায় বিডিও, সিডিপিও’কে জানিয়ে সারা জামালপুর ব্লকে রান্না বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল”। দফতর সূত্রে খবর, শুধু জামালপুর ব্লকেই গত দু’মাসে ৪২ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে।
মুর্শিদাবাদেও এক একটি অঙ্গনওয়াড়ির ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বকেয়া। ধার করে বা নিজেদের টাকায় আনাজ, ডিম ও জ্বালানি কেনা আর সম্ভব হচ্ছে না। কর্মীরা জানাচ্ছেন, শিশুদের ডিম ও আনাজের জন্য মাথাপিছু দিনে তাঁরা হাতে পান ৫.৩৬ টাকা। গর্ভবতী ও প্রসূতিদের জন্য মেলে ৬.৩৫ টাকা। খিচুড়ির দিন শিশুদের জন্যে ৬.২০ টাকা আর মায়েদের জন্য ৭.৪১ টাকা পাওয়া যায়। এর বাইরে, জ্বালানি ও মশলা কেনার জন্য গড়ে ২১ টাকা পাওয়া যায়। নির্দেশ মতো সোম, বুধ ও শুক্রবার ভাত, আলু-ডিমের ঝোল, মঙ্গল-বৃহস্পতি, শনিবার দেওয়া হয় ডিমসেদ্ধ, খিচুড়ি, সয়াবিন ও আনাজ। ডিম, আনাজ, সয়াবিন বাজার থেকে কিনতে হয়। তার উপর বকেয়া টাকা মিলছে না। তাতেই সঙ্কট বেড়েছে।
- আনন্দবাজার পত্রিকা, ৯ মে ২০২২